আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে অসংযত আচরণের জন্য অনুতপ্ত। দলনেত্রীর কাছে চিঠি লিখে ভুল স্বীকার করলেন রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy)। আর তারপরেই তাঁকে ডেকে নিল তৃণমূল (TMC)। বুধবার দিল্লিতে ৬১ নম্বর সাউথ অ্যাভিনিউতে তৃণমূল সাংসদদের বৈঠকে যোগ দিলেন সুখেন্দুশেখর।

আর জি করের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন তৃণমূল সভানেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay) ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। কিন্তু তা সত্ত্বেও দলের বাইরে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। একসময় দলের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের কথাও বলেন তিনি। ছেড়ে দেন তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র সম্পাদকের পদও। তবে, জহর সরকারের মতো রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়েননি তিনি। ফলে ক্রমশ রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েন তিনি।

আরও পড়ুন- ফের বাংলা ভাগের চক্রান্ত! কোচবিহারকে আলাদা করার দাবিতে রেল অবরোধে দুর্ভোগ

এদিকে CBI তদন্তেও দেখা যায় ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা পুলিশ যাকে মূল অভিযুক্ত বলে গ্রেফতার করেছিল, সিবিআইও তাকেই অভিযুক্ত বলে চার্জ গঠন করেছে। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিকে যথাসম্ভব মর্যাদা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে নিজের ভুল বুঝতে পারেন সুখেন্দুশেখর। তিনি যোগাযোগ করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) সঙ্গে। সেখানে সুখেন্দুশেখর নিজের আচরণগত ত্রুটির কথা স্বীকার করেন। কুণাল তাঁকে বলেন, “আপনার মতো বর্ষীয়ান নেতা থেকে এই আচরণ অভিপ্রেত নয়। এটা অত্যন্ত ভুল হয়েছে।” একই সঙ্গে সেই সময়কার বেশ কিছু কথা কুণালকে জানান রাজ্যসভার সাংসদ। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের ভুলের কথা স্বীকার করতে চান তিনি। কুণাল তাঁকে পরামর্শ দেন, সরাসরি দলনেত্রীকে বিষয়টি জানাতে।



এরপরেই প্রথমে whatsapp করে এবং পরে চিঠি লিখে নিজের ভুল স্বীকার করেন সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy)। তিনি জানান, আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে তাঁর কয়েকটি বিষয় বুঝতে ভুল হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে তিনবার সাংসদ করেছেন। তিনি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি সবসময়ই তৃণমূল সভানেত্রীর পাশে ছিলেন, আছেন, থাকবেন। তাঁকে আর একবার সুযোগ দেওয়ার জন্যেও লেখেন তিনি। এরপরেই মঙ্গলবার তৃণমূলের তরফে ডেরেক ও’ব্রায়েন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে সই করতে বলেন তাঁকে। সেটা সই করে দেন সুখেন্দুশেখর। বুধবার তৃণমূল সাংসদদের বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য সুখেন্দুশেখর রায়কে আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে অধিবেশনে দলের সাংসদরা কী রণকৌশল নেবেন- তার সিদ্ধান্ত হয়। সেইমতো এদিন সকালে ৬১ নম্বর সাউথ অ্যাভিনিউ-এ তৃণমূলের বৈঠকে যোগ দেন সুখেন্দুশেখর। যদিও ডেরেক জানান, সুখেন্দুশেখরকে কোনও বৈঠকে ডাকা হয়নি। এ বিষয়ে পরে জানানো হবে।


