জয়িতা মৌলিক
‘কর্পূর’- ছবির নাম ঘোষণার পর থেকেই শোরগোল। প্রথম বিষয়, তারপরে স্টার কাস্ট। আর এবার লুক। প্রথম লুকেই বাজিমাৎ। কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh), ব্রাত্য বসু (Bratya Basu), সাহেব চট্টোপাধ্যায়- ১৯৯৭ থেকে ২০১৯-এর টাইম ফ্রেমে একেবারে তাক লাগানো চেহারা তাঁদের। এই জাম্প কাটের লুক চেঞ্জে অবশ্য আরও অভিনেতা-অভিনেত্রী আছেন। তবে, নিঃসন্দেহে নজর কেড়েছে তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা এই ছবির গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করা কুণাল ঘোষের লুক। আর সেই লুকে প্রয়াত সিপিএম নেতা অনিল বিশ্বাসের ছায়া স্পষ্ট। যদিও কারও ছায়া নয়, কুণালের দাবি, চরিত্রে তিনি নিজেকেই দেখতে পাচ্ছেন। খুবই ব্যতিক্রমী চেহারায় ধরা দিচ্ছেন অভিনেতা-পরিচালক-শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আলাদা লুক সাহেবেরও।

১৯৯৭-এর এক সকালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি কন্ট্রোলার মনীষা মুখোপাধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। ঘটনা অবলম্বনে দীপান্বিতার গল্প ‘অন্তর্ধানের নেপথ্যে’। তার উপর ভিত্তি করেই অরিন্দম শীলের (Arindam Sil) ছবি ‘কর্পূর’। মঙ্গলবার সন্ধেয় শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে হল ছবির লুক প্রকাশ। আর তা দেখেই তুমুল শোরগোল। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবশ্যই কুণাল ঘোষের লুক। মাথায় কালো চুল পাটে পাটে আঁচড়ানো। পরনে সাদা ফতুয়া আর ধুতি। চোখে কালো মোটা ফ্রেমের চশমা। হাতে বিশেষ কায়দায় পরা চামড়ার ব্যান্ডের ঘড়ি। ছবিতে কুণালের অভিনীত চরিত্রের নাম শশাঙ্ক মল্লিক। তিনি এক রাজনৈতিক দলের রাজ্য সম্পাদক ও সাংসদ। কিন্তু এলইডি-তে তাঁকে দেখে সবার এক কথা, এতো অনিল বিশ্বাস!

তবে, বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণের মতো পরিচালক অরিন্দম থেকে শুরু করে অভিনেতা কুণাল (Kunal Ghosh) সবাই একই কথা শুনিয়েছেন, কোনও বাস্তব ঘটনা বা চরিত্রের সঙ্গে কর্পূর-এর মিল নেই। কিন্তু অনুষ্ঠানেই এই দাবির প্রতিবাদ করেন সাংবাদিক পূষণ গুপ্ত। তাঁর কথায়, আমি তো দিব্য কুণালের চেহারার মধ্যে আমার অতি পরিচিত রাজনৈতিক নেতাকে দেখতে পাচ্ছি।

তাঁর চরিত্রে কি অনিল বিশ্বাসের ছায়া? উত্তরে কুণালের সহাস্য জবাব, “যে লুকটা রিভিল হয়েছে সেখানে আমাকে অনেকটা কুণাল ঘোষের মতোই দেখতে লাগছে। ওই যে লোকটা অনেক সাংবাদিক বৈঠক করে, তাঁর মতোই লাগছে। এই ছবির সঙ্গে কেউ কোনও ঘটনার মিল পেলে তা কাকতালীয়, এইটা মাথায় রেখে ছবি দেখা শুরু করলেই সমস্যা মিটে যায়।” ১৯৯৭-এ চুটিয়ে সাংবাদিকতা করছেন কুণাল। এই রাজনৈতিক নেতাদের তিনি দেখেছেন। তাঁর কোনও প্রভাব নেই। বিশ্ব বাংলা সংবাদ-এর এই প্রশ্নের জবাবে পর্দার শশাঙ্ক মল্লিক জানান, এই বিষয় কিছু বলছি না। দর্শকরা দেখে বিচার করবেন। ছবিতে ১৯৯৭-তে চোখে চশমা নেই কুণালের। আর তাতেই ২০ বছর বয়স কমে গিয়েছে- মত পরিচালকের।

ছবি দুঁদে গোয়েন্দা অফিসারের ভূমিকায় রয়েছেন ব্রাত্য বসুও। লালবাজারের হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের ছিলেন তিনি। নিজের চরিত্র সম্পর্কে ব্রাত্য জানান, ১৯৯৭-এ ঘটনার সময়ে পুলিশ রাখহরি গোস্বামী কাজ করতে পারেননি আনুষাঙ্গিক চাপে। সেই হতাশা থেকেই ২০১৯-এ তিনি খ্যাপাটে। ব্রাত্যর লুকেই সেই আভাষ স্পষ্ট। আর বন্ধু কুণালকে নিয়ে ব্রাত্যর মত, “আমি কুণাল ঘোষ- এই ব্যাপারটাই ওর মধ্যে নেই। বাধ্য ছাত্রের মতো কাজ করছে। ও আমার বন্ধু। আমি চাইব ও ভাল করুক।”

ছবিতে নজর কেড়েছে সাহেব চট্টোপাধ্যায়ের লুকও। ছবিতে নাকি সিপিএম নেতা বিমান বসুর ছায়া রয়েছে তাঁর চরিত্রে। তবে, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অরিন্দম জানান, বাংলার কোনও রাজনীতিবিদ কী গ্যালিস দেওয়া প্যান্ট পরতেন! বরং পরিচালকের দাবি, সাহেবের মধ্যে ‘মহিলাদের হার্টথ্রব’ শশী থারুরের ছায়া রয়েছে।
আরও খবর: কসবা ল’কলেজে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম

–

–

–

–

–
–
–
–
–