আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শহরের বাসিন্দাদের মাথার উপর নিজস্ব ছাদ নিশ্চিত করতে নতুন উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার (West Bengal Govt.)। মাত্র ৬ লক্ষ টাকায় এক কামরার ফ্ল্যাট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৯৮ বর্গফুটের এই ফ্ল্যাটগুলি মূলত অসহায় ও নিম্নআয়ের পরিবারগুলির জন্যই বরাদ্দ করা হবে। নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ফ্ল্যাটগুলি কার্যত জলের দরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রশাসনিক মহলের মতে, শহরে বাড়তে থাকা আবাসন সংকটের মধ্যে এই উদ্যোগ বহু পরিবারকে স্বস্তি দেবে। কোন যোগ্যতায় কারা এই ফ্ল্যাট পাবেন, কী ভাবে আবেদন করতে হবে এবং কবে থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে—এই সমস্ত বিষয় নিয়ে খুব শিগগিরই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে।

জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারিবারিক মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকার কম হতে হবে। চলতি বছরের জুলাই মাসেই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের জন্য ‘নিজন্ন’ ও ‘সুজন্ন’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হিডকোর উদ্যোগে তৈরি এই আবাসন প্রকল্পগুলি ঘিরে শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের কৌতূহল ছিল। নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ মিলবে। আরও পড়ুন: পথশ্রী–রাস্তাশ্রী প্রকল্পে প্লাস্টিক বর্জ্যে রাজ্যজুড়ে হবে রাস্তা

সূত্রের খবর, ‘নিজন্ন’ প্রকল্পে মোট ৪৯০টি এবং ‘সুজন্ন’ প্রকল্পে ৭২০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ‘নিজন্ন’-এর ক্ষেত্রে আবেদন জমা দেওয়ার সময় ৬০ হাজার টাকা দিতে হবে। অন্যদিকে ‘সুজন্ন’-এর ২ বিএইচকে ফ্ল্যাটের আয়তন ৬১৭.৬৩ বর্গফুট। নিউটাউনে এই ধরনের একটি ফ্ল্যাটের দাম ধার্য হয়েছে প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা। এলআইজি গ্রুপের জন্য আবেদনকারীর পারিবারিক মাসিক আয় হতে হবে ২৫ হাজার ১ টাকা থেকে ৬৫ হাজার টাকার মধ্যে।

প্রশাসনিক সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই আবাসন প্রকল্পগুলিতে সরকার কয়েক কোটি টাকা ভরতুকি দিচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষের পক্ষে ফ্ল্যাট কেনা সম্ভব হয়। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনে হিডকোর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হবে এবং লটারির মাধ্যমে যোগ্য আবেদনকারীদের বাছাই করা হবে।

এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগও উঠেছে। রাজ্য সরকারের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ১১ লক্ষ প্রান্তিক মানুষকে বাড়ি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও অনুমোদন মিললেও অর্থ ছাড়েনি কেন্দ্র। তার প্রতিবাদেই রাজ্যের কোষাগার থেকে প্রায় ১২ লক্ষ পরিবারকে বাড়ি তৈরির অনুদান দিয়েছে নবান্ন। সাধারণ মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করতেই রাজ্য এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে প্রশাসনিক মহলের দাবি।

–

–

–

–


