Saturday, August 23, 2025

পালাবদলেই শুরু আওয়ামি মন্ত্রীদের গ্রেফতার, কর্মবিরতিতে বাংলাদেশ পুলিশ

Date:

Share post:

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদল হতেই শুরু বিদায়ী আওয়ামি লীগের উপর প্রশাসনিক কোপ। একদিকে হিংস্র উন্মত্ত জনতার হাতে খুন হচ্ছে আওয়ামি লীগের একের পর এক নেতা। অন্যদিকে দেশ ছাড়ার আগেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার দুই প্রাক্তন মন্ত্রী। তবে শুধু আওয়ামি লীগ নেতা মন্ত্রীরা নয়, চরম নিরাপত্তাহীনতায় বাংলাদেশ পুলিশ। অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিল বাংলাদেশ পুলিশের কর্মচারী সংগঠন।

সোমবারই শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে হামলা চালানো হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বাড়িতে। এরপর দেশ ছাড়ার চেষ্টা করতেই পিটিয়ে খুন করা হয় আওয়ামি লীগ সদস্য সেলিম খান ও তাঁর ছেলে অভিনেতা শান্ত খানকে। মঙ্গলবার আগুন লাগানো হয় প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহিদের বাড়িতে। সাতক্ষীরায় লীগ নেতা সহ তাঁর পরিবারকে পুড়িয়ে মারা হয়। লালমনিরহাটেও একইভাবে রোশের শিকার লীগ সদস্যের পরিবার। তাঁদের পোড়া দেহ উদ্ধার হয় পরে। ফেনি, জামালপুরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় যুবলীগ নেতাদের।

বিভিন্নভাবে পালাতে গিয়ে নৃশংসতার ছবি দেখে অনেকেই বিমান পথে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেন। ঢাকা বিমান বন্দরে দীর্ঘক্ষণ আটক রাখার পরে গ্রেফতার করা হয় হাসিনা সরকারের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী জুনেদ আহমেদ পালককে। একইভাবে বিকালে গ্রেফতার হন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদকেও। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লীগ সম্পাদক তানভির হাসান সৈকত ও আরেক ছাত্র লীগ নেতা রিয়াজ মাহমুদকেও গ্রেফতার করা হয় ঢাকা বিমান বন্দরে।

আওয়ামি লীগের পাশাপাশি ক্ষিপ্ত জনতার রোশের শিকার বাংলাদেশ পুলিশ। এমনকি পুলিশের শীর্ষ পদাধিকারীদেরও নিরুদ্দেশ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের আইজি আবদুল্লা আল-মামুন চৌধুরী অজ্ঞাত স্থান থেকে বার্তা দিয়ে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলিকে পুলিশকে নিরাপত্তা দেওয়ার অনুরোধ জানান। সেই সঙ্গে আহত সব পুলিশ কর্মীর চিকিৎসার নিশ্চয়তাও দেন তিনি। যদিও তাঁর অবস্থান অজানা থাকে। অন্যদিকে বাংলাদেশ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মহম্মদ হারুন উর রশিদ ঢাকায় নিজের দফতরে গিয়ে দফতরে কারো উপস্থিতি না দেখে ফিরে যান বাড়ি। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের গভর্নর আব্দুর রউফ দেশ ছেড়েছেন বলেও গুজব ছড়ায়। রাষ্ট্রপতির নির্দেশে মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক খুললেও তিনি ব্যাঙ্কে যাননি।

রাজধানী ঢাকার প্রায় প্রতিটি থানায় ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। যে দেশের রাজধানীর থানার এই পরিণতি, তার গ্রামাঞ্চলের থানাগুলির কী পরিস্থিতি তা বলাই বাহুল্য। মঙ্গলবার ঢাকার থানাগুলিতে শুধুই দমকল কর্মীদের দেখা যায় আগুন নেভানোর কাজ করতে। রাজশাহী পুলিশের সদর দফতরে সোমবার রাতে আগুন লাগায় হামলাবাজরা। সেই আগুন মঙ্গলবার দুপুরেও জ্বলতে দেখা যায়। পুলিশ কর্মীরা এতটাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, মঙ্গলবার কর্মীদের সংগঠন অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেন।

spot_img

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...