১২ বছরে পড়ল কন্যাশ্রী (Kanyashree) প্রকল্প। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) স্বপ্নের প্রকল্প। বৃহস্পতিবার, আলিপুরের ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে হল দ্বাদশ বর্ষের অনুষ্ঠান। আর সেখানেই আশার কথা শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী। জানালেন, কন্যাশ্রী চালুর পর প্রাথমিকে ছাত্রীদের ড্রপআউট শূন্য।

সন্দেশ কেক কেটে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী। শুরুতেই কৃতীদের হাতে তুলে দেন পুরস্কার। কন্যাশ্রী দিবসে উনেস্কো ও উনাইটেড ন্যাশন্সকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, ”৬২টি দেশের ৫৫২ টি প্রকল্পের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে কন্যাশ্রী। এর উপকার পেয়েছে ৯৩ লক্ষ পড়ুয়া। আমি চাই পরের বছর ১ কোটি হোক। বিশেষ অনুষ্ঠান হবে। ১৭ কোটি খরচ হয়েছে এই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই।” তাঁর কথায়, ”আমার খুব গর্ব হচ্ছিল সেদিন যেদিন আমি নেদারল্যান্ডে ইউনাইটেড নেশন এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে ছিলাম তার মধ্যে প্রথম নাম ঘোষণা হল কন্যাশ্রীর।”

নিজের কলেজে ভর্তির সময়ের সমস্যার কথা মনে করলেন তিনি। বলেন, ”আমি যে কষ্ট পেয়েছি, ছোটরা যেন তা না পায়। আজকের নতুন প্রজন্ম যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। সব সুবিধা পায়। আমরা যখন ছোট ছিলাম আমি দেখেছি বাবা মারা যাওয়ার পর গলার কত হার বিক্রি করে কলেজে ভর্তি হতে হয়। কিছু সুবিধা ছিল না।”

আশার কথা শোনার মমতা। বলেন, ”আজ সরকারি স্কুলে সবাই কন্যাশ্রী (Mamata Banerjee)। কোনও ভেদাভেদ নেই। কলেজেও কন্যাশ্রী ২ পান। স্মার্ট কার্ড আছে। মেয়েরা শুধু পড়াশোনা নয়, ভোকেশনাল ট্রেনিং ও করছে। মেয়েরা দেশ চালাচ্ছে। ২০১১ সালে ড্রপ আউটের সংখ্যা ছিল পৌনে ৫ পার্সেন্ট। কন্যাশ্রী চালুর পর প্রাথমিকে ছাত্রীদের ড্রপআউট শূন্য।” খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ”সেকেন্ডারিতে ২০১১-১২ সালে ড্রপআউটের সংখ্যা ছিল ১৬.৩২ শতাংশ। এখন হয়েছে ২.৯ শতাংশ। তার মানে মেয়েরা পড়াশোনা করছে। উচ্চ মাধ্যমিকে আগে ছিল ১৫.৪১ শতাংশ। এখন হয়েছে ৩.১৭ শতাংশ। অনেকে এই সময়ে গ্র্যাডুয়েশন শেষ করে চাকরিতে ঢুকে যায়। এটা কি গর্ব করার ব্যাপার নয়? বিশ্বের ৫৫২ প্রকল্পের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্প। এই প্রকল্পের ফলে স্কুলছুট কমেছে। আজ মেয়েরা দেখিয়ে দিয়েছে প্রাইমারিতে ড্রপআউট ‘জিরো’। কন্যাশ্রীর সাথে সবুজ সাথীও পাচ্ছে তারা। সবুজসাথী প্রকল্পে ১ কোটি ৩৮ লক্ষ সাইকেল দেওয়া হয়েছে।”

রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”১২ লক্ষ পড়ুয়াকে এই মাসের শেষের দিকে সাইকেল দেব। এছাড়া বিয়ের সময় ২৫ হাজার টাকাও পাচ্ছে। একাদশ শ্রেণিতে আমরা ওদের স্মার্টফোন দিচ্ছি বিনামূল্যে যাতে নিজের পড়াশোনা নিজেরাই খুঁজে নিতে পারে। সেটার নাম দিয়েছি আমি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের একটি বইয়ের নাম ‘তরুণের স্বপ্ন’-র নামে। এছাড়া গবেষণা উচ্চমাধ্যমিক এসবের জন্য স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট ও স্কলারশিপ আমার দিচ্ছি। ইউজিসি সব বন্ধ করে দিলেও আমরা নিজেরা দিচ্ছি।”

–

–

–

–

–
