খোঁচাতে গিয়ে নিজেই ষড়বাণে বিদ্ধ রানা! প্রশ্ন ধরে ধুয়ে দিলেন কুণাল

Date:

Share post:

সাংবাদিক তথা তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে (Kunal Ghosh) খোঁচাতে গিয়ে ষড়বাণে বিদ্ধ হলেন প্রয়োজক রানা সরকার (Rana Sarkar)। কোনও নির্দেশ নায়কের বিরুদ্ধে নন, সব বাংলা ছবি যাবে সমান হল পায়, তার জন্য সাওয়াল করছেন- এই কথা আগেই স্পষ্ট করেছেন কুণাল।

কিন্তু হঠাৎ করে কেন দেবের হয়ে গলা ফাটাতে শুরু করেছেন রানা সরকার। কারণ কী? রানার কোনও ছবি তো আসছে না পুজোয়। তাহলে, এই হাওয়ায় গা ভাসিয়ে কী দশে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ পাওয়ায় ধুমকেতু-র প্রচার করতে চাইছেন রানা? তবে, কুণাল ঘোষ কেন বাংলা ছবি নিয়ে কথা বলেছেন, তিনি কি দেব বিরোধী- স্যোশাল মিডিয়ায় এই সব প্রশ্ন তুলে ষড়বাণে বিদ্ধ হলেন প্রযোজন। তাঁর প্রশ্ন ধরে উত্তর দেন কুণাল। তিনি লেখেন, “রানা সরকার শুনছেন? আপনার সবকটি প্রশ্নের জবাব।“

1) রানা সরকার- দেব বিরোধী কেন কুনাল ঘোষ ?
কুণাল ঘোষ- কুণাল ঘোষ নায়ক দেবের বিরোধী নয়। টেক্কার আগের ইন্টারভিউটা মনে আছে? কিন্তু যে বা যারা এই সরকারকে ফেলার প্রচার করছে, প্রতিবাদের নামে কুৎসা করছে, তাদের কয়েকজনকে নিয়ে 2026-এর আগে ছবি করা, সেটাও কি ইঙ্গিতবাহী? ওওও রানাবাবু, যে নায়িকা বাংলায় সন্তানের জন্ম দিতে লজ্জা পান, তাকে নিয়ে ছবির জন্ম দিয়ে কী বার্তা দিচ্ছেন? যে মিঠুনদা সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার কুৎসা করছে, তাকে নিয়ে আদিখ্যেতা? কীসের ইঙ্গিত? আমি দেবকে পছন্দ করি কি না, দেব বুকে হাত রেখে বলুক। ওসব পর্ব আপনি জানেন না হয়ত। আমি ব্যক্তিগত বিষয় লিখতে চাই না।

2) রানা সরকার- রঘু ডাকাতের পেছনে লাগছে কেন কুনাল ঘোষ ?
কুণাল ঘোষ- আমি ধূমকেতুর লাগাতার প্রচার দিয়েছি আমি জড়িত থাকা সব কটা মিডিয়ায়। আমি কেন রঘু ডাকাতের বিরোধী হবো? ‘বিনোদিনী’ নিয়ে আমি কতটা ইমোশনালি ইনভলবড ছিলাম, রুক্মিনীকে জিজ্ঞেস করে নেবেন। ওওওও রানাবাবু, একটা কথা আছে জানেন তো, পড়ল কথা সবার মাঝে, যার কথা তার গায়ে বাজে। আপনার গায়ে বাজল, এবং আপনি লাফাচ্ছেন। ছেলেমানুষ। চাঁদ টাইপের। দেখতে ভালো, কিন্তু অন্যের আলোয় আলোকিত। আমি রঘু ডাকাতেরও সমর্থক, কারণ আমি বাংলা ছবির ভক্ত।

3) রানা সরকার- বাংলা সিনেমা নিয়ে এখন এত কথা কেন বলেন কুনাল ঘোষ ?
কুণাল ঘোষ- বাংলা সিনেমা নিয়ে কুণাল ঘোষ কথা বলে কেন? বেশ করে। কুণাল ঘোষ কেউ না, তা আপনি গুরুত্ব দেন কেন? কুণাল ঘোষ কথা বলে, তার কারণ, ক) আমি বাংলা ছবির দর্শক। খ) আমি একটি টেলিফিল্ম পরিচালনা করেছিলাম 2004এ, আনন্দবাজার পত্রিকা যেটিকে সপ্তাহের সেরা বাছাই বলে প্রকাশ করেছিল। গ) 2012 সালে আমি পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি প্রযোজনা করেছিলাম, লাইন প্রোডিউসার ছিল রুদ্রনীলের কোম্পানি। অভিনয় তালিকা- ব্রাত্য, রাহুল, শাশ্বত, লকেট, পরম, পরাণবাবু এবং অতিথি শিল্পী মিঠুনদা। ঘ) আমি ইমপার সদস্য ছিলাম। ঙ) আমি সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলাম। চ) আমার যোগাযোগের মিডিয়াগুলিতে আমি বাংলা নাটক ও সিনেমার সাধ্যমত প্রচার করি। ছ) আমার লেখা উপন্যাস থেকেও একটি ওটিটির কাজ হচ্ছে।

