সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

অন্ধকার কাটিয়ে আলোর উদযাপনে তৈরি বাঙালি। হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন, তারপরই দীপাবলির আলোয় উৎসবের মেজাজে ফের মেতে উঠবে বাংলা। ইতিমধ্যেই পটুয়াপাড়া থেকে মণ্ডপে পৌঁছে গিয়েছে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ‘ফাটাকেষ্ট’র কালীপুজোর প্রতিমা। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সে দৃশ্য। কিন্তু নেটমধ্যমে গুঞ্জন, মায়ের মুখের আদলে না কী বদল। সত্যিই কী তাই?

প্রায় ৭০ বছর পুরোনো উত্তর কলকাতার এই কালীপুজো। জাঁকজমকপূর্ণ এই পুজো বরাবরই দর্শকের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সাধারণ মানুষের ভিড়ের পাশাপাশি উত্তমকুমার থেকে অমিতাভ বচ্চন, বাপ্পি লাহিড়ী থেকে লতা মঙ্গেস্করের মতো তারকা-যোগ ছিল অন্যতম আকর্ষণ। সুবিশাল দেবীপ্রতিমা এখানে গাঢ় নীলবর্ণা, পটল চেরা চোখ, আর মায়াবী মুখ। ১০ অক্টোবর মাতৃমূর্তি মণ্ডপে আসার পর থেকেই নেট মাধ্যমে শুরু হয়েছে গুঞ্জন, রে রে রব! বদলে গিয়েছে ফাটাকেষ্টর কালীপুজোর মাতৃমূর্তি।

পুজো আয়োজক প্রবন্ধ রায় (ফান্টা) ‘বিশ্ববাংলা সংবাদ’-কে জানান “৬৮ বছর পর এই প্রথম প্রতিমাশিল্পীর পরিবর্তন হয়েছে। অতীতে কালীপদ পাল, পরবর্তীতে তাঁর পুত্র মাধব পাল এবং মাধব পালের পুত্র জগা পাল এই কালীপুজোর মাতৃমূর্তি তৈরি করতেন। কিন্তু এই বছর প্রতিমা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় অন্যতম বিখ্যাত মৃৎশিল্পী মিন্টু পালকে। যদিও প্রতিমা নির্মাণ শিল্পী পরিবর্তনের কারণ খোলসা করেননি প্রবন্ধ রায়। তিনি জানান “এখানে মা(কালী মূর্তি)কে আমরা ‘মা’ মনে করি, তাকে কেমন দেখতে সেই দিয়ে আমরা বিচার করি না। ‘মা’ ‘মা’-ই হয়, মায়ের রূপের বিচার না করে মানুষ আসুন, তাঁদের মনস্কামনা জানান, মা নিশ্চই তা পূরণ করবেন। মুখের আদলে বদল হয়েছে কি না বলতে পারব না, তবে প্রতিবেশীরা সকলেই মায়ের মূর্তি দেখে ভালো বলেছেন।”

এবারের পুজোয় প্রতিমার দৈর্ঘ্য কিছুটা বেড়েছে, সেই পরিবর্তনই একমাত্র লক্ষণীয় বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, “উৎসবটা আনন্দের, তাই নেতিবাচক প্রচারে গা ভাসিয়ে নয়, ইতিবাচক মন নিয়ে মায়ের কাছে আসুন।” সেই সঙ্গে তিনি পুরোনো কথা ভুলে গিয়ে ফাটাকেষ্ট কালীপুজোর প্রাক্তন মৃৎশিল্পী মাধব পালকেও স্বপরিবারে তাঁদের পুজো দেখতে আসার আহ্বান জানান।

হাতে আর কয়েকটা দিন বাকি, তরা মধ্যে প্রকৃতির খামখেয়ালীপনা- কখনো রোদ তো কখনো বৃষ্টি, তাই জোর কদমে চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। এই পরিবর্তনে খুশি পুজো আয়োজক থেকে স্থানীয়রা। এখন দেখার বিষয় মানুষের আবেগজড়িত, ঐতিহ্যবাহী এই পুজোয় প্রতিমার মুখের আদলের পরিবর্তন দর্শনার্থীদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন- বিমা-ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী

_

_

_
_