জগন্নাথের কাণ্ড দেখুন!

এক সাধারণ মানুষের অসাধারণ মানসিকতা!!

শনিবার ২৪ অগষ্ট’১৯ সন্ধ্যায় দমদম নাগেরবাজার ডায়মন্ড প্লাজা শপিং মলে গিয়েছিলেন সবান্ধবে প্রিয়াংকা ঘোষ। যে টোটোতে করে তারা ডায়মন্ড প্লাজায় যান সেই টোটোর সিটেই অজ্ঞতাবশত পরে যায় প্রিয়াংকার লেডিজ ওয়ালেট যাতে ছিল প্রায় চোদ্দো হাজার টাকা, এটিএম কার্ড সহ জরুরি ডকুমেন্ট।
প্রিয়াংকারা টোটো থেকে নেমে শপিং মলে ঢুকে যাওয়ার পর ফিরতি পথে টোটো চালক (নাম জগন্নাথ গুথ) সিটের উপর ওই ওয়ালেট দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি টোটো পার্ক করে ডায়মন্ড প্লাজার সিকিউরিটি হেডের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের হাতে ওই ওয়ালেট তুলে দিয়ে পুরো বিষয়টি জানান। তারপর টোটোচালক জগন্নাথবাবু নিজের নাম ও মোবাইল নাম্বার লিখে জমা দিয়ে চলে আসেন।
ইতিমধ্যে সিকিউরিটি ইন চার্জ ওয়ালেট খুলে তাতে একটি দোকানের বিল পান যাতে প্রিয়াংকার নাম ও মোবাইল নাম্বার ছিল। এরপর তারা ফোন করে প্রিয়াংকাকে ডেকে (তারা তখন ডায়মন্ড প্লাজাতেই ছিল) উপযুক্ত পরিচয় দেখে ওয়ালেট ফেরত দেন।

এরপর যখন ওই টোটোচালক বন্ধু জগন্নাথবাবুকে ফোন করে ধন্যবাদ দিতে কিছু টাকা দিতে চেয়ে দেখা করতে আসতে বলা হয় তখন তিনি অম্লানমুখে জানান “এখন তো টোটো চালাচ্ছি, ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফিরতে হবে।”

পরদিন ফোন করে অনেক অনুরোধের পর টোটোচালক জগন্নাথ বাবু দেখা করেন এবং তারপর তার বক্তব্য ভিডিও রেকর্ড করা হয়।

আলাপচারিতায় জগন্নাথবাবুকে প্রশ্ন করা হয় “টাকা ভর্তি ব্যাগ দেখে আপনার ইচ্ছা হয়নি সেটা ফেরত না দিয়ে রেখে দেওয়ার? ”
জবাবে জগন্নাথবাবু হেসে জানান “আমার লোভ নেই, আমি খেটে খাই, তাতে যা পাই তাতেই আমার চলে যায়।”

আজকের এই স্বার্থপর দুনিয়ায় জগন্নাথবাবুর মত খেটে খাওয়া সৎ মানুষের দৃষ্টান্তের বড়ই অভাব৷ জগন্নাথবাবু এক ব্যতিক্রমী মানুষ। তাঁর মানসিকতাকে আমরা কুর্ণিশ জানাই৷

Previous articleএবার শীর্ষ আদালতে ধাক্কা চিদম্বরমের
Next article‘প্রতিদান’-লিচের জন্য আজীবন চশমা ফ্রি