সাংবিধানিক সৌজন্য বজায় রাখতে রাজভবনের চা-চক্রে গেলেও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে (CV Anand Bose) কার্যত এড়িয়ে চললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। সম্প্রতি রাজভবনে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তিনি সেখানে একা যাবেন না। বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসে রাজ্যপালের ডাকা চা-চক্রেও একা যাননি। রাজ্যের মুখ্যসচিব, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা-সহ ১০ জন শীর্ষ স্থানীয় আধিকারিককে নিয়ে রাজভবনে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরো সময়টাই তিনি ছিলেন রাজভবনের উত্তর গেটের কাছের চাতালে। এবং উল্লেখযোগ্য হল, চা-চক্রের আমন্ত্রণে চা খাওয়াতো দূরস্ত, রাজভবনের এক ফোঁটা জলও খাননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। স্বাধীনতা দিবসে রাজভবনের চা-চক্রে সামান্য সৌজন্য বিনিময় ছাড়া রাজ্যপালের মুখোমুখি হলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম মাফিক এদিনের অনুষ্ঠানে শুরুতেই হয় জাতীয় সঙ্গীত। সেই সময় মূল অনুষ্ঠান যেখানে হচ্ছিল সেই হলে উপস্থিত ছিলেন মমতা। এরপরেই তিনি সেই জায়গা থেকে দুটি হল পেরিয়ে সোজা চলে যান রাজভবনের উত্তর গেটের সামনের চাতালে। সেখানেই চেয়ার পেতে বসে পড়েন। সেখানেই চলে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপচারিতা। অনেকেই এসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

মুখ্যমন্ত্রী চাতালে বসে আছেন খবর পেয়ে কিছুক্ষণ পরে সেখানে আসেন রাজ্যপালের সচিব। তাঁকে চা কফি- কী খাবেন তা জিজ্ঞাসা করেন। চা খাওয়াতো দূরস্ত, রাজভবনের এক ফোঁটা জলও খাননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নিজের নিয়ে যাওয়া জলই খান তিনি। সরাসরি ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, কেন কলকাতার মেয়র ও কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে চা চক্রে আমন্ত্রণ করা হল না? তাঁদের চেয়ারকে সম্মান জানিয়ে সেটা করা উচিত ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর কথা জবাব দিতে পারেননি সচিব। কোনরকমে ওই জায়গা থেকে পালিয়ে মুখ বাঁচান তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay) মূল অনুষ্ঠানস্থলে না যাওয়ায় কথা কানে যেতেই রাজ্যপাল নিজেই একবার বেরিয়ে চলে আসেন চাতালে। সেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে করমর্দন করে আবার ফিরে যান তিনি। মমতা সেখানেই বসে থাকেন।


অনুষ্ঠান শেষে যখন রাজভবনের ভিতরের হলে ফের জাতীয় সঙ্গীত হয়, তখনও সেখানে যাননি মুখ্যমন্ত্রী। চাতালে দাঁড়িয়েই হাতজোড় করে জাতীয় সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করে রাজভবন ছাড়েন তিনি। শুধুমাত্র সৌজন্য রক্ষায় চা-চক্রে উপস্থিত থেকেও, সরাসরি আনন্দ বোসকে এড়ালেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
