সংবাদ মাধ্যমে মন্তব্যের অপব্যাখ্যা: এক্স হ্যান্ডেলে ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

তাঁর মন্তব্যের অপব্যাখ্যা। স্যোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবার, মেয়োরোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তৃণমূল (TMC)  সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বক্তব্যের নানা ব্যাখ্যা হয়েছে। কিন্তু সেই ব্যাখ্যা যে সঠিক নয়, সেটা বৃহস্পতিবার স্পষ্ট করে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো।নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মমতা লেখেন, “আমি কিছু সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিন ও ডিজিটাল মিডিয়াতে একটি নোংরা, বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চিহ্নিত করেছি। গত কাল আমাদের ছাত্রদের কর্মসূচিতে আমি যে বক্তৃতা করেছিলাম, সে প্রসঙ্গেই রিপোর্টগুলি প্রকাশ করা হয়েছে। আমি খুব জোরালো এবং স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই, পড়ুয়াদের (ডাক্তারি ইত্যাদি) বা তাঁদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করিনি। আমি তাঁদের আন্দোলনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি। তাঁদের আন্দোলন ন্যায্য। আমি কখনই তাঁদের হুমকি দিইনি। কিন্তু কিছু মানুষ আমাকে অভিযুক্ত করছেন। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি কারণ, ভারত সরকারের মদতে তারা আমাদের রাজ্যে গণতন্ত্রকে আঘাত করার এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কেন্দ্রের সমর্থনে তারা অনাচার তৈরি করার চেষ্টা করছে। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে আমার আওয়াজ তুলেছি। আমি আরও স্পষ্ট করে বলতে চাই যে আমি গতকাল আমার বক্তব্যে যে শব্দ ব্যবহার করেছি তা স্বয়ং শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের একটি উক্তি। তিনি বলেছিলেন, মাঝে মাঝে আওয়াজ তুলতে হয়। যখন অপরাধ ও ফৌজদারি অপরাধ হয় তখন প্রতিবাদের আওয়াজ তুলতে হয়। আমি সরাসরি শ্রী রামকৃষ্ণের উক্তি তুলে ধরেছিলাম।“

অর্থাৎ তৃণমূল সভানেত্রীর যে যে কথা নিয়ে দিনভর সংবাদ মাধ্যমের একাংশ কুৎসা ছড়িয়ে যে, এদিন সকালেই সেই অংশগুলি নিজেই উদ্ধৃত করে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেন তিনি। বুধবারের ওই সভার তাঁর বক্তৃতার অপব্যাখ্যায় সংবাদমাধ্যমের একাংশকে দায়ী করেন মমতা।

বুধবার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তৃণমূল (TMC)  সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলে বলেন, “আমায় অনেক গালাগালি দিয়েছেন। অনেক অসম্মান করেছেন। আমি অনেক ভেবেছি। আমি ভেবে দেখলাম, এদের বিরুদ্ধে কোনও দিনও বদলা নিইনি। আমরা বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। আজ বলছি, ওই কথা নয়। আজ বলছি, যেটা করার দরকার, সেটা আপনারা ভাল বুঝে করবেন।“ তাঁর কথায়, “আমি অশান্তি চাই না। কিন্তু কুৎসা, অপপ্রচার এবং চক্রান্ত করে যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে, তাকে আপনি কামড়াবেন না ঠিকই। কিন্তু ফোঁস তো করতে পারেন।“ এ প্রসঙ্গে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এবং একটি গোখরো সাপের গল্প শোনান মুখ্যমন্ত্রী। এই কথা থেকেই স্পষ্ট তিনি বিরোধীদের সম্পর্কেই একথা বলেছেন। কিন্তু সেটিকে ছাত্রদের দিকে ঘুরিয়ে অশান্তির সৃষ্টি করে একশ্রেণির মিডিয়া।

পাশাপাশি, মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে বলেন। তাঁর কথায়, “জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি আমার সমর্থন আছে। ওরা বন্ধুর জন্য আন্দোলন করছে। আপনাদের ক্ষোভ আছে। অভিমান আছে। আমি সেটা বুঝি। কিন্তু এ বার আস্তে আস্তে কাজে যোগদান করুন। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলোকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমি আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেব না। আমরা পদক্ষেপ করলে কেরিয়ার নষ্ট হয়ে যাবে। পাসপোর্ট-ভিসা পেতে সমস্যা হবে।“ কিন্তু সেটাও হুমকি বলে প্রচার করে সংবাদ মাধ্যমের একাংশ। এদিন নিজের পোস্ট সম্পূর্ণ বিষয়টি স্পষ্ট করে দিলেন খোদ তৃণমূল সভানেত্রী।

অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হল FIR। বুধবার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা সভা থেকে আর জি করের ঘটনায় দোষীর ফের ফাঁসির সাজা চান মমতা। এরপরই বিজেপিকে আক্রমণ করেন। বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “কেউ কেউ মনে করছেন এটা বাংলাদেশ। আমি ওদের ভালবাসি। ওদের সংস্কৃতি আমাদের সংস্কৃতি এক। তবে এটা আলাদা রাষ্ট্র। ভারতবর্ষ একটা আলাদা রাষ্ট্র। বাংলায় যদি আগুন লাগান, কোনও রাজ্যই থেমে থাকবে না। বাংলায় আগুন লাগালে অসম থেমে থাকবে না। উত্তর-পূর্ব, উত্তর প্রদেশ থেমে থাকবে না। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও থেমে থাকবে না। আপনার চেয়ারটা আমরা টলমল করে দেব।”মমতার এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে সরব হন একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিনীত জিন্দাল। বৃহস্পতিবার ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫২, ১৯২, ১৯৬ ও ৩৫৩ ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানা যায় । অভিযোগপত্রে বিনীত লিখেছেন, ‘দলের ছাত্র পরিষদের সভায় মমতা বলেছেন, বাংলা জ্বললে অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লি জ্বলবে। এটা স্পষ্ট যে এই মন্তব্য প্ররোচনামূলক এবং রাষ্ট্রবিরোধী। বিভিন্ন অঞ্চলের একাধিক গ্রুপের মধ্যে হিংসা এবং ঘৃণা ছড়াতে পারে।’অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি রাষ্ট্রপতি ভবন এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বলে খবর।






Previous articleএকনজরে আজকের পেট্রোল-ডিজেলের দাম
Next articleGold Silver Rate: আজ সোনা রুপোর দাম কত? জেনে নিন এক ঝলকে