যাদবপুরের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া অনামিকা মণ্ডলের মৃত্যুতে ফের একবার প্রশ্নের মুখে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যাদবপুরের অরাজকতা। এর আগে পরপর দুবছর অতিবামদের ভয়ঙ্কর ব়্যাগিংয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই পড়ুয়ার। এখনও একশ্রেণির রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন কোনওভাবেই সেখানে সম্পূর্ণভাবে সিসিটিভি লাগাতে দিতে চায় না। এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ক্যাম্পাসে সিসিটিভি (CCTV) বসানোর দাবি তুলে স্মারকরলিপি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP)। অন্যদিকে, একটি মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার পরে রাজনীতির ফায়দা তুলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপির (ABVP)। তাদের রুখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ক্যাম্পাসের ভিতরেই পুকুরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মৃত্যু কীভাবে তা ময়নাতদন্তের পর স্পষ্ট হবে। আর সেখানেই নিরাপত্তা নিয়ে আরও একদফা প্রশ্ন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে এইট-বি বাসস্ট্যান্ড থেকে যাদবপুর থানা পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করা হয়। টিএমসিপি (TMCP) রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, আমরা গোটা বিষয়টি রাজ্যপালকে (Governor) জানাব এবং তাঁর কাছে জানতে চাইব যাদবপুরে যা হচ্ছে তাতে তাঁর মতামত কী! প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল যুব সভাপতি সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য ছাত্র নেতৃত্ব। তাঁরা সহ উপাচার্যের ঘরে গিয়ে ডেপুটেশন (deputation) দেন।

একইভাবে গোটা ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় তৃণমূলের তরফেও। তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি জানান, যেকোনও মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। যাদবপুরের ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। খারাপ ঘটনা।কেন হয়েছে কীভাবে হয়েছে সেটা পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করছেন। এখন যে বা যারা কোনও যায়গার কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করে এবার তাঁরা বলুন সেখানে কেন সর্বত্র সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে না? সিসি ক্যামেরা বসাতে গেলে মানছি না মানব না বলা হয়। আর কোনও কোনও যায়গায় সিসি ক্যামেরা হলেই বিপ্লবীদের গায়ে লেগে যায়। এটা হতে পারে না। এই মুহূর্তে মৃত্যু নিয়ে মন্তব্য করব না কারণ এটার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। এই মেয়েটির মৃত্যুতে এবার রাত জাগা হবে না? যারা সিসি ক্যামেরা বসতে দেব না বলে লাফালাফি করেন তা হুজ্জুতি করতে যান তাঁদের তো এবার কৈফিয়ত দিতে হবে।

ঘটনায় তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়, কাদের স্বার্থে সিসিটিভি বসানো যাচ্ছে না, তা যাচাই হওয়া দরকার। কেন আদালতের নির্দেশের পরেও যাদবপুরের সমস্ত জায়গায় সিসিটিভি বসানো যায়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। গোটা ঘটনার নিন্দা করেছে ওয়েবকুপাও।

আরও পড়ুন: এত দেরি! দুবছর ধরে ‘জ্বলন্ত’ মনিপুরে মোদির সফরে কটাক্ষ তৃণমূলের

তবে শুক্রবার ফের এক অরাজক অবস্থার শিকার হয় যাদবপুর। কোনও উদ্দেশ্য ছাড়া, শুধুমাত্র রাজনীতি করতে ৪ নম্বর গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে এবিভিপি (ABVP) সমর্থকরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গেট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু তাতেও তাদের শান্ত করা যায়নি। নির্লজ্জের মতো গেট বেয়ে উঠে পড়ে এবিভিপি কর্মী সমর্থকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের উপরে উঠেই দলীয় পতাকা আটকে দেয় এবিভিপির কর্মী সমর্থকরা। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, ক্যাম্পাসে গুন্ডামির বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হবে।

–

–

–

–


