রাতভর জেগে অপেক্ষা। অবশেষে সকালে মুক্ত ইজরায়েলের ২০ পণবন্দি। যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী ইজরায়েলের পণবন্দিদের (hostage) একটি অংশকে সোমবার মুক্ত করল হামাস বাহিনী। অন্যদিকে ২৫০ জেলবন্দির মুক্তির অপেক্ষায় ছিল প্যালেস্তাইন (Palestine)। বেলা বাড়তেই তাদের নিয়ে প্যালেস্তাইনের পথে রওনা দেয় বাস। পণবন্দি হস্তান্তরে ফের একবার গাজা (Gaza) শহরে হামাস (Hamas) বাহিনীকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে টহল দিতে দেখা গেল। অন্যদিকে সোমবারই ইজরায়েলের (Israel) সংসদে শান্তি বক্তব্য পেশ মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump)।

মার্কিন হস্তক্ষেপে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধবিরতির (ceasefire) চুক্তি অনেকাংশে মানতে নারাজ হামাস বাহিনী। তা সত্ত্বেও সোমবার শুরু হল পণবন্দি হস্তান্তরের (hand over) প্রক্রিয়া। আগেও একাধিকবার যুদ্ধবিরতিতে পণবন্দি ও জেলবন্দি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া হয়েছে। এবারও একইভাবে তেল আভিভে (Tel Aviv) অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন পণবন্দিদের পরিবার। সোমবার সকালে দুই দফায় ২০ জন পণবন্দিকে রেডক্রসের (Red Cross) হাতে তুলে দেয় হামাস বাহিনী।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর তেল আভিভে হানা দিয়ে ২৫১ পণবন্দিকে গাজায় নিয়ে যায় হামাস বাহিনী। পাল্টা গাজায় এয়ারস্ট্রাইক থেকে সেনা অভ্যুত্থানের পথে যান প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu)। পরবর্তীকালে ৪৭ জন পণবন্দিকে কয়েক দফায় মুক্তি দেয় হামাস। এরই মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৭ পণবন্দির। সোমবারের মুক্তি প্রক্রিয়া শুরুর আগে ইজরায়েলের পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল – যেন মৃত পণবন্দিদের গ্রহণ করতে না হয় তাদের।

পণবন্দিদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে ইজরায়েল থেকে জেলবন্দিদের নিয়ে রওনা দেয় বাস প্যালেস্তাইনের পথে। অন্তত ১৭০০ প্যালেস্তিনীয় ইজরায়েলের জেলে বন্দি। এর মধ্যে অনেকেই ইজরেলীয়দের খুনে অভিযুক্ত। আবার ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের হাতে বন্দি সাধারণ প্যালেস্তিনীয়রাও রয়েছে এর মধ্যে। ইতিমধ্যেই গাজা শহরের বাইরে একটি বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে সরে এসেছে ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (IDF)। তাতে কিছুটা আশ্বস্ত প্যালেস্তিনীয়রা।

আরও পড়ুন: ইসলামাবাদের পর মুরিদকে! শাহবাজের নির্মম দমননীতিতে নিহত ১৩, আহত শতাধিক

যুদ্ধবিরতির চুক্তির পরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার পথে গাজা। ভিন দেশে পালিয়ে যাওয়া প্যালেস্তিনীয়রা ধীরে ধীরে সমুদ্রের পথ ধরে ফিরতে শুরু করেন গাজায়। যদিও তাঁদের দাবি, যে শহর তাঁরা ছেড়ে গিয়েছিলেন, তার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। তবে গাজায় এরপরেও হামাসের প্রভাব কতটা রয়ে গিয়েছে তার প্রমাণ মিলল সোমবার। পণবন্দি হস্তান্তরের প্রক্রিয়ার সময় একের পর এক গাড়িতে বন্দুক উঁচিয়ে হামাস বাহিনীকে দেখা গেল গাজা শহর দাপিয়ে বেড়াতে। কার্যত সেই ছবি ফের একবার প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশের শান্তি পরিস্থিতি।

–

–

–

–