Saturday, December 13, 2025

বাংলায় নাম বাদ দিয়ে দেখুন দামামা বাজিয়ে দেব : মমতা

Date:

Share post:

বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকারের এজেন্সি ভোটার তালিকায় নাম বাদ দেওয়ার চক্রান্ত শুরু করেছে। বাংলার নাম বাদ দিয়ে দেখুন, দামামা বাজিয়ে দেব। জো হামসে টকরায়েগা চুর চুর হো যায়ে গা। সোমবার বোলপুরে ভাষা আন্দোলনের সূচনা করে কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপিকে একযোগে হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, দেশের এক মন্ত্রী কো-অপারেশন ডিপার্টমেন্টের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ছিলেন, তিনি এসে ডবল ইঞ্জিন সরকারের মতামত নিয়ে ভোটার তালিকায় থেকে নাম বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করছেন। আমরা মুখ বুজে এসব সহ্য করব না। লড়াই চলবে।

এদিন কেন্দ্র ও কমিশনকে একহাত নিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, বলছে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে গেলে এপিক কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা বাড়ির দলিলেও হবে না। গুজরাট থেকে বসে লিস্ট ঠিক করছে। গুজরাত আমার শত্রু নয়। কিন্তু কেন এটা হচ্ছে? এটা তো বিজেপির এজেন্সি করছে। তারপরই নেত্রীর তোপ, বাংলায় নাম বাদ দিয়ে দেখুন। ছৌ নাচ দেখবেন। ধামসা-মাদল দেখবেন। দামামা বাজিয়ে দেব। জেনুইন ভোটারদের নাম বাদ দিয়ে মানুষকে হয়রানি করবেন না। আমি বেঁচে থাকতে এনআরসি করতে দেব না। হরিয়ানায় দশটা ডিটেনশন ক্যাম্প করেছে। অসমের ১০ লক্ষ লোকের নাম বাদ দিয়েছে। বাংলায় কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেব না। জো হামসে টাকরায়েগা চুর চুর হো যায়ে গা। নেত্রী বলেন, মা-বোনেদের শঙ্খধ্বনি-উলুধ্বনির সঙ্গে পারবেন তো? তারা ঘরেও কাজ করে, বাইরেও কাজ করে। আবার হাতে খুন্তি দিয়ে রান্নাও করে। আপনাদের মতো বন্দুকগুলি নিয়ে যাব না, শঙ্খধনি নিয়ে যাব।

নেত্রীর তোপ, যারা বলছে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেবে, যেন দেশটা ওদের জমিদারি! তোমাদেরই বাদ দিয়ে দেবে দেশের মানুষ। একটা মানুষের ঠিকানা কেড়ে নিলে তোমাদেরও ঠিকানা থাকবে না। সরকারে আছো যা ইচ্ছা করছো। মনে রেখো এই সরকার ২০২৯ পর্যন্ত চলবে না। তখন কোথায় যাবে? জাতীয় স্তোত্র রচনা করেছেন বঙ্কিমচন্দ্র, জাতীয় সঙ্গীত রবী্ন্দ্রনাথের, জয় হিন্দ নেতাজির, তারপরও বাংলা ও বাঙালিকে তোমরা কী করে ‘ইগনর’ করবে! এই শান্তিনিকেতনের বাউল, গানের ভাষায় যে কত জোর সেটা এবার বুঝবে। লড়াই হচ্ছে, লড়াই হবে।

তিনি বলেন, বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি নয়! আমাদের ভাষাকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করলে, ঠিকানা কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত হলে তা আমরা রুখবই। এই রাঙামাটিতে দাঁড়িয়ে বলছি, সংহতি, সম্প্রীতি, ঐক্য নিয়ে আমরা চলব। আমরা সবাই এক, আমাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই। ভাষার উপর সন্ত্রাস মানব না। বাংলাকে বঞ্চনা-লাঞ্ছনাও মানব না। এনআরসি চলবে না। কারও নাম বাদ দেওয়া যাবে না।

বিশ্বকবির স্বপ্নের বোলপুর-শান্তিনিকেতন থেকে ‘বিভেদ নয়, ঐক্যে’র বার্তা দিয়ে ভাষা আন্দোলনে যোগদানকারী সবাইকে প্রণাম ও ধন্যবাদ জানান তৃণমূলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কেন্দ্রকে স্মরণ করিয়ে দেন, ইতিহাসকে ভুলে যাবেন না, বাংলার গুরুত্ব ভুলে যাবেন না। আমরা নেপালি, হিন্দি-সহ সকল ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি। আমরা যদি বড় মন নিয়ে স্বীকৃতি দিতে পারি। আপনারা কেন বাংলাকে তাচ্ছিল্য করছেন? মনে রাখবেন সারা পৃথিবীতে বাংলায় কথা বলে পঞ্চম। এশিয়াতে বাংলাভাষা দু’নম্বরে।

spot_img

Related articles

শহরাঞ্চলেও আবাস যোজনায় গতি, দেড় লক্ষ নতুন বাড়ির প্রক্রিয়া শুরু 

রাজ্যের শহরাঞ্চলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের মাথার উপর পাকা ছাদের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ আরও জোরদার করল সরকার। গ্রামাঞ্চলের...

কথায়-কাজে বিস্তর ফারাক, পরিকল্পনাহীন অনুষ্ঠানে ‘ফ্লপ’ শতদ্রু

কথা রাখলেন না শতদ্রু দত্ত( Satadru dutta), অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের। পেলে-মারাদোনা-মার্টিনেজের পর কলকাতায় নিয়ে এলেন মেসিকেও।...

উত্তাল সল্টলেক, শ্রীভূমিতে মেসি-মূর্তি উন্মোচনের সুষ্ঠু আয়োজন সুজিতের

শনির কলকাতায় দুই বিপরীত দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন মেসি অনুরাগীরা। একদিকে যখন বিশ্বকাপজয়ী তারকার উপস্থিতিতে বেসরকারী আয়োজক সংস্থার অপদার্থতায়...

“জয় শ্রীরাম” ধ্বনি, গেরুয়া পতাকা: যুবভারতীয় বিশৃঙ্খলার পিছনে কারা? উঠছে প্রশ্ন

জয়িতা মৌলিক ভারতের ফুটবলের মক্কায় এসেছিলেন বিশ্ব ফুটবলের (Football) রাজপুত্র। তাঁকে দেখতে ফুটবল প্রেমী বাঙালি উপচে পড়েছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে...