বিজেপি শাসিত ওড়িশা ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বাংলাভাষী মানুষের জন্য। ক্রমশ স্থানীয় মানুষের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল করে দেওয়া হচ্ছে যে যাঁরাই বাংলাভাষায় কথা বলেন তাঁরাই বাংলাদেশি (Bangladeshi)। এবার সেই রোশে মলকানগিরিতে (Malkangiri) গোটা গ্রামে বাংলাভাষীদের ঘরবাড়ি ভেঙে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল। ঘটনার জেরে স্থানীয় দুটি গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ মোহন মাঝি (Mohan Majhi) প্রশাসন এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধের নিদান দিল। যেখানে সমস্যা শুধুই পাশাপাশি দুই গ্রামের মধ্যে, সেখানে ইন্টারনেট বন্ধের (internet ban) বিজ্ঞপ্তিতে প্রশ্ন উঠেছে ওড়িশা (Odisha) প্রশাসনের উদ্দেশ্য নিয়ে।
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বাঙালি বিদ্বেষের সাক্ষী থেকেছে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝি পরিচালিত ওড়িশা। প্রত্যেকবারই বাংলার বৈধ নাগরিকদের পরিচয়পত্র দেখানো সত্ত্বেও বাংলাদেশি বলে মারধর থেকে হেনস্থা ও পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সেই বাঙালিদের বাংলাদেশে পুশ ব্যাকও করেছে। তবে এবার গোটা বাংলাভাষী গ্রামের উপর হামলা আদিবাসী সম্প্রদায়ের। মলকানগিরির রাখালগুদা ও এমভি টোয়েন্টি সিক্স গ্রামের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত রবিবার এক মহিলার মস্তকবিহীন দেহ উদ্ধার ঘিরে। আদিবাসী অধ্যুষিত রাখালগুদা গ্রামের পঞ্চাষোর্ধ্ব এক মহিলা কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তার মস্তকবিহীন দেহ উদ্ধার হলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে রাখালগুদার বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন : গীতাপাঠের মাঠে ‘বাংলাদেশী’ বলে বাঙালিকে মার! গো-বলয়ের রাজনীতিতে সরব তৃণমূল

ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, মহিলার হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে মাথা উদ্ধার করতে হবে। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরেও পুলিশ সেই দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে রাখালগুদার বাসিন্দারা হামলা চালায় এমভি টোয়েন্টি সিক্স গ্রামের উপর। তীর-ধনুক, মশাল, তরোয়াল নিয়ে হামলা চালানো হয়। অন্তত ১৫০ বাড়িতে ভাঙচুর (vandalised) চালানো হয় বলে অভিযোগ। ৫০টি বাড়িতে আগুন (fire) লাগিয়ে দেওয়া হয়। গ্রামছাড়া গোটা গ্রামের বাসিন্দা। সোমবার গোটা দিন তাণ্ডব চলার পরে রাতে পুলিশ প্রশাসন বিজ্ঞপ্তি জারি করে, এলাকায় ২৪ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সময় শুরু হওয়ার পরে কেন এই সিদ্ধান্ত। কেন হামলার আগে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে এত বড় ঘটনা এড়ানো গেল না। তবে কী ঘটনার পরে যাতে পরবর্তীতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা প্রকাশ্যে আসা আটকাতে এই সিদ্ধান্ত, উঠেছে প্রশ্ন।

–

–

–

–

–

–


