“প্রোটেনশিয়াল রেপিস্ট! মনোজিৎ মিশ্র আমাদের দলেও আছে। এরা থাকলে ভবিষ্যতে ছাত্রীদের সংগঠনে নিয়ে আসতে গেলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে”- বিস্ফোরক অভিযোগ করে চিঠি লিখে সংগঠন থেকে ইস্তাফা দিলেন বামেদের উত্তর ২৪ পরগনার ছাত্র সংগঠনের এক নেত্রী। এসএফআইয়ের (SFI) নেতা ঋতঙ্কর দাসের (Ritankar Das) বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ এনে এসএফআইয়ের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বের কাছে ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন ওই নেত্রী। দাবি করেছেন সুবিচারের।

ভোট বাক্সে শূন্য। কিন্তু যৌন কেলেঙ্কারি ঘনঘটা সিপিএমের অন্দরে। যৌনগন্ধী ঘটনায় একের পর এক নাম জড়াচ্ছে প্রবীণ থেকে নবীন নেতাদের, বাদ যাচ্ছে না ছাত্র সংগঠন এসএফআই-ও। এবার সিপিএমের (CPIM) ছাত্র সংগঠনের রাজ্য কমিটির নেতার বিরুদ্ধে এসএফআই সদস্য ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়া এবং রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেওয়ার অভিযোগ উঠল। এই অভিযুক্ত এসএফআই নেতা ঋতঙ্কর সাহাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বাড়ি ঘেরাও করেছিলেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের।

ওই নেত্রী তাঁর অভিযোগ পত্রে লিখছেন, SFI নেতা ঋতঙ্কর তাঁকে একাধিকবার মদ্যপানের প্রস্তাব দিয়েছেন। দমদম ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় তাঁর ফাঁকা ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে চেয়েছেন। তার সঙ্গে একা বেড়াতে যেতে বা কোথাও থাকতে প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি প্রত্যাখ্যান করলেও ছাত্রনেতা তাঁকে উত্ত্যক্ত করতেন। যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলেও অভিযোগ ওই তরুণীর।

প্রতিশোধের বিষয়ে ওই নেত্রী লিখেছেন, ছাত্রনেতা প্রথমে তাঁকে রাজ্য সিপিএমের ফেসবুক পেজে সংবাদ সঞ্চালিকা কাজের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যৌন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তাঁকে অপমান করে সেই সুযোগ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।এমনকী তাঁকে দিয়ে ঋতঙ্কর এক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা অভিযোগ সাজানোর প্লট করতে চেয়েছিলেন বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ ওই নেত্রীর। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। এরপর ঋতঙ্কর ওই ছাত্রীকে অস্বস্তিকর, অশ্লীল প্রশ্ন করতেন বলে অভিযোগে লিখেছেন তিনি। ক্ষোভ উগড়ে ওই নেত্রী লেখেন, “মনোজিৎ মিশ্রর মতো নেতা আমাদের দলেও আছেন। এরা প্রোটেনশিয়াল রিপিস্ট। এদের যদি শাস্তি না হয় তাহলে ভবিষ্যতে মহিলা কমরেডদের দলে আনতে গেলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে।”

অভিযোগ পত্রটি জেলা এসএফআই-কে লেখা। অনুলিপি পাঠানো হয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সায়নদীপ মিত্র, ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক, সভাপতি ও সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটিকে। ইতিমধ্যেই সেটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। (অভিযোগ পত্রের সত্যতা যাচাই করেনি ‘বিশ্ববাংলা সংবাদ’।)

এই অভিযোগ পত্র এবং তার সঙ্গে বেশ কিছু স্ক্রিনশট নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন তৃণমূল (TMC) মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় পাল। সেখানে তিনি কটাক্ষ করে লেখেন, “এই গুণী ছেলেটির নাম ঋতঙ্কর দাস। SFI-এর দমদম লোকাল কমিটির সদস্য-ফদস্য হবে। এই ছেলেটি মেয়েদের ফাঁকা ফ্ল্যাটে লেনিন শেখানোর প্রস্তাব দেয়।ওদের পার্টির মেয়েদের একাধিক অভিযোগ এর বিরুদ্ধে। একটি মেয়ের অভিযোগ পোস্ট করলাম (নামটা ইচ্ছে করে কেটে দিলাম)।এই আবার যাদবপুর ঘটনার পর আমাদের মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বাড়ি ঘেরাও করেছিল। এরা দিনেই কোল দখল করে বসে আছে। তুমিই আমার হিমসাগর তুমিই আমার ল্যাংড়া। SFI করে তাই এই পঁচা আম নিয়ে আলোচনা হবেনা।”

এসএফআই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক আকাশ কর অভিযোগপত্রটির প্রাপ্তিস্বীকার করেছেন। এখন এ বিষয়ে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন কী পদক্ষেপ করে সেটাই দেখার।

–

–

–
–
–