Monday, December 29, 2025

নতুন করে বাঙালিরা আক্রান্ত বিজেপি রাজ্যে: এখনও রাজ্যের বিরোধীরা চুপ, প্রশ্ন তৃণমূলের

Date:

Share post:

বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল বীরভূমের সোনালি খাতুনকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছাড়া দেশে ফেরাতে এতটুকু সহযোগিতা করেনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কিন্তু তারপর পরিস্থিতি যে কে সেই। বাঙালি হেনস্থা ইস্যুকে যেন বন্ধ করতেই চাইছে না কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি। বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের মানুষকে রক্ষায় দলীয় থেকে প্রশাসনিক – সব রকমভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে চুপ রাজ্যের প্রতিটি বিরোধী রাজনৈতিক দল। রাজ্যের মানুষের হেনস্থায় বিজেপি থেকে সিপিআইএম কোনও দলের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। গোটা দেশে নতুন করে ফের বাঙালি হেনস্থা (Bengali harassment) শুরুর ঘটনায় সরব শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

সম্প্রতি ওড়িশা থেকে মহারাষ্ট্র – নতুন করে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক (migrant worker) থেকে ছোট ব্যবসায়ীদের আক্রান্ত হতে হয়েছে কখনও স্থানীয় বিজেপি কর্মী, কখনও প্রশাসনের দ্বারা। সোমবার এই নিয়ে সরব পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম (Samirul Islam)। তিনি দাবি করেন, আমি নিজে দিল্লি সংলগ্ন বাঙালিদের ১৭ টি বস্তি এলাকায় ঘুরেছি। সেখানে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মতো একইভাবে এমন একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যে বাংলায় কথা বললেই হেনস্থা করা হবে। আমি পড়াশোনার সূত্রে যখন দিল্লি আইআইটি-তে ছিলাম তখনও দিল্লিতে এমন দেখিনি। কিন্তু বিজেপির আমলে এমন ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক বোর্ড বিজেপি শাসিত ১২টি রাজ্যের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ করতে না দেওয়ার যে চক্রান্ত হয়েছে, তার বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের হয়েছে। অথচ এরপরেও কেন্দ্রের সরকার ও বিজেপি শাসিত সরকারগুলি এই ঘটনাকে স্বীকারই করতে চাইছে না। সেখানেই সামিরুলের প্রশ্ন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে (federal structure) পরিযায়ী শ্রমিকদের অন্য রাজ্যে গিয়ে কাজ করার অধিকার রয়েছে, সেখানে কেন এভাবে অত্যাচার হবে। সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মামলা হওয়ার পরে এইসব ঘটনা কিছুটা কমেছিল। কিন্তু আবার ওড়িশা (Odisha), অসমের (Assam) মতো রাজ্যে সেই একইভাবে অত্যাচার শুরু হয়েছে।

বিজেপির কেন্দ্রের সরকারের সুরে সুর মিলিয়ে রাজ্যের বিজেপি নেতারাও কেউ এই পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। সাংসদ সামিরুল উদাহরণ তুলে ধরেন দক্ষিণ দিনাজপুরের অসিত সরকার ও গৌতম বর্মণের প্রসঙ্গ। মহারাষ্ট্র পুলিশ তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতারের পরে বিজেপি কর্মী গৌতম দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের। সুকান্ত মুখ ফিরিয়ে নিলে তাঁর পাশে দাঁড়ান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং ঘরে ফিরতে পারেন দুজন। সেখানেই সামিরুলের প্রশ্ন, বিরোধী দলের নেতারা প্রশ্ন তুলছে রাজ্য সরকার কী করছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বোর্ড তৈরি করা থেকে দিল্লিতে নোডাল অফিসার নিয়োগ করে যে কাজ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য করছেন, তা কোনও রাজ্য করতে পারেনি।

আরও পড়ুন : তাড়িয়েছেন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত, পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক

সেখানেই বিরোধী দলগুলিকে পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের তরফ থেকে চেয়ারম্যান সামিরুল পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, এভাবে পরিযায়ী মানুষের উপর অত্যাচার সমগ্র জাতির উপর অত্যাচারের সামিল। সেখানে রাজ্যে গণ সংগঠনগুলির তো রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানানো উচিত ছিল অনেক আগেই। অথচ তৃণমূল ছাড়া কোনও রাজনৈতিকদলকে সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে কেন দেখা গেল না?

spot_img

Related articles

ডিমের দাম ঊর্ধ্বমুখী! মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম দিতে উদ্যোগী হরিণঘাটা 

বাজারে ডিমের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। উৎসবের মরসুমে বেকারি শিল্পে বাড়তি চাহিদা,...

আর সহ্য হচ্ছে না! প্রত্যেক মানুষের অধিকার রক্ষা করতেই হবে: গর্জে উঠলেন মমতা

এসআইআর-এ হয়রান বাংলার মানুষ। গত এক মাসে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বা আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই...

বাংলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র! বাংলাদেশি গ্রেফতারির ভুয়ো খবরে সরব রাজ্য পুলিশ

বাংলাকে বদনাম করার চক্রান্তে বারবার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের তত্ত্ব তুলে ধরেছে বিরোধীরা। যে সীমান্ত রক্ষা করার দায়িত্ব কেন্দ্র সরকারের,...

কমিশনের নির্দেশ মতো কেন নয় বয়স্কদের শুনানি! SIR পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে সি মুরুগন

এসআইআর নিয়ে বঙ্গে মানুষের ভোগান্তির আর শেষ নেই। শুনানির সঠিক ব্যবস্থা না থাকার ফলে বারবার হয়রানির অভিযোগও তুলেছেন...