সৈকত ও রুশ বধূর পুত্রকে খুঁজতে কূটনৈতিক পদক্ষেপের উপরেই ভরসা সুপ্রিম কোর্টের

Date:

Share post:

সৈকত বসুর রুশ (Russia) স্ত্রী ভিক্টোরিয়া ঝিগালিনার মামলায় এবার কূটনৈতিক পদক্ষেপের উপরেই ভরসা রাখল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসু ও ভিক্টোরিয়া ঝিগালিনার পুত্র স্টাভ্যো বসুকে দেশে ফেরানোর জন্য কূটনৈতিক পদক্ষেপের উপরই আস্থা বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চের।

এখনও নিখোঁজ রুশ বধূ ও তাঁর শিশু সন্তান। রুশ প্রশাসন মস্কোয় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের কাছে জানিয়েছিল, তারা জানে না শিশু ও তাঁর মা ভিক্টোরিয়া বসু কোথায়। এদিকে, দিল্লি পুলিশ ভিক্টোরিয়া বসুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে শিশু সন্তান অপহরণের অভিযোগ আনা হয়েছে৷

চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসু কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন ছিলেন চিনে। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় রাশিয়ান নাগরিক ভিক্টোরিয়া জিগালিনার। তাঁদের সম্পর্ক প্ৰেম থেকে বিবাহে পরিণতি পায়। বিয়ের পরে দম্পতি তাঁদের একমাত্র সান্তনকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। চন্দননগরে আসার পর থেকেই ফোর্ট উইলিয়ামে যাওয়ার জন্য চাপ দিতেন থাকেন স্ত্রী। কিন্তু সৈকতের বাবা প্রাক্তন নৌ সেনার আধিকারিক সমীর বসু  সেই প্রস্তাবে সায় দেননি। এরপর ভিক্টোরিয়া সন্তানকে শুধুমাত্র নিজের কাছে রাখার আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। এই মামলা চলাকালীনই বেপাত্তা হয়ে যান ভিক্টোরিয়া জিগালিনার। সুপ্রিম কোর্টের কাছে নিজের সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আবেদন করেন সৈকত বসু। শেষবার ৪ জুলাই রাশিয়ান নাগরিককে দিল্লির রুশ দূতাবাসে দেখা গিয়েছিল। এরইমধ্যে বসু পরিবার জানতে পারেন ভিক্টোরিয়ার বাবা ছিলেন রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা ‘এফএসবি’-র প্রাক্তন আধিকারিক। এরপরই রাশিয়ান গুপ্তচর বিষয়টা প্রকাশ্যে আসে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ভিক্টোরিয়ার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে অবিলম্বে ভিক্টোরিয়াকে শিশু-সহ খুঁজে বের করা নির্দেশ দেওয়া হয় দিল্লি পুলিশকে। শিশুটিকে খুঁজে পেলে তুলে দিতে হবে বাবা সৈকত বসুর হাতে।

লুক আউট নোটিশের পরেও অধরা চন্দননগরে রুশ বধূ ভিক্টোরিয়া বসু (Victoria Basu)। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসিত হয় দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)।  শুনানিতে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। ভিক্টোরিয়া রুশ গুপ্তচর বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, অবিলম্বে মস্কোর দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভিক্টোরিয়ার শিশুপুত্রকে ফেরাতে হবে।

এদিন শুনানিতে কূটনৈতিক পদক্ষেপের উপরেই ভরসা রাখল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে মামলার শুনানি চলাকালীন দুই বিচারপতি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সৈকত বসুর শিশু সন্তানকে দেশে ফেরানোর জন্য লাগাতার চেষ্টা করতে হবে দিল্লি পুলিশ এবং বিদেশ মন্ত্রককে। পুজোর ছুটির পরে হবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

সেই নির্দেশের পরে রুশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মস্কোয় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের তারা জানায়, শিশু ও তাঁর মা ভিক্টোরিয়া বসু কোথায় তারা জানে না।

বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ভারতের বিদেশ মন্ত্রক দিল্লির রুশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডিপ্ল্যোম্যাটিক চ্যানেল কাজে লাগিয়ে শিশুটিকে দেশে ফেরত এনে তাঁর বাবার হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে৷ একইসঙ্গে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাট্টিকে সুপ্রিম নির্দেশ, তিনি নিজে যেন মস্কোয় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলে ডিপ্ল্যোম্যাটিক চ্যানেল কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন৷ এর আগেই ইন্টারপোলের তরফে ভিক্টোরিয়া বসুর বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে ব্লু কর্নার নোটিশ।

spot_img

Related articles

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সুপার ওভারে জয়, ফাইনালের আগে গম্ভীরের চিন্তা বাড়ালেন বোলাররা

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ নিতান্তই নিয়মরক্ষার। ভারত আগেই ফাইনালে চলে গিয়েছে। শ্রীলঙ্কার আবার সেই সম্ভাবনা নেই। কিন্তু রবিবার পাকিস্তানের...

লাদাখের কণ্ঠরোধে বল প্রয়োগ: সোনমকে পাঠানো হল যোধপুর জেলে, শহরে বন্ধ ইন্টারনেট

আন্দোলনের অন্যতম চালক পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুকে (Sonam Wangchuk) গ্রেফতার করলেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়বে, আন্দাজ করেছিল অমিত শাহের (Amit...

শাহর বিরুদ্ধে মূর্তি ভাঙার অভিযোগকারী, তারই পুজোর উদ্বোধনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী!

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। দাবি করেছিলেন, অমিত শাহর প্ররোচনায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছিল বিজেপির গুণ্ডাবাহিনী। শুক্রবার কলকাতায়...

কলকাতা থেকে জেলায় পুজো দেখতে বেরিয়ে হয়রান! এক App-এই সমাধান রাজ্য পুলিশের

কখনও পুজোর প্যান্ডেল হপিংয়ে বেরিয়ে খুঁজে না পাওয়া। আবার কখনও যানজটে আটকে যাওয়া। কলকাতা শহর থেকে জেলা শহরে...