শুধুমাত্র দলিত হওয়ায় মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার ওড়িশার দুই যুবক। বিজেপি শাসতি রাজ্যগুলিতে যেভাবে স্বঘোষিত ধর্মের রক্ষকদের (cow protector) অত্যাচারের শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে, তারই আরও এক উদাহরণ বিজেপির ওড়িশায় (Odisha)। শুধুমাত্র সন্দেহের বশে দুই দলিত (Dalit) যুবককে মাথা মুড়িয়ে হাঁটু গেঁড়ে কাদায় হাঁটানো হল। শেষ পর্যন্ত নর্দমার জলও পান করানো হয়। অভিযুক্ত সেই স্বঘোষিত গোরক্ষকরা। তবে এই ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মোহন মাঝির জমানায় ওড়িশার জাতিবিদ্বেষের (caste hatred) এটাই ছবি, কটাক্ষ বাংলার শাসকদল তৃণমূলের।

ওড়িশার গঞ্জাম (Ganjam) জেলার একটি ভিডিও সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল (ভাইরাল ভিডিও সত্যতা বিশ্ববাংলা সংবাদ যাচাই করেনি) হয়। সেখানে দেখা যায়, দুই যুবককে মুখে ঘাস নিয়ে মাটিতে কাদায় হামাগুড়ি দিতে। একজনের মাথা অর্ধেক মোড়ানো এবং শেষে তাদের নর্দমার জল পান করতেও বাধ্য করা হয়। তাদের অপরাধ, তারা দুটি গরু ও একটি বাছুর নিয়ে যাচ্ছিল।

গঞ্জামের (Ganjam) স্থানীয় গোরক্ষকদের (cow protector) দাবি, বাবুলা নায়েক ও বুলু নায়েক নামের এই দুই যুবক গরু পাচারের (cattle smuggling) সঙ্গে জড়িত। আদতে বাড়িতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে জাতির প্রথা অনুসারে সেই গরু তারা আত্মীয়ের থেকে পেয়েছিল। গাড়ি করে সেই গরুই নিজেদের বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময়ে স্বঘোষিত গোরক্ষকরা তাদের উপর চড়াও হয়। তাদের থেকে ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু তারা সেই টাকা দিতে না পারায় তাদের উপর এই মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালানো হয়। আবার তার ভিডিও করে ছড়িয়েও দেওয়া হয়। সেখান থেকে কোনও মতে ছাড়া পেয়ে দুই যুবক পুলিশের দ্বারস্থ হয়।

তবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে যে এভাবে নিম্ন বর্গের মানুষের উপর অত্যাচার চলে ওড়িশার ঘটনায় তা আরও একবার প্রকাশ্যে, এমনটাই দাবি তুলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুধুমাত্র দলিত হওয়ার জন্য মাথা অর্ধেক মুড়িয়ে, মাটিতে ফেলে, হামাগুড়ি দিতে বাধ্য, ঘাস খেতে ও নর্দমার জল পান করতে বাধ্য করা হল। তাদের দোষ? দলিত হওয়া। এই ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝির (Mohan Charan Majhi) ওড়িশায় জাতিবিদ্বেষের হাড়হিম করা বাস্তবের এক প্রদর্শন। বিজেপিকে ধিক্কার যারা এমন এক ভারত তৈরি করছে যেখানে জাতি বিদ্বেষ প্রকাশ্যে দেখানো হওয়া সম্ভব হচ্ছে।

গোটা ঘটনায় স্পষ্ট ওড়িশায় বিজেপির শাসন শুরু হওয়ার পরে নিম্নবর্গের মানুষের অবস্থা ঠিক কোথায়। ওড়িশার প্রাক্তন ক্ষমতাসীন দল বিজেডির (BJD) পক্ষ থেকে এই ঘটনার নিন্দা করে জানানো হয়, ক্রমশ মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছে। ওড়িশায় আইনের শাসন ভেঙে পড়ছে।

–

–

–

–

–

–
–
–
–