যাদবপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বামপন্থীদের কাছে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার আবেদন কুণালের

বামেদের দুর্জয় ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত যাদবপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে(BJP) আক্রমণ শানানোর পাশাপাশি চাঁচাছোলা ভাষায় বামেদের বিরুদ্ধেও সরব হয়ে উঠলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ের লড়াইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বাম সমর্থকদের কাছে আবেদন জানালেন বৃহত্তর স্বার্থে তৃণমূলকে(TMC) ভোট দেওয়ার জন্য। যাদবপুর কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বাম সমর্থকদের কাছে দলের প্রতি তাদের ভালবাসাটা আমি ঋণ হিসেবে চাইছি। কারণ দেশকে বাঁচাতে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে এবার অন্তত জোড়া ফুল চিহ্নে ভোট দিন।’

বুধবার তৃণমূলের জনসভা থেকে বামেদের অতীত স্মরণ করিয়ে দিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকে কখনো দল ধাক্কা খায়। কখনো ব্যক্তি ধাক্কা খায়। কিন্তু মানুষের দরবার থেকে রাজনীতির মানুষরা সরে যান না। যাদবপুরের বিধায়ক ছিলেন শ্রদ্ধেয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। যিনি ২০১১ সালে যাদবপুরে হেরে গিয়ে একবারের জন্য যাদবপুরের মাটিতে পাও রাখলেন না। জিতলে মানুষের কাছে থাকবেন। হারলে থাকবেন না এটা কোনও কথা হতে পারে।’

পাশাপাশি আক্রমণের ধার বাড়িয়ে অতীতের বাম সরকারের কিছু টুকরো ছবি তুলে আনেন কুণাল ঘোষ। বলেন, ‘আজকে আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলেন তার প্রত্যেকটা বীজ আপনাদের আমলে পোতা হয়েছে। দিনের পর দিন অবরোধ, অশান্তি, বনধ, বিশৃঙ্খলা লাল ঝান্ডার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। সেদিন পার্টির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে বলতে হয়েছিল আমি লজ্জিত আমি সিপিএম করি। যে সিপিএম ধর্মঘট ডাকে।’ এরপরই বাম সমর্থকদের কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই লড়াই বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের। এখানে বামপন্থী মানুষরা যদি তাদের ভোট নষ্ট করেন তাহলে সেই সুবিধা ঘুরিয়ে পেয়ে যাবে বিজেপি। বামেদের দর্শনটা অতীত হয়ে গিয়েছে তারা কোনোভাবেই পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের বিকল্প হিসেবে গড়ে তুলতে প্রস্তুত নয়। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে দেবব্রত মজুমদারকে ভোট দিন। যারা অন্তর থেকে সিপিএমকে ভালোবাসেন তাদের আমি প্রণাম জানাচ্ছি। কিন্তু তাদের সেই ভালবাসাটা আমি ঋণ হিসেবে চাইছি। কারণ দেশকে বাঁচাতে এবার অন্তত জোড়া ফুল চিহ্নে ভোট দিন। আপনাদের দল লড়াইটা লড়তে প্রস্তুত নয়, বিচ্ছিন্নভাবে দুজন দুটো ভোট পেলেও উপদ্বীপের মতো জেগে থেকে লড়াইটা জেতা যাবে না।’

আরও পড়ুন:৩ দফা ভোটে ৩০টির বেশি আসন পাবে না, ভুয়ো দাবি করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিজেপি: মমতা

পাশাপাশি, ১৯৮৮ সালে বামেদের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতার অতীত টেনে এনে কুনাল ঘোষ বলেন, ‘বিজেপি আর বামফ্রন্ট হাতে হাত মিলিয়ে গলিতে গলিতে বোফর্স কামানের ছবি আঁকলেন। কী লাভ হল? রাজীব গান্ধী বেঘোরে মারা গেলেন তার নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়া হল। চলে গেলেন মানুষটা। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় সেই ছবিটা উঠে গেল। ১৯৮৮ সালের জুলাই মাসে শহিদ মিনারে সেই জনসভা যেখানে অটলবিহারী ও জ্যোতি বসু হাতে হাত রেখে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব।’ পাশাপাশি, আদি বিজেপিকে তৃণমূলকে সমর্থন করার আবেদন জানিয়ে কুনাল ঘোষ আরো বলেন, ‘আদি বিজেপি বন্ধুদের বলবো কাকে সমর্থন করছেন এই বিজেপি সেই বিজেপি নয়। তৃণমূলের বাতিল উচ্ছিষ্ট এই বিজেপির মাথায় বসে আছে। দক্ষিণ কলকাতার পর্যবেক্ষক কে? বৈশাখীর গ্ল্যাক্সো বেবি। ৫৮ টা কেন্দ্রের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। অথচ গোলপার্কের বহুতলের বারান্দায় বসে দুজন দুজনকে পর্যবেক্ষণ করছেন বিজেপিকে পর্যবেক্ষণ করা হলো না আর।’ উল্লেখ্য, এদিনের জনসভায় তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস,
বিদায়ী পুরপিতা বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরূপ চক্রবর্তীর মত নেতৃত্বরা।

Advt

Previous article৩ দফা ভোটে ৩০টির বেশি আসন পাবে না, ভুয়ো দাবি করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিজেপি: মমতা
Next articleচতুর্থ দফার ভোট শনিবার, তার আগে ৩ জেলার DM, কলকাতার দুই OC বদল