হলুদ – নীল রঙে প্রাসাদোপম বাড়ি থেকে তাকে রিসর্ট ভাবার ভুল করতে পারেন যে কেউ। বাড়ির প্রবেশপথ থেকে শুরু করে পুরো এলাকা মোড়া সিসি ক্যামেরায়। পাঁচিলে ঘেরা বিশাল জমি। মূলদ্বার থেকে বাড়ির দিকে এগোতে গেলে মার্বেলের ঝাঁ-চকচকে রাস্তা। এটাই সোনারপুরকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত জামালউদ্দিন সর্দারের (Jamaluddin Sardar)বসতবাড়ি! এখানেই শেষ নয়, শখ করে মাসখানেক আগেই কচ্ছপ নিয়ে এসে সুইমিং পুলে ছেড়ে দেন শিকল-কাণ্ডে অভিযুক্ত এই ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, জামালের একটি সাধের ঘোড়া রয়েছে যার ঘোড়া দেখাশোনা করতে মাসে ১০ হাজার টাকা লোক রাখা হয়েছে।

‘পলাতক’ জামালের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীরা একের পর এক অভিযোগ তুলছেন। সালিশি সভার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শিকলে বেঁধে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় মুজিদ খাঁ এবং অরবিন্দ সর্দার নামে দু’জনকে মঙ্গলবার পাকড়াও করেছে পুলিশ। এখনও অধরা জামাল।

শিকল কাণ্ডে বুধবার ধৃতদের বারুইপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সোনারপুরে মহিলাদের বাড়িতে ডেকে নানাভাবে শারীরিক অত্যাচার করতেন অভিযুক্ত। জামালের নির্দেশ না মানলে বাড়ির পুকুরে চুবিয়ে দেওয়া হত বলে অভিযোগ। স্থানীয়রা বলছেন এক সময় মুহুরির কাজ করতেন জামাল। সেই সূত্রেই প্রশাসন থেকে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর ভালই যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। জামাল জমির দালালি থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পরিচালনা করতেন বলে খবর মিলেছে। শিকলকাণ্ড সামনে আসার পরে অনেকেই জামালের ‘অত্যাচারের’ কথা প্রকাশ্যে এনেছেন। রুবিজান বিবি নামে আরও এক গৃহবধূ অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী শাহরুখ শেখকে শিকলের সাহায্যে উল্টো করে ঝুলিয়ে সারারাত মারধর করেছে জামাল সর্দার। তাঁকে বাঁচাতে হাত–পা ধরলেও রেহাই মেলেনি। বিরোধীরা এই ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করলেও এই জামালউদ্দিন সর্দারের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই বলে জানান সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক লাভলি মৈত্র। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত জামালকে গ্রেফতার করা হবে। আইন আইনের পথে চলবে।’ তৃণমূলের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল যে কোথাও কোনও অন্যায় বা দুর্নীতি প্রমাণিত হল দল সেক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি মেনেই চলবে।
