যাদবপুর: মুখে বহুত্ববাদের কথা বলে অন্য মতের বেলায় এত অসহিষ্ণুতা কেন?

যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা মুখে বলছেন তাঁরা বহুত্ববাদের সংস্কৃতি, গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ব্যক্তির ভিন্ন মত প্রকাশের অধিকারে বিশ্বাসী, অথচ কাজে করছেন উল্টো! বিজেপি-আরএসএসের রাজনীতি ও সংস্কৃতির বিরোধিতা করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে যদি পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্থা করা হয়, তা নিশ্চয়ই গণতন্ত্র বা ভিন্নস্বরে বিশ্বাসের নমুনা নয়। এরাজ্যের অন্যান্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতে এসএফআই এবং এখন টিএমসিপি যে আধিপত্যবাদ দেখিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও স্বাধীনতা ও গণতন্রের নাম করে সেই একই আধিপত্যবাদ চালাচ্ছে। অর্থাৎ মুখে বহুত্ববাদের বুলি আর বাস্তবে আমার অপছন্দের মতাদর্শ হলেই ঢুকতে দেব না, কথা বলতে দেব না, ভিন্ন স্বর অ্যালাও করব না। প্রগতিশীল ভাবনার নামে আচরণটা যদি প্রতিক্রিয়াশীলের মত হয় তাহলে সেই ভন্ডামিটাও প্রকাশ্যে আনা দরকার। এবিভিপির তান্ডব যেমন ধিক্কারযোগ্য, তেমনি সমান নিন্দনীয় আগের প্ররