সোমেই ভর্তি, রবিবাসরীয় দুপুরে হুগলি থেকে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পাঠানো হল অর্ণবকে

যে চিঠির অজুহাতে ইতিহাসে গবেষণায় সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী নেতা অর্ণব দামের ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত করেছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। সেই চিঠি দেওয়ার আগেই রবিবার অর্ণবের অন্তর্বর্তী প্যারোল মঞ্জুর করেছেন রাজ্যের কারা দফতরের এডিজি। এদিন বেলা ১টা ৪০ মিনিট নাগাদ অর্ণবকে হুগলি সংশোধনাগার থেকে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত সোমবার পিএইচডি-র কাউন্সেলিংয়ের জন্যেই বর্ধমান সংশোধনাগারে নিয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জেল সূত্রে খবর। শনিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্রের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। তারপরেই ভর্তির জটিলতা কাটতে শুরু করেছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের দাবি।

এ দিন দুপুরে প্রিজন ভ্যান থেকে ব্যাগপত্র নিয়ে সংশোধনাগারের সামনে নামেন বন্দি অর্ণব। বর্ধমান সংশোধনাগারে ঢোকার মুখে বলেন, “ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হলেই যা বলার বলব। একটু অপেক্ষা করুন না।” একটি বড় ব্যাগ, ছোট ব্যাগ, বালতি-মগ ভ্যান থেকে নিজেই নামান সব। তাঁর কাছে থাকা আর একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে যাবতীয় পরীক্ষার শংসাপত্র ও নথি ছিল বলে সংশোধনাগার সূত্রে খবর।

অর্ণব বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে গবেষণা করতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন মঞ্জুর করে কারা দফতর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে দেয়। ফল বেরনোর পর দেখা যায়, অর্ণব সফলদের তালিকায় প্রথমে রয়েছে। এরপরেই বিশ্ববিদ্যালয় হুগলি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে অর্ণবের পিএইচডি করার প্রয়োজনীয় অনুমোদন আছে কি না আর নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্ন তুলে চিঠি দিয়েছিল। কারামন্ত্রী অখিল গিরি জানান, সোমবার সকালে সেই চিঠি দেওয়া হবে। কিন্তু তার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় অর্ণবের ভর্তির জটিলতা কাটাতে উদ্যোগ নিয়েছে।

কারা দফতর সূত্রে খবর, শনিবার রাতে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় স্থগিত থাকা ইতিহাসে গবেষণায় কাউন্সেলিং সোমবার বেলা তিনটের সময় হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম হওয়া অর্ণবকে ডাকা হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পরেই কারা দফতর অর্ণবকে বর্ধমানের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। রবিবার সকালে সেই নির্দেশ হুগলি ও বর্ধমান সংশোধনাগারে পৌঁছে যায়। ওই নির্দেশ পাওয়ার পরে হুগলি থেকে ১১টা ৪০ নাগাদ বর্ধমানের উদ্দেশে অর্ণবকে নিয়ে কারারক্ষীরা রওনা হয়েছিলেন। দু’ঘন্টার মধ্যে তাঁরা বর্ধমানে পৌঁছে যান।

ডেপুটি মেয়রের নাম করে তোলা-মারধর! পুলিশের জালে দুষ্কৃতীরা, দোষ করলে শাস্তি: অতীন

শনিবারই কুণালের সঙ্গে উপাচার্যের কথা হয়। সূত্রের দাবি, সেখানে উপাচার্যকে জেল-বিধি জানান কুণাল। একই সঙ্গে কোনও ছাত্র ভর্তির পর যদি ক্লাসে না আসে, তাহলে সেটা ছাত্রের ভুল, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় অকারণে ‘নিজেদের ঘাড়ে’ বিষয়টি কেন রাখছেন- সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন কুণাল। তারপরেই উপাচার্য ইতিহাসে গবেষণায় স্থগিত থাকা কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তুলে নিয়ে সোমবার হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দেন।

এপিডিআরের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শূর বলেন, “ইতিবাচক বিষয়। রাজ্য সরকার ও কারা দফতর প্রথম থেকেই অর্ণবকে উচ্চশিক্ষার জন্য সব রকম সাহায্য করেছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকায় আমাদের কিছু প্রশ্ন রয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে বলব।” উপাচার্য অবশ্য জানিয়েছেন, “যা বলার সোমবার বলব।”


Previous articleহাসপাতালে ঢুকে রোগীকে গুলি! রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
Next article‘এ নদী এমন নদী’, উৎপল সিনহার কলম