বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম ভুলিয়ে দিচ্ছে ‘দিল্লি’: সুরুচি সংঘের পুজো উদ্বোধনে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর

Date:

Share post:

দুর্গোৎসবের উদ্বোধনে অনুশীলন সমিতির থিমে সুরুচি সংঘে পরিবেশিত হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় রচিত ও সুরারোপিত থিম সং। বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের থিমের সামনে এসে ফের একবার ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার অবদান নিয়ে সরব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে দিল্লির বিজেপি সরকার যেভাবে বাংলার সেই ইতিহাসকেই মুছে ফেলতে চাইছে, তা নিয়ে সোচ্চার হন। ধর্মের নামে বাংলায় বিভ্রান্তি ছড়ানো নিয়ে পুজোর উদ্বোধনে বিজেপির রাজনীতিকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সুরুচি সংঘের (Suruchi Sangha) এবারের থিম অনুশীলন সমিতি। বৃহস্পতিবার সেই পুজো উদ্বোধনে বাংলার বিপ্লবীদের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে বাঙালির দূরদৃষ্টিকে স্মরণ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলা না থাকলে স্বাধীনতা আন্দোলন হত না। লাখো কণ্ঠে, উদ্দীপ্ত কণ্ঠে বলব। বাংলা না থাকলে নারী শিক্ষা, নবজাগরণ হত না। মহিলাদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতেও বাংলার মনীষীদের অবদান। কথায় কথায় একজন বলছিলেন কিছুদিন আগে, অবিভক্ত ভারতের রাজধানী ছিল কলকাতা। সেই রাজধানী কেন দিল্লিতে তুলে নিয়ে গেল? কারণ বাংলার বুদ্ধির সঙ্গে পারছিল না।

দুর্গোৎসবে সুরুচি সংঘ সেই বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামকে তুলে ধরার জন্যই তিনি নিজে তার জন্য থিমসং রচনা ও সুর দিয়েছেন। এদিন সুরুচির ভাবনাকে তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, যখনই বলল সুরুচি সংঘের থিম অনুশীলন সমিতি – নামটা অনুশীলন ছিল কারণ অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে তাঁরা স্বাধীনতা সংগ্রামকে তৈরি করেছিলেন। স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন। বৃহস্পতিবার পুজোর উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, স্বরূপ বিশ্বাস। ২১ সেপ্টেম্বর পুজোর থিমসং উদ্বোধন করা হয়েছিল সুরুচি সংঘের।

আর এই প্রসঙ্গেই বাংলার ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার দিল্লির বিজেপি সরকারের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর (Mamata Banerjee) দাবি, নেতাজী করেছিলেন আইএনএ (INA), প্ল্যানিং কমিশন, আজাদ হিন্দ ফৌজ। এই দিল্লির সরকার তুলে দিয়েছে। এদের কোনও বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন: সমালোচনা সহ্য করেও কাজ, বাহিনীতে আরও বেশি মহিলা পুলিশ: আলিপুর বডিগার্ড লাইনে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

বিজেপি নিজের রাজ্যগুলিতে বাংলা ও বাঙালির অস্মিতাকে যেভাবে অপমান ও বাঙালিদের হেনস্থা করছে, তা নিয়ে সুরুচি সংঘ থেকেও সরব মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট করে দেন, বাংলাকে ভালোবাসি। এটা আমার ধর্ম, কর্ম, মাতৃভূমি, পিতৃভূমি। আর বাংলা ভারতবর্ষকে পথ দেখাবে এটা আমি বিশ্বাস করি। সুভাষচন্দ্র বোসের মৃত্যুদিন আজও জানি না। কোন চক্রান্তের শিকার। বাংলা বললেই অত্য়াচার করবে, কেন? আমাদের এখানে সব ভাষাভাষি আছে। আমরা প্রত্যেককে ভালোবাসি। সব ভাষাই আমাদের ভাষা। সব ধর্মকে ভালোবাসি। কোথা থেকে ধর্মবানরা চলে এসেছে। তারা বলবে – এটা ধর্ম , ওটা ধর্ম। ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করে মাথা গুলিয়ে দেয়। মনে রাখবেন, বাংলা কোনওদিন মাথা নত করেনি করবে না।

বাংলার মানুষই যে একমাত্র তাঁর শ্রদ্ধার পাত্র। সুরুচি সংঘের অনুশীলন সমিতি থিমের সামনে তা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলব, মাথা নত করব, হ্যাঁ – মানুষের কাছে। ‘আমার মাথানত করে দাও হে তোমার চরণ ধুলার পরে’। এই কথাটি সমর্পণ করলাম আমাদের শহিদদের উদ্দেশ্যে।

spot_img

Related articles

তৃণমূল কেন বারবার ক্ষমতায়? আপনাদেরই লোকজন কী বলছেন? শুনুন কমরেড

অভিজিৎ ঘোষ দুটি ঘটনা। বাংলার মানুষ কেন মাথায় করে রেখেছেন মা-মাটি-মানুষের সরকারকে (TMC Govt), তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে...

এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারত-পাক, খেলতে পারবেন সূর্যকুমার যাদব?

এশিয়া কাপের ( Asia Cup) সুপার ফোরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১১ রানে জিতে ফাইনালে পৌঁছে গেল পাকিস্তান।আগেই ফাইনালের স্থান...

বৃষ্টি মাথায় মণ্ডপ দর্শনে উৎসব প্রিয় বাঙালি 

পুজো চলবে, চলবে বৃষ্টিও। দ্বিতীয়টি কোনভাবেই প্রথমটিকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। বৃহস্পতির বৃষ্টি বিঘ্নিত সন্ধ্যায় উৎসবমুখী কলকাতার আমেজে...

পুজোয় পুরো শহরটাই আমার পরিবার, বিশ্ব বাংলার সম্মান রক্ষাটা দায়িত্ব

দেবাশিস দত্ত, অফিসার ইন চার্জ, মানিকতলা থানা "মা আসছেন, তাই আবার নাহয় একসাথে একযোগে নতুন করে বাঁচি আর একবার.....