১৫০ পেরিয়ে তিলোত্তমার বুকে চিরস্তব্ধ হতে চলেছে ঐতিহ্যের ট্রাম

১৫০ বছর ধরে তিলোত্তমা কলকাতার অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে যাওয়া দূষণবিহীন এক শ্লথ গতির যান! লক্ষ লক্ষ যাত্রীর নস্টালজিয়া সঙ্গী করে এবার শহরের পথে চিরস্তব্ধ হয়ে যাবে ঐতিহ্যের ট্রাম (Tram)! চলতি সপ্তাহেই রাজ্য সরকার হলফনামা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে ট্রাম নিয়ে তাদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে চলেছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে সরকারের ট্রাম-নীতি জানতে চেয়েছিল আদালত। প্রশাসনের শীর্ষস্তরের অনুমোদনক্রমে শহর থেকে ট্রাম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবহণ দফতর লিখিতভাবে তা আদালতকে জানাবে।

প্রশাসনিক সূত্রে বলা হচ্ছে, শতাব্দীপ্রাচীন এই যান বর্তমানে গুরুত্ব হারিয়েছে। ট্রামলাইনের জন্য প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। হচ্ছে তীব্র যানযটও। এই প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে আর আপস নয়। সমস্ত ট্রাম রুট বন্ধ করে দেওয়া হবে। অচল রুটগুলির ট্রামলাইন তুলে ফেলা হবে। তবে সুদীর্ঘ ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য ধর্মতলা থেকে ময়দান পর্যন্ত লুপ লাইনে ট্রামের (Tram) জয় রাইডের ব্যবস্থা থাকবে।

ট্রামের ‘স্বর্ণযুগে’ কলকাতায় বুক ফুলিয়ে চলত ২৭-২৮টি রুট। দেড় দশক আগেও এক ডজন রুটে সচল ছিল ট্রাম। ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর ট্রামের গুরুত্ব আরও কমে যায়। ওই ঘটনার পর রাজ্য সরকার শহরের ব্রিজগুলির স্বাস্থ্যপরীক্ষা শুরু করে। উড়ালপুলগুলির উপরে থাকা সমস্ত ট্রামলাইন তুলে দেওয়ার সুপারিশ করে পূর্তদপ্তর। তারপর ট্রামের চলাচল আরও সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে মাত্র তিনটি রুটে যাত্রীরা ট্রাম পরিষেবা পান। টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট-ধর্মতলা এবং ধর্মতলা-শ্যামবাজার।

নবান্নের সিদ্ধান্তে কলকাতা হাইকোর্টের সিলমোহর পড়লে এই তিন রুট থেকেও ট্রাম বিদায় নেবে। এখন ইলেকট্রিক গাড়ির উপর বাড়তি জোর দিচ্ছে রাজ্য। সেই সূত্রে ই-ভেহিকলে একাধিক ছাড়ের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ট্রাম উঠে গেলে সাধারণ মানুষের বিশেষ অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

আরও পড়ুন: দুটি কক্ষে কয়েক হাজার কেজি সোনা! পুরীর মন্দিরের রত্নভাণ্ডারে আর কী আছে?

 

Previous articleঅনন্ত-রাধিকার বিয়েতে বোমা বিস্ফোরণের হুমকি! অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎপর মুম্বই পুলিশ
Next articleবিধানসভার বাদল অধিবেশনেই ৪ বিধায়কের শপথগ্রহণ চান স্পিকার, আজই রাজভবনকে চিঠি