কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা প্রতিহিংসা রাজনীতি করছে। তাই ভার্চুয়াল শুনানিতে নিজের সপক্ষে সরব হলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একদিকে নিজেকে ‘অসহায়’ বলে দাবি করলেন। অন্যদিকে দাবি করেন, তাঁর সামাজিক সম্মান বাঁচানো আদালতের কর্তব্য। তবে এদিন আলিপুর বিশেষ আদালতে এসএসসি গ্রুপ-সি (SSC Group-C) সিবিআইয়ের মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ (Partha Chatterjee) ২৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়।

শুক্রবারও আলিপুরে বিশেষ সিবিআই আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে হাসপাতাল থেকে কালো চশমা পরে কেন্দ্রীয় এজেন্সির দিকে আঙুল তুলে পার্থ বলেন, তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। তাঁকে রেহাই দেওয়া হোক। নিজেকে বাঁচাতে আদালতে পার্থ বলেন, আমি ডক্টরেট। আমি এখানে সবাইকে শিখিয়ে দিতে পারি। এভাবে চললে আগামী দিনে বিচারব্যবস্থার উপর ভরসা থাকবে না। আমায় মামলা থেকে ডিসচার্জ ও মুক্ত করুন। করজোড়ে বলছি, আমায় রেহাই দিন।

বিচারক জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘রিশাফল’ করার অভিযোগ রয়েছে। পার্থর আইনজীবীর দাবি, যাঁকে তিনি সরিয়েছিলেন, তিনি নিজেও মামলার অভিযুক্ত। সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, তদন্তে একজনের সঙ্গে অন্যজনের যোগসূত্র মিলেছে। ষড়যন্ত্রের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এদিন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে জেল থেকে শান্তিপ্রসাদ, কল্যাণময়, সুবীরেশ-সহ ৬ জন অভিযুক্ত দাবি করেন, তাঁরা নির্দোষ। পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেও অনেক কিছু বলতে চান। বিচারক পার্থকে প্রশ্ন করেন, আপনি দোষী না নির্দোষ বলুন। এত কথা বলা যায় না।

আর সেখানেই পার্থ দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি প্রতিহিংসা নিতে রাজ্যে নেমেছে। এঁরা চার জন আগেই ছিলেন। শান্তিপ্রসাদকে যোগেশচন্দ্র কলেজ থেকে আমরা গ্রহণ করেছিলাম, এসএসসি গ্রহণ করেছিল। কোনও অভিযোগ থাকলে এসএসসি বিদায় দিত। আর আমি শপথ নিয়ে মন্ত্রী হয়েছি। সংস্কৃতিগত ভাবে আমার সম্মান আছে। সামাজিক সম্মান আছে। আমাকে বাঁচানোর দায়িত্ব আদালতের। শুধু এই ভাবে দোষী সাব্যস্ত হব, তা হতে পারে না।

আরও পড়ুন: নজিরবিহীন আচরণ অভয়ার মায়ের: সিবিআই আধিকারিককেই বললেন ‘কালপ্রিট’!

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিচারক পর্যবেক্ষণ, সাক্ষী হবে, তখন বলবেন। কিন্তু তাতে দমে না গিয়ে পার্থ বলেন, সাক্ষীর দরকার নেই। আমাকে বলতে দিন। সাড়ে তিন বছর ধরে বন্দি। আমি মন্ত্রী, অন্যরা কর্মচারী ছিলেন। তাঁরা চাকুরে চাটুকারি সংস্থায় যাঁরা কাজ করেন। বোর্ডের নির্দেশে পুরোটাই পরিচালিত হয়। এসএসএসি-র এক জন লোকও স্থায়ী চাকুরে নন। যে মহিলার নাম তোলা হয়েছে, তিনি অস্থায়ী হয়েও ডব্লিউবিসিএস-এর থেকে বেশি মাইনে নিয়েছেন। কিচ্ছু করতে পারিনি। ৫২টি বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল— কত তৈরি করেছি। শুক্রবার গ্রুপ-সি মামলা চার্জ গঠনের পরে সোমবার নবম-দশম শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জ গঠন হতে পারে। সেদিনও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেন বিচারক।

–

–

–

–


