ঘরে ফেরা: দেশবাসাকে ধন্যবাদ পূর্ণমের, আনন্দে বিহ্বল স্ত্রী-আবেগে ভাসলেন মা

Date:

Share post:

অবশেষে বাড়ি ফিরলেন BSF জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ। রিষড়ায় পৌঁছতেই তাঁকে নিয়ে সারা এলাকা হুড খোলা গাড়িতে ঘোরানো হয়। তারপর ঘরে ঢোকা। মা ও স্ত্রী মিলে তাঁকে মিষ্টি খাইয়ে বরণ করে নেন। আবেগ ধরে রাখতে পারেননি মা। বিহ্বল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী সাময়িক অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুধু পরিবার বা এলাকাবাসী নয়, তাঁকে ফিরিয়ে আনার জন্য দেশবাসীকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন পূর্ণম।

ঠিক একমাস আগে অসাবধানতাবশত সীমান্ত পেরিয়ে চলে গিয়ে পাক সেনার হাতে বন্দি হন BSF জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ (Purnam Kuman Shaw)। অনেক টানাপোড়েনের পরে ১৪ মে ভারতের মাটিতে পা রাখেন পূর্ণম। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বাড়ি ফিরলেন তিনি। ঘরের ছেলে ফিরে আসার আগে থেকেই উৎবসের আয়োজন বাড়িতে। রান্না হয় পূর্ণমর প্রিয় খাবার। কেক কেটে সেলিব্রেশন।

পাকিস্তান সেনার হাতে বন্দি হওয়ার পর অনিশ্চয়তার অন্ধকারে চলে গিয়েছিল সাউ পরিবার। উদ্বেগে দিন কাটিয়েছে শুধু রিষড়া নয়, সারা বাংলা। এদিন ঘরে ফিরলেন তিনি। বেজায় খুশি পূর্ণমের স্ত্রী রজনী। সকাল থেকেই তোড়জোড় করেছেন। স্বামীকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য অন্তঃসত্ত্বা রজনী পাঠানকোট আর্মি বেস ক্যাম্পে গিয়েও বসেছিলেন। কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সব উদ্যোগ নেওয়ার ও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ মুখে হাসি ফোটার দিন। রজনী বলেন, “খুব ভালো লাগছে এতদিন পর বাড়ি ফিরছে। মনে হচ্ছে যে রামচন্দ্রই ফিরছেন।“

এপ্রিল ২৩ কর্মরত অবস্থায় ভুল করে বর্ডার পেরিয়ে গিয়ে পাক রেঞ্জার্সের হাতে আটক হন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম। ভারতের প্রবল কূটনৈতিক চাপে আটক জওয়ানকে ২২ দিন পর ফেরাতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। ১৪ মে ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরানো হয় পূর্ণমকে। ফোনে, ভিডিও কলে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় তাঁর। কিন্তু তখনই বাড়ি ফিরতে পারেননি। স্বাস্থ্যপরীক্ষা, ও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মানসিকভাবে পূর্ণম কতটা ঠিক রয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হয়। সেই পর্ব মিটতেই দেশে ফেরার ৯ দিনের মাথায় মে ২৩ বাড়ি ফিরলেন হুগলি রিষড়ার বাসিন্দা পূর্ণম সাউ। শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ পূর্ব এক্সপ্রেসে পাঠাকোট থেকে ফেরেন তিনি। স্টেশনে তাঁকে আনতে যান তাঁর বাবা-সহ আত্মীয়রা।

পূর্ণম ফেরার খবরের পরেই এলাকায় মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। বাড়ি সাজিয়ে তোলা হয়েছে জাতীয় পতাকার রঙের আলোতে। এলাকায় স্বাগত ফ্লেক্স লাগানো হয় জায়গায় জায়গায়। বাকখাল থেকে র্যা লি করে বাড়ি নিয়ে আসা হয় জওয়ানকে।

বাড়িতে পূর্ণমের পছন্দের রান্না হয়েছে, প্রিয় লুচি, তরকারি, দই, মিষ্টি। কেক কাটা হয়। এদিন একাদশী থাকায় আমিষ রান্না হয়নি। রবিবার মাংস হবে।

spot_img

Related articles

চন্দননগর নয়! কোথা থেকে সূচনা বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর? জানুন ইতিহাস 

জগদ্ধাত্রী পুজোর নাম উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে গঙ্গাপাড়ের শহর চন্দননগরের ছবি—চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা, সুবিশাল প্রতিমা আর অসংখ্য দর্শনার্থীর...

চাপ দিয়ে তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করা হয়: বিস্ফোরক নারদ মামলার প্রথম তদন্তকারী CBI আধিকারিক

বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি নারদ (Narada Case) মামলার প্রথম তদন্তকারী সিবিআই আধিকারিক রঞ্জিত কুমারের (Ranjit Kumar)। একটি অডিও সাক্ষাৎকারে তিনি...

আসানসোলে চিটফান্ড কেলেঙ্কারির অভিযুক্তের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই, জানালো ঘাসফুল শিবির

আসানসোলে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে 'তৃণমূল নেতা'র নাম জড়িয়ে যে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা...

বোনের কাছে ভাইফোঁটা শোভনদেবের, টলিনায়িকারা ফোঁটা দিলেন অরূপকে

বাংলা জুড়ে আজ উৎসবের আমেজ। সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রেটি সকলেই মাতলেন ভাইফোঁটা উদযাপনে। সকাল গড়িয়ে বিকেল তবু এখনও...