এক পলকে একটু দেখা: ভালোবাসার এক অনন্য গল্প

বর্তমান সময়ে বাংলা চলচ্চিত্রের ভাণ্ডারে একটি নতুন সংযোজন “এক পলকে একটু দেখা”, যা ইতিমধ্যেই দর্শকমনে সাড়া ফেলেছে। এক অন্যরকম ভালোবাসার গল্প, বন্ধুত্বের টানাপোড়েন, আত্মত্যাগ আর মিলনের পরিপূর্ণ রূপ তুলে ধরেছে এই ছবি।

গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে প্রেম—এক ধনী পরিবারের ছেলে। তার পরিবার পরিচালনা করে এক স্বনামধন্য গানের রেকর্ডিং কোম্পানি। প্রেম নিজে বেকার, তবে স্বপ্নবাজ। তার জীবনে এক অদ্ভুত শর্ত—সে বিয়ে করবে শুধুমাত্র সেই মেয়েকেই, যার চোখ নীল। এই ইচ্ছের কথা সে খোলাখুলি বলেই বন্ধুদের মধ্যে।

প্রতিদিন ভোরবেলায় প্রেম দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে প্রাতঃভ্রমণে বের হয়। একদিন সকালে, হাঁটার শেষে প্রচণ্ড তেষ্টা পেয়ে যায় তারা। আশেপাশে জল খুঁজতে গিয়ে তারা প্রবেশ করে একটি গানের স্কুলে। আর সেখানেই প্রেমের চোখে পড়ে এক মেয়ের চোখ—এক জোড়া নীল চোখ। সেই মেয়েই অন্তরা। প্রেম এক পলকেই বুঝে ফেলে, এ-ই তার মনের মানুষ।

প্রেম নিজের ভালোবাসার কথা জানায় অন্তরাকে। অন্তরা প্রথমে হতবাক হলেও ধীরে ধীরে প্রেমের প্রতি ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু গল্পে আসে বড় বাঁধা—অন্তরার বাবা, এক বিখ্যাত ব্যবসায়ী, ইতিমধ্যেই মেয়ের বিয়ে ঠিক করে রেখেছেন মল্লারের সঙ্গে, যে কিনা প্রেমেরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

ঘটনার মোড় ঘোরে যখন প্রেম তার ভালোবাসার কথা মল্লারকে জানায়, আর মল্লার জানায় যে অন্তরার সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। বন্ধুত্বে ফাটল ধরাতে না চেয়ে প্রেম নিজে থেকে সরে দাঁড়ায়।

তবে অন্তরা ততদিনে প্রেমকে ভালোবেসে ফেলেছে। সে রাজি নয় মল্লারের সঙ্গে বিয়েতে। দুই পরিবারের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ, মতপার্থক্য, অশান্তি। একদিকে প্রেম আর অন্তরার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, আরেকদিকে সমাজ ও পরিবারের চাপ।

এই সমস্ত জটিলতার মাঝেও অবশেষে ঘটে মিলন—মল্লার নিজে থেকে সরে দাঁড়িয়ে প্রেম আর অন্তরাকে এক করে। তার এই ত্যাগ, বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে থেকে যায় চিরদিনের জন্য।

“এক পলকে একটু দেখা” ছবিটি প্রেম, বন্ধুত্ব, আত্মত্যাগ, পরিবার ও ভালোবাসার এক মোহময় সমন্বয়। ছবির নির্মাণশৈলী, অভিনয়, চিত্রনাট্য এবং আবেগঘন সংলাপ দর্শকদের মনে দাগ কেটে যায়। প্রেম-অন্তরার জুটি দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছে।

এই সিনেমা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ভালোবাসা কখনও চোখের রঙে নয়, হৃদয়ের গভীরতায় বাস করে। তবে চোখের সেই এক পলকও বদলে দিতে পারে একটি জীবন।

আরও পড়ুন – বিশ্ব বই দিবসে প্রকাশিত হল দেবযানী বসু কুমারের ‘গাল গল্প’

_

 

_