4) রানা সরকার- কুনাল ঘোষের পেছনে টলিউডের কোন প্রোডাকশন হাউস ?
কুণাল ঘোষ- আমার পেছনে কেন প্রোডাকসন হাউস থাকবে? যখন টেক্কা বা খাদানের প্রশংসা করছিলাম, তখন তাহলে কারা ছিল? যখন কোনো সিনেমা, নাটককে দর্শকের কাছে তুলে ধরি, কে থাকে?? আমি আমার ভালোলাগা থেকে করি। কেউ কারুর কাজে সহযোগিতা চাইলে, ভালো লাগলে করি। গল্প, উপন্যাস, সিনেমা, থিয়েটার আমার ভালো লাগে। একটা বিষয় আপনার কথা থেকে পরিষ্কার, কোথাও আপনাদের প্রোডাকসনের প্রশংসা দেখলে বুঝতে হবে পেছনে আপনারাই আছেন। আপনারাই সাজিয়ে করান। আপনার মনোভাবেই স্পষ্ট।

5) রানা সরকার- ২০২৬ বিধানসভা ভোটের আগে কুনাল ঘোষের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিষয়ে কথা বলা কি কোনো দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক স্ট্রাটেজি ?
কুণাল ঘোষ- 2026-এর আগে কথা বলব কেন, অনেকদিন ধরে বলি। সিনেমা নিয়ে বলি, লিখি। অ্যাকাডেমি, গিরীশে নাটক দেখি। কাল কা যোগীরা অনেকেই এসব বুঝবে না। কিছু টাকা থাকা আর দুজন হিরোর সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেই বাংলা সিনেমার দাদাগিরির অধিকার পাওয়া যায় না। আর যদি 2026 ধরি আপনার কথায়, তাহলে টাটকা টাটকা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসাকারীদের নিয়ে ভোটের মুখে নাচানাচি কীসের ইঙ্গিত?

6) রানা সরকার- ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির লোক হিসেবে না, একজন সাধারণ রাজনৈতিক সচেতন বাঙালি হিসেবে আমার এই প্রশ্ন
কুণাল ঘোষ- আসল কথায় আসি। পুজোয় চারটে সিনেমাই প্রথম সপ্তাহে সমান সুযোগ পাক। তারপর দর্শকের সাড়া অনুযায়ী হল মালিক সিদ্ধান্ত নিক। এই চুক্তির কথা বললেই আপনি লাফাচ্ছেন কেন?

কুণালের (Kunal Ghosh) এই পোস্টের পরে রানা আবার নিজের স্যোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে লিখেছিলেন, তৃণমূল নেতা জবাব দিলে, যেন কেউ তাঁকে জানান, কারণ তিনি কুণালকে ফলো করেন না। সেই পোস্টেরও জবাব দেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল। লেখেন,
“রানা সরকার এখন লিখেছেন, কুণাল ঘোষের পোস্ট ফলো করি না। উনি উত্তর দিলে কেউ জানাবেন। তা, বাবুসোনা, আমার সকালের পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে যখন লিখেছিলেন, সেটা কে পাঠিয়েছিল? তার কাছ থেকেই না চেয়ে ফেস বুকে লেখাটা ভারি মজাদার। আমিও আপনাকে ফলো করি না। কমন চেনাশোনারাই স্ক্রিনশট দেয়। তা আপনি তো আমার মত সাধারণ নন। আমি তো ‘কে কুণাল ঘোষ?’ আপনার মত গ্ল্যামারজগতের তারকার ফেস বুক ফলোয়ার এখনও এক লাখ ছাড়ায়নি দেখলাম। কী অবস্থা! কায়দা মারা পোস্ট করার আগে ওটা একটু বাড়ান।“

spot_img

Related articles

রেকর্ড তৃণমূলের! একদিনে ১০০ বিজয়া সমিলনী!

একদিকে উত্তরের বন্যা ও দুর্যোগবিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ বিলি। অন্যদিকে, রাজ্যজুড়ে ব্লকে-ব্লকে বিজয়া সম্মিলনী কর্মসূচি পালন। ৫ অক্টোবর থেকে...

উত্তরে দুর্যোগ, প্রশাসনের কাজের প্রশংসায় মুখ্যমন্ত্রী

উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়ে সুপারহিরোর ভূমিকা নিয়েছে প্রশাসন। পুলিশ থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন উদ্ধারকার্যে। মুখ্যমন্ত্রীর পরদিনই ছুটে...

বর্ধমান স্টেশনে ফের পদপিষ্টের ঘটনা, আহত ৭ 

বর্ধমান স্টেশন ফের সাক্ষী রইল পদপিষ্টের মর্মান্তিক ঘটনার। রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ স্টেশনের ৪ ও ৫ নম্বর...

আলিপুরদুয়ারে নিজে হাতে ত্রাণ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী: সংবর্ধিত সাহসীরা

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে রবিবার ফের পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। একদিকে পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশাসনিক আধিকারিকদের...