উত্তরবঙ্গে উন্নয়নে ‘অনীহা’ বিজেপির! বিধানসভায় শঙ্করকে কটাক্ষ অধ্যক্ষের

বিধানসভায় (assembly) সর্বসম্মত ভাবে প্রস্তাব পাস হওয়ার পরে বিরোধীদের (opposition) সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা পুরো বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন

বাংলাকে বদনাম করতে এক মিনিটও দেরি করেন না বিজেপি বিধায়করা। অথচ কেন্দ্রের থেকে বাংলার জন্য বরাদ্দ চাওয়ার প্রসঙ্গ এলে মুখে কুলুপ একাধিক বিজেপি নেতা-নেত্রীদের। আবার অনেকে গর্ব করে বলেন, তাঁরাই বাংলার টাকা আটকে দিয়েছেন। অথচ যখন বাংলার উন্নয়ন নিয়ে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে দরবার করে তখন খুঁজে পাওয়া যায় না বিজেপি বিধায়কদের। ফের একবার তা প্রমাণিত হল রাজ্য বিধানসভায় (assembly)। উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ আটকাতে বিজেপি সাংসদদের সম্মতি থাকলেও তাঁরা যে আদৌ কেন্দ্রের সরকারের কাছে রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে একযোগে বৈঠকে আগ্রহী নন, স্পষ্ট করে দিলেন বিধানসভার বিজেপির মুখ্য সচেতক (Chief Whip) শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh)। উপরন্তু বিরোধী দলনেতার সাসপেনশন প্রসঙ্গ টেনে এনে প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।

নভেম্বরে ভারত-নেপাল নদীগুলির দূষণ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের সরকার আদৌ কতটা আগ্রহী তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল বিধায়ক সুমন কান্জিলাল। কেন্দ্রের অধীন ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন (Indo-Bhutan River Commission) আদৌ কোনও কাজ করেনি বলে সেই সময়ই ব্যাখ্যা করেছিলেন তিনি। অথচ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদের কেন্দ্রের কাছে দরবার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তার জন্য বিজেপি বিধায়করা উদ্যোগ নেননি বলে নভেম্বরেই ব্যাখ্যা করেছিলেন সুমন।

বুধবার ফের সেই প্রসঙ্গ বিধানসভায় তোলেন বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসায় সিসামারা নদীর ভাঙনের জন্য সন্নিহিত এলাকার অধিবাসীদের দুরবস্থার কথা বিধানসভায় তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া (Manas Bhunia) অধ্যক্ষ ও পরিষদীয় মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন ভুটানের ৭৬টি নদী উত্তরবঙ্গকে ধ্বংস করছে। ইন্দো-বাংলাদেশ, ইন্দো-নেপাল রিভার কমিশন থাকলেও ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কিছু করেনি।

প্রশ্নোত্তরের পরেই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Bandyopadhyay) বিজেপির মুখ্যসেচতক (Chief Whip) শঙ্কর ঘোষকে এই বিষয়টি নিয়ে কবে বিজেপি বিধায়করা কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন সেই দিনখন জানাতে বলেন। যদিও সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতেই শঙ্কর ঘোষ দাবি করেন, এই বিষয়ে কথা বলতে পারতেন বিরোধী দলনেতা (LoP)। কিন্তু তিনি সাসপেন্ডেড। উত্তরে অধ্যক্ষ জানান, সঠিক পথে সাসপেনশন প্রত্যাহারের পথে যেতে পারেন তাঁরা। কিন্তু এই প্রসঙ্গ তুলে মূল বিষয়টিকে এড়িয়ে গেলেন বিজেপির মুখ্যসচেতক। বিজেপি বিধায়কের উদ্দেশে তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘কৌশলে এড়িয়ে গেলেন তিনি’। তিনি অভিযোগ করেন, বারবার বিজেপিকে দিল্লিতে বৈঠকের দিন জানাতে বলা হলেও কোনও উত্তর দেননি তাঁরা।

বিজেপি বিধায়কদের এই আচরণের পরে বিরোধী দলের মুখোশ রাজ্যের মানুষের কাছে খুলে গিয়েছে বলেই দাবি পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন বিধানসভায় (assembly) সর্বসম্মত ভাবে প্রস্তাব পাস হওয়ার পরে বিরোধীদের (opposition) সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা পুরো বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন এবং যেতে অনীহা প্রকাশ করছেন। পরিষদীয় মন্ত্রী বলেন, রাজ্যের স্বার্থে বিরোধীরা কি ভূমিকা নিচ্ছেন মানুষ তা দেখছেন।