আসল প্রশাসক কেমন হয় বা কেমন হওয়া উচিৎ এই বিষয়টি এদিন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেয়াত করলেন না মন্ত্রী থেকে বিধায়ক কাউকেই। কাঠগড়ায় তুললেন বিধাননগর ও হাওড়া পুরসভাকে। মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন মন্ত্রী সুজিত বসু, বিধান নগর পুরসভার মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী। নবান্নের সভাঘর থেকে পুরসভাগুলির সঙ্গে বৈঠকে কার্যত রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সরাসরি সুজিত বসুর নাম নিয়ে উস্মা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সল্টলেকে সুজিত বোস তো কম্পিটিশন করে লোক বসাচ্ছে। কেন সল্টলেকের কাউন্সিলররা কাজ করেন না। কেন ? বিধাননগর পুরসভা এলাকায় জঞ্জাল ও আবর্জনা পড়ে থাকার ব্যাপারেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। অগ্নিশর্মা হয়ে তিনি বলেন, কেন সল্টলেক পুরসভার কাউন্সিলররা কাজ করে না? কেন রাস্তা ঝাঁট দেয় না? এবার কি আমি ঝাঁট দেব? রাস্তা দেখে না, জল দেখে না।

এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি বলেন, আমার কথাটা কিছুটা তিক্ত হলেও মনে রাখবেন পুরসভাগুলিই মানুষকে সেবাটা দেয়। যখন জবরদখল হচ্ছে, তখন কেন সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন হচ্ছে না। কেউ টাকা খেয়ে, কেউ টাকা নিয়ে এটা করছে। মানুষ যদি উন্নয়নের সুফল না পায়, তাহলে সেই পুরসভা পঞ্চায়েত রেখে লাভ কী।

এদিন ‘এনকোচমেন্ট’ বা জবরদখল নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, রাস্তা এনকোচমেন্ট হলে কেন পদক্ষেপ করছি না? ‘মাল্টিপল ইন্টারেস্টেড গ্রুপ’ এটা করছে।

এদিন হাওড়া পুরসভাকে কড়া ভর্ৎসনা করেন। তিনি বলেন, হাওড়ায় ভ্যাট পরিষ্কার হয় না। রাস্তায় ময়লা আসছে। বালি পুরসভার এসডিও অমৃতা রায় বর্মন কী করছেন? হাওড়াতে কনজারভেন্সির এখনও পর্যন্ত কোনও সিস্টেম নেই। কিন্তু, আমরা টাকা দিয়েছি। এই ধরনের ঘটনায় রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

হাওড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, রথিন চক্রবর্তী চেয়ারম্যান থাকাকালীন পুরসভার ১২টা বাজিয়ে গিয়েছে। কোথাও জবরদখল হলে কেন সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না? খালি জায়গা দেখলেই লোক বসিয়ে দিচ্ছে। কিছু মানুষের টাকা খাওয়ার জন্য রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ঠ হচ্ছে। পুরসভাগুলির পারফর্ম্যান্স খুব খারাপ।

কাজ না করলে পুরসভাকে ‘পেনাল্টি’র নির্দেশও দিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, আমি কোনও অবহেলা শুনব না। পারফর্ম্যান্স রিভিউ হবে। অনেক ভদ্রতা দেখিয়েছি। ভদ্রতা দেখানো মানে এটা নয় একতরফা গায়ের জোরে জমি দখল হবে। কাজ করবে না। মানুষ উন্নয়ন না পেলে সব পুরসভা, পঞ্চায়েত তুলে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন- টেন্ডার নিয়ে বড় ঘোষণা, দিঘা-সহ ২ উন্নয়ন পর্ষদের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
