পাকিস্তানী সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে যখন কেন্দ্রের সরকার অপারেশন সিন্দুর-এর মতো অভিযান চালাচ্ছে দেশের সেনা, সেই সময় পাশে দাঁড়িয়েছে গোটা দেশ। সব রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সর্বদলীয় বৈঠকে কেন্দ্রের সরকারের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানি হামলায় যেখানে প্রতিদিন দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তখন কলকাতায় যুদ্ধ বিরোধী মিছিলের আয়োজন করেছে ‘বামপন্থী দলসমূহ’। কার্যত যে দেশবিরোধী শক্তিগুলি আর জি কর আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে অরাজকতা তৈরি চেষ্টা চালিয়েছিল, তাদের সঙ্গে নিয়ে দেশের সেনার কঠিন সময়ে মিছিল করাকে নাটক বলে কটাক্ষ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের।

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতিতে তৃণমূল সবসময় কেন্দ্রের সরকারের পাশে রয়েছে, বারবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অযথা ‘যুদ্ধের’ রব তুলে সেখানে নিজেদের প্রাসঙ্গিক রাখার চেষ্টায় এক শ্রেণির বামপন্থীরা। সোমবার কলকাতা শহরে মিছিলের ঘোষণা করেছে বামপন্থী কিছু সংগঠন। সিপিআইএম-এর তরফ থেকেই তার প্রচার চালানো হয়েছে। সেখানেই তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের স্পষ্ট দাবি, সিপিআইএমের দ্বিচারিতার লিমিট থাকা উচিত। অশান্তি কেউ চায় না। কিন্তু কোথাও কোথাও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে কিছু করণীয় থাকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন সব সময় সেই জায়গায় দেশের পাশে থাকব। সেই সময় উল্টো সুরে মিছিল করা বামেদের কোনও অবস্থাতেই উচিত নয়। এমন ভাব করছেন যেন তারা একাই শান্তি চাইছেন, বাকি কেউ চাইছে না। যদি জঙ্গিরা ঢুকে লোক মেরে দেয়, সরকার যখন পাল্টা জবাব দিতে চান। সেই সময় পাশে দাঁড়ানোই তো উচিত।

একদিকে সর্বদল বৈঠকে সিপিআইএম সাংসদরাই কেন্দ্রের সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন। অন্যদিকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য কেন্দ্রের সরকারের বিরোধিতা করা বাংলার সিপিআইএমকে কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, যখন দেশ একটি জায়গায় রয়েছে তখন কী রাজনীতি বড় করে দেখব? না কি সবাই মিলে দেশের এককাট্টা একটা মঞ্চ তৈরি করব? তিনি স্পষ্ট করে দেন, রাজনৈতিক যদি মতপার্থক্যও থাকে দেশের স্বার্থে কেন্দ্রের সঙ্গে থাকাটা নীতি এবং রীতি। সেই সময় কলকাতার রাস্তায় নাটক। আরজিকরে গিয়ে দেশবিরোধী শক্তি যারা সামনে এসেছিল, তাদের সঙ্গে নিয়ে এই নাটক।

সেই সঙ্গে বামেদের রীতিমত চ্যালেঞ্জ করে কুণাল ঘোষের বক্তব্য, এদের প্রত্যেককে একেবারে সীমান্তে সামনে বিএসএফ-এর সামনে ছেড়ে দেওয়া উচিত। এরা একেবারে সামনে গিয়ে শান্তি ফেরাক। তারপর শহরে এসে নাটক করবে। পাকিস্তানি জঙ্গি ও পাক সেনার সামনে গিয়ে শান্তির দাবি জানাক।

এমনকি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ধুয়ো তুলে নতুন করে রাজনীতির খেলায় মেতে ওঠা সিপিআইএমের মুখোশও খুলে দেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে দেশ বিরোধী শক্তি। বাংলার মাটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে সম্প্রীতি আছে। সম্প্রীতি রাখতে হবে এই প্রচার করে আসলে উল্টো প্রচার হচ্ছে। কমিউনিস্ট দেশগুলো কী আক্রমণের পরে যুদ্ধ করেনি? না কি আক্রমণের পরে বলেছে, এসো, দখল করো?