সখীর গোঁসায় গেরুয়া বৈঠকে গরহাজির শোভন? যা বললেন দিলীপ

কলকাতার ICCR-এ মঙ্গলবার ছিল বিজেপির রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন ও কর্মশালা । গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে দলের নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে প্রত্যেক সাংসদ, বিধায়ককে বৈঠকে ডাকা হয়। বৈঠকে উপস্থিত থাকেন জেলার সভাপতিরাও। মূলত বুথ স্তর থেকেই কীভাবে দলের সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া যায়, তাই নিয়ে এদিনের বৈঠকে মূলত আলোচনা হয়।

বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন সদ্য তৃণমূল ত্যাগী হয় গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। কিন্তু এদিনের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শোভন। কিন্তু বিধায়ক হিসেবে আজ বৈঠকে তাঁর উপস্থিত থাকার কথা। শুধু তাই নয়, এদিন দলের অন্যদের কাছে তাঁর দীর্ঘ চল্লিশ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে চেয়েছিল বিজেপি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শোভনবাবু কেন বৈঠকে এলেন না? তা নিয়ে যথারীতি প্রশ্ন ওঠে দলের অন্দরেই। শুরু হয়ে যায় জল্পনা থেকে ফিসফাস।

দিল্লিতে যোগদানের পর সম্প্রতি কলকাতার রাজ্য অফিসে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ধুমধাম করে সম্বর্ধনা জানিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষরা। তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই সভানগর বিজেপিতে যোগদানের পর এতবড় একটা বৈঠকে তাঁর গরহাজিরা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়।

শোভনবাবুর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ জানান, “যাঁরা যাঁরা আজকের বৈঠকে আসেননি, তাঁদের প্রত্যেকের কাছেই জানতে চাওয়া হবে কেন তাঁরা আসেননি? শোভনদাকেও জিজ্ঞাসা করা হবে।”

প্রসঙ্গত, আজকের বৈঠকে দেখা যায়নি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। সেই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, “আজকের বৈঠকে বৈশাখীকে ডাকা হয়নি। তাই তিনি আসেননি। কিন্তু শোভনবাবু কেন এলেন না সেটা আমার অজানা। আমি নিশ্চয় জানতে চাইবো তাঁর না আসার কারণ।’

উল্লেখ্য, আজকের বৈঠকটি ছিল মূলত সাংসদ, বিধায়ক ও জেলা সভাপতিদের নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠক। এখন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ বা বিধায়ক নন! তবে এর আগে, বিধায়কদের নিয়ে দিলীপ ঘোষের ডাকা বৈঠকে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি তো বিধায়ক নন! তখন তাঁকে বাইরে অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন দিলীপ ঘোষ। যা শুনে সটান গাড়িতে গিয়ে বসে ছিলেন বৈশাখী।

দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় ফেরার পর সংবর্ধনার আয়োজন করে রাজ্য নেতৃত্ব। সেদিনই এই ঘটনাটি ঘটে। সংবর্ধনার পর দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেই বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা ছিল শোভন চট্টোপাধ্যায়েরও। কিন্তু সেবার নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপি দফতরে ঢোকেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তারপর বৈঠকে শোভনবাবুকে ডেকে নেন দিলীপ ঘোষ। সেই বৈঠকে ঢুকতে গিয়েছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

কলকাতায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিল, সেখানেও বৈশাখেদেবীর নাম ছিল না। যা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে খুবই অস্বস্তিকর ছিল। পরে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় নাম সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ করা হয়। এবং বিশেষ বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়েই সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদান শোভনবাবু। তবে সেই সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে এলেও মুখে কোনও হাসি ছিল না বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন এখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে “সখী” বৈশাখী বন্দোপাধ্যায় আমন্ত্রিত না থাকায় কী এলেন না চট্টোপাধ্যায়?

Previous articleগুড়াপের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নয়া ঘোষণা
Next articleযে কারণে আর জাকার্তা নয়, এখন থেকে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী বর্নেও