ভারতের মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। প্রথম ভারতীয় হিসাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে (ISS) পা রেখেছেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। মহাকাশে পৌঁছনোর এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি ১০০ বার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেছেন। এবার সেই মহাকাশ থেকেই সরাসরি ক্লাস নিলেন ভারতের ছাত্রছাত্রীদের জন্য—যা নিঃসন্দেহে দেশের শিক্ষা ও বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।

লখনউয়ের সিটি মন্টেসরি স্কুল সহ একাধিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ইসরোর ‘বিদ্যার্থী সংবাদ’ প্রকল্পের মাধ্যমে শুভাংশুর ভিডিও বার্তা শুনেছে। এই বিশেষ ক্লাসে তিনি নিজের মহাকাশ যাত্রার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, “মহাকাশে সবকিছুই ভিন্নরকম। মাধ্যাকর্ষণহীন অবস্থায় ঘুমোতে গেলেও স্লিপিং ব্যাগ বেঁধে না রাখলে সকালে দেখা যাবে অন্য কোথাও ভেসে গিয়েছেন!”

শুভাংশু জানান, কীভাবে মহাকাশচারীরা খাবার খান, কী কী খাবার সঙ্গে নিয়ে যান এবং অন্য দেশের মহাকাশচারীদের সঙ্গে সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। তিনি নিজে ইসরো ও ডিআরডিও-র তৈরি গাজর ও মুগডালের হালুয়া এবং আম রস নিয়ে গেছেন মহাকাশে। সেই খাবার বিদেশি মহাকাশচারীরাও খেয়ে প্রশংসা করেছেন।

ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্ন করে জানতে চায়—“মহাকাশ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন লাগে?” শুভাংশুর উত্তর, “অসাধারণ। এক অপার প্রশান্তি ও সৌন্দর্যে ভরা এই নীল গ্রহ।” আরও এক প্রশ্নে, মহাকাশে হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে কী হয়? শুভাংশু বলেন, “সকল মহাকাশচারীকে এমনভাবেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যে, তাঁরা অনেক জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন। এছাড়া স্পেস স্টেশনে জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসার সরঞ্জাম সবসময় প্রস্তুত থাকে।”

গত ২৬ জুন, শুভাংশু ও আরও তিন মহাকাশচারী আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছান। তারপর থেকে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেছেন ১০০ বার। সেই অভিজ্ঞতা সরাসরি ভারতের ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানীদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই প্রথম কোনও ভারতীয় মহাকাশ থেকে সরাসরি ক্লাস নিলেন দেশের ছাত্রদের জন্য। মহাকাশ বিজ্ঞানে ছাত্রদের আগ্রহ বাড়াতে এই উদ্যোগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন শিক্ষা মহল ও বিজ্ঞানীমহল। ভারতের মহাকাশ অভিযানের এই গর্বের অধ্যায় শুধু ইতিহাস নয়, ভবিষ্যতের দিশা।

আরও পড়ুন – অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের জন্য ৭ জেলায় পুষ্টিকর খাবার প্যাকেট বিতরণে উদ্যোগ রাজ্যের

_

_

_

_

_
_
_
_
_