রঙ, তুলির টান আর সুরে-তালে মিলে যেন প্রতিবাদের ভাষা। ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে বিএনসিসিআইয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘পুজোর মেলা’-য় এ বার নজর কাড়ল পটচিত্রে নির্ভয়া কাণ্ডের উপস্থাপনা। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার পটচিত্র গ্রাম থেকে আসা শিল্পী জবা চিত্রকর তাঁর স্টলে এঁকেছেন দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের করুণ কাহিনি। আর সেই ছবির বর্ণনা গানে গানে শুনিয়ে শিহরিত করলেন দর্শকদের।

জবা জানান, এর আগেও সমসাময়িক নানা ঘটনা নিয়ে তিনি পটচিত্র এঁকেছেন। নির্ভয়াকাণ্ডও সেই ধারারই অংশ। স্বামী মন্টু চিত্রকর লিখেছেন গান, আর জবা নিজেই আঁকায় ও সুরে তুলে ধরেছেন সেই নৃশংসতা। তাঁর কণ্ঠে ভেসে আসে — “শোনো শোনো সর্বজন, শোনো দিয়া মন… মেয়েদের ওপর অত্যাচার চলছে এখনও… এই অপমান সইতে পারছি না।” দর্শকদের অনেকে জানান, ছবির দিকে তাকালে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিল।

শুধু নির্ভয়াই নয়, পটচিত্রে ধরা পড়েছে মাছের বিয়ে, রামায়ণ, বৃক্ষরোপণ, চণ্ডীমঙ্গল, করোনা সংক্রমণ, সুনামি, এমনকি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হামলার মতো নানা ঘটনা। তবে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তুলেছে নির্ভয়াকে কেন্দ্র করে আঁকা ছবিগুলি।

জবা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়েদের এগিয়ে দিয়েছেন, শিল্পীদের কথাও ভেবেছেন। তাঁর জন্যই আজ আমরা বিভিন্ন মেলায় নিজেদের শিল্প তুলে ধরতে পারছি।”

পিংলার পটচিত্র গ্রামে এখনো ১৬০টিরও বেশি পরিবার এই শিল্পে যুক্ত। তাঁদের হাতে তৈরি ছবি ও সামগ্রী দেশ-বিদেশে সমাদৃত। জিআই ট্যাগ পাওয়া এই শিল্প পৌঁছে গিয়েছে প্যারিস, লন্ডনেও। পটচিত্র আঁকা হয় আর্টপেপার, ব্রাউনপেপারের পাশাপাশি শাড়ি, ওড়না, পাঞ্জাবি, কুর্তি থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর জিনিসেও।

আজ রবিবার ‘পুজোর মেলা’-র শেষ দিন। তবে তার আগে জবার স্টলে নির্ভয়া কাণ্ডের ছবিতে ভিড় জমেছে দর্শকদের। ছবি আর গানে প্রতিবাদের এমন এক অভিনব রূপ দেখে আবেগাপ্লুত অনেকেই।

আরও পড়ুন – কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন রীতা দাসকে ক্লিনচিট হাই কোর্টের

_

_

_
_