সোমবার গভীররাতে মহারাষ্ট্রের (Maharastra) গড়ছিরৌলিতে ৬০ জন মাওবাদী সদস্যকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন নিহত মাও (Maoist) নেতা কিষেণজির ভাই মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও(সোনু)। আত্মসমর্পণের সময় উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাড়নবিশ। এবছরের সেপ্টেম্বরেই অস্ত্রত্যাগ করার সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন ৭০ বছর বয়সী বেণুগোপাল। তিনি তখন উল্লেখ করেন ‘দলকে বাঁচানোর স্বার্থে সশস্ত্র সংগ্রাম ত্যাগ করার সময় এসেছে’। এর আগে এপ্রিল মাসে বেণুগোপালের তরফ থেকে একটি শান্তি বার্তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে বিতর্কও হয়েছিল। বিভিন্ন সূত্র থেকে আত্মসমর্পণের জল্পনা ধীরে ধীরে জোরালো হচ্ছিল। এরই মধ্যে সোমবার তা সত্য হল।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, তেলেঙ্গানার পেদ্দাপল্লির বাসিন্দা সোনু ওরফে বেণুগোপাল বি.কম. স্নাতক। তিনি পলিটব্যুরো ও সামরিক কমিশনের অফিসিয়াল সদস্য ছিলেন। দলের আদর্শগত প্রধান থাকার পাশাপাশি একজন কমিউনিকেশনে পারদর্শী একজন ব্যক্তি সোনু। জঙ্গলে থেকেও সারা দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতেন তিনি। আরও পড়ুনঃ বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে বিচ্ছিন্ন হাত! কাটা হাত নিয়ে হাসপাতালে যুবক

২০১১ সালের ২৪ নভেম্বরে ঝাড়গ্রামের বুড়িশোলের জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় কিষেণজির। বেণুগোপাল সেই কিষেণজিরই ভাই। ভূপতি, রাজন, বিবেক, অভয়, সোনু আরও অনেক ছদ্মনামে পরিচিত বেণুগোপাল।
১৯৮০-এর দশকে পিপল্স ওয়ার (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি) গ্রুপে যোগ দেন সোনু। ২০১০ সালে সিপিআই (মাওবাদী)-র মুখপাত্র হিসাবে নিযুক্ত হন তিনি। লালগড় অভিযান চলাকালীন কিষেণজির মৃত্যুর পর দলের দায়িত্বে আসেন তিনি। প্রসঙ্গত, এই বছরের শুরুতে নিরাপত্তাবাহিনীর নতুন করে অভিযান শুরু করে। তারপরেই আত্মসমর্পণ করেন বেণুগোপালের স্ত্রী বিমলা চন্দ সিদাম ওরফে তারাক্কা। বিমলা ছিলেন পিএলজিএ-র কমান্ডার এবং দণ্ডকারণ্য জোনাল কমিটির নেত্রী। ঘটনাচক্রে, তার ১০ মাসের মধ্যে বেণুগোপালও আত্মসমর্পণ করলেন।

মাসকয়েক আগেই ছত্তীসগঢ়, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানার বিশাল অঞ্চল জুড়ে মাওবাদীদের নির্মূল করতে লাগাতার অভিযান শুরু করে কেন্দ্র সরকার। যৌথ বাহিনীর টানা অভিযানে সিপিআই (মাওবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক বাসবরাজ এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিবেক-সহ বেশ কয়েক জন নিহত হয়েছেন। আত্মসমর্পণ করেছেন একের পর এক মাওবাদী। তবে ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুরে এখনও বেশ কিছু মাওবাদী রয়েছেন। সোমবারই মাওবাদীদের হাতে খুন হয়েছেন বিজেপি কর্মী সত্যম পুনম। তবে বেণুগোপালের চলে যাওয়াকে সিপিআই (মাওবাদী)-র জন্য একটি বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।

–

–

–

–

–
