ভোটার তালিকায় নকল বা ডুপ্লিকেট নাম চিহ্নিত করতে আরও এক ধাপ এগোল নির্বাচন কমিশন। ভোটার তালিকা সংশোধনে স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতা বাড়াতে বিএলও অ্যাপে চালু হয়েছে ডুপ্লিকেট ইলেকটর ভেরিফিকেশন নামে নতুন ব্যবস্থা। কমিশনের মতে, একই ব্যক্তির নামে একাধিক এপিক কার্ড থাকা গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য গুরুতর সমস্যা তৈরি করে। তাই প্রযুক্তিনির্ভর এই নতুন অপশন যুক্ত হওয়ায় যাচাই আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন ব্যবস্থায় কোনও ভোটারকে ডুপ্লিকেট হিসেবে চিহ্নিত করা হলে বুথ লেভেল অফিসার সরাসরি বাড়িতে গিয়ে তথ্য যাচাই করবেন। ভোটার যদি নিশ্চিত করেন যে তাঁর নামে একাধিক এপিক রয়েছে, তা হলে একটি ঘোষণাপত্র, পুরনো ও বর্তমান ভোটার কার্ডের জেরক্স কপি জমা দিতে হবে। অন্যদিকে, নিশ্চিত না হলে একটি ঘোষণাপত্র এবং শুধুমাত্র বর্তমান কার্ডের জেরক্সই যথেষ্ট।

কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডুপ্লিকেট ভোটার সংক্রান্ত জটিলতা একশো শতাংশ দূর করতেই এই নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রকৃত ভোটারদের অধিকার যেমন সুরক্ষিত থাকবে, তেমনই একই ব্যক্তির নামে একাধিক নাম নথিভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কার্যত কমে যাবে।

এদিকে, রাজ্যে বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর) প্রক্রিয়ার এন্যুমারেশন পর্ব শেষের পথে। ঠিক এই সময়েই নজরদারি বাড়াতে আরও পাঁচজন স্পেশাল রোল অবজারভার নিয়োগ করল নির্বাচন কমিশন। এর আগে ১৩ জন পর্যবেক্ষক নিয়োজিত ছিলেন। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা প্রত্যেকেই কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার আইএএস অফিসার। মেদিনীপুর, প্রেসিডেন্সি, মালদহ, জলপাইগুড়ি ও বর্ধমান—এই পাঁচটি ডিভিশনে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নীরজ কুমার বানসোড়, প্রেসিডেন্সিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কুমার রবি কান্ত সিংহ, মালদহে অর্থ মন্ত্রকের অলোক তিওয়ারি, জলপাইগুড়িতে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পঙ্কজ যাদব এবং বর্ধমানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের কৃষ্ণ কুমার নিরালা দায়িত্ব সামলাবেন।

যোগ্য ভোটার যাতে বাদ না পড়েন, অযোগ্য কেউ যাতে তালিকায় নাম না তুলতে পারেন এবং দাবি-আপত্তি থেকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ—প্রতি ধাপে স্বচ্ছতা বজায় থাকছে কি না, সে দিকেই কড়া নজর রাখবেন পর্যবেক্ষকেরা। সংবিধানের ৩২৪(৬) ধারা অনুযায়ী তাঁরা কমিশনের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন।

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে এসআইআরের অগ্রগতি যাচাই করবেন। তবে স্পষ্ট নির্দেশ—কোনও স্থানীয় কর্মীকে তাঁরা সার্টিফিকেট বা প্রশংসাপত্র দিতে পারবেন না। কারও কাজ বিশেষ ভালো লাগলে প্রস্তাব পাঠাতে হবে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের কাছে। কমিশনের মতে, অতিরিক্ত পর্যবেক্ষক নিয়োগের ফলে এসআইআর প্রক্রিয়ায় নজরদারি আরও মজবুত হবে এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের আগে সম্ভাব্য ত্রুটি বা অনিয়ম কার্যকরভাবে রোধ করা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন- বিজেপির সংস্কৃতি মন্ত্রীর মুখে বঙ্কিমের ভুল নাম! সংসদে একের পর এক তোপ তৃণমূলের

_

_

_
_


