“প্রশাসনকে না জানিয়ে ৪৭ জনকে সাসপেন্ড করলেন। কীভাবে নিজে সিদ্ধান্ত নিলেন? এটা থ্রেট কালচার নয়?” প্রশ্ন ছুড়ে হুমকি রোধে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। সোমবার নবান্ন (Nabanna) সভাঘরে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের (Junior Doctor) সঙ্গে বৈঠকে এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, “তদন্ত না করে কাউকে সাসপেন্ড নয়। ইচ্ছেমতো কাজ করবেন না। কেউ কাউকে থ্রেট করবেন না। আমি ক্ষমতায় আছি বলে থ্রেট দিতে পারি না।’’ এদিন জুনিয়র ডাক্তারদের (Junior Doctor) সঙ্গে বৈঠকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ট্রেড কালচারের অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারীরা। পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন আর জি করের অধ্যক্ষ ডা. মানস বন্দ্যোপাধ্যায়কে, “প্রশাসনকে না জানিয়ে ৪৭ জনকে সাসপেন্ড করলেন। কীভাবে নিজে সিদ্ধান্ত নিলেন? এটা থ্রেট কালচার নয়? আমাদের জানালেন না কেন? স্বাস্থ্যবিভাগকে জানালেন না কেন? সরকার বলে একটা পদার্থ আছে।”
অধ্যক্ষ জানান সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কাউন্সিল। আর জি করের ডাক্তারি পড়ুয়া অনিকেত মাহাতে বলেন, “কমিটি তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার পর সাসপেন্ড করা হয়েছে।” অনিকেতের অভিযোগ, “যারা সাসপেন্ড হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত করেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।” তাঁর কথায়, “কলেজ ক্যাম্পাস সুস্থ জায়গা হতে হলে, সেখানে আমাদেরও থাকতে হবে। একজন ছাত্র কলেজে প্রবেশের পর কী এমন ঘটছে যে সে পচা হয়ে উঠছে? সে কারণে ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুস্থ, স্বাভাবিক করা প্রয়োজন।’’

অবিলম্বে থ্রেট কালচার বন্ধের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আগামী দিনে দেখা হবে বিষয়টি। তদন্ত করা হবে। পক্ষপাতিত্ব চলবে না। আপনার যাকে পছন্দ নয়, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, এটা হতে পারে না।” এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “সরকারকে না জানিয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল কী ভাবে তৈরি হল?” ৪৭ জন সাসপেন্ডেড প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রাজ্যস্তরের টাস্ক ফোর্সে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।

একই সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে ৪৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। জনগণের টাকা অন্য জায়গায় চলে গিয়েছে। ধর্না এবং অবস্থানের মাধ্যমে সরকারি ডাক্তাররা নিজেদের দাবি জানালেও, ৯ আগস্ট থেকে ১৭ অক্টোবরের মধ্যে ৫৬৩ জন সরকারি সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে চুটিয়ে প্র্যাকটিস চালিয়েছেন। এই বিষয় নিয়েও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
