বৈষ্ণোদেবী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসের ৫০টি আসনের মধ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের ৪২ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। তারপরও বিজেপির প্রশ্ন, কেন শ্রীমাতা বৈষ্ণোদেবী ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল এক্সিলেন্সের অধীনস্থ কলেজে সিংহভাগ ছাত্রছাত্রীই মুসলিম (Muslim) হবেন? শনিবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সুনীল শর্মার নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়কদের একটি প্রতিনিধিদল এই মর্মে লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার (LG Manoj Sinha) সঙ্গে দেখা করে প্রতিবাদ জানায়। একইসঙ্গে রিয়াসি জেলার এই কলেজের প্রথম ভর্তি তালিকা পর্যালোচনা করে ‘সংশোধনমূলক ব্যবস্থা’ এবং ভর্তির নিয়ম (admission process) পর্যালোচনার দাবিতে একটি স্মারকলিপিও (deputation) জমা দেয়। সুনীল শর্মার (Sunil Sharma) সঙ্গে এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিধায়ক শাম লাল শর্মা, সুরজিৎ সিং স্লাথিয়া, দেবেন্দর কুমার মানিয়াল এবং রণবীর সিং পাঠানিয়া।

বৈষ্ণোদেবী মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস (MBBS) আসন-বণ্টন তালিকায় ৫০টি আসনের মধ্যে ৪২ জন মুসলিম শিক্ষার্থী ভর্তি হন। বাকিদের মধ্যে মাত্র সাতজন হিন্দু এবং একজন শিখ ভর্তি হন। বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের অভিযোগ, একটি মন্দির-অর্থায়িত প্রতিষ্ঠানে কেন হিন্দু (Hindu) প্রতিনিধিত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে না? এবং সম্প্রদায়-ভিত্তিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রচলন করার জন্য এই কলেজকে সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান ঘোষণা করার দাবি জানায়।

বিজেপি প্রতিনিধিদলের যুক্তি, বৈষ্ণোদেবী শ্রাইন বোর্ডের (Vaishno Devi Shrine Board) অনুদানের মাধ্যমে পরিচালিত এই মেডিকেল কলেজ (Medical college) এটি। সেখানে তীর্থযাত্রীদের বিশ্বাস এবং নিষ্ঠার প্রতিফলন ঘটবে, এটাই স্বাভাবিক। সুনীল শর্মা বলেন, বর্তমান নির্বাচন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় এবং তিনি আবেদন করেন যে ভর্তির ক্ষেত্রে দেবতার প্রতি বিশ্বাসী শিক্ষার্থীদের বিবেচনা করা উচিত।

তাঁদের যুক্তি, প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণরূপে ধর্মীয় প্রকৃতির এবং কোটি কোটি ভক্তের ভক্তি, বিশ্বাস এবং আনুগত্যের সাথে যুক্ত। এবং এই আশায় দান করা অর্থ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্প্রসারণের জন্য ব্যবহার করা হবে। কর্মকর্তারা দাবি, ভর্তি সম্পূর্ণরূপে মেধার ভিত্তিতে হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানকে সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়া হয়নি, তাই কোনও ধর্ম-ভিত্তিক সংরক্ষণ প্রয়োগ করা যাবে না।

আরও পড়ুন : বিহার ভোটে ভরাডুবি, জেএসসির সমস্ত ইউনিট ভেঙে নয়া কৌশল প্রশান্ত কিশোরের

বিজেপির আগে যুব রাজপুত সভা, রাষ্ট্রীয় বজরং দল এবং আন্দোলন কল্কির সদস্যরা ইনস্টিটিউটে বিক্ষোভ দেখান। মাত্র সাতজন হিন্দু (Hindu) এবং একজন শিখকে (Sikh) ভর্তি করাকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করে তাঁরা নতুন ভর্তি প্রক্রিয়ার (admission process) উপর জোর দেন। উধমপুরের বিজেপি বিধায়ক আরএস পাঠানিয়া এক্স-এ পোস্ট করেন, শ্রীমাতা বৈষ্ণোদেবী তীর্থযাত্রীদের ভক্তি ও নৈবেদ্য দিয়ে তৈরি প্রতিষ্ঠানগুলিকে মন্দিরের পবিত্র নীতির সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে কাজ করতে হবে। তাই শ্রাইন বোর্ড আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সংশোধন এখন অপরিহার্য। শ্রাইন বোর্ডের চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট গভর্নর সিনহা যদি দ্রুত হস্তক্ষেপ না করেন, তবে তারা তাদের আন্দোলন আরও তীব্র করবেন। এদিকে, লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিজেপি প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করেছেন যে বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন।

–

–

–

–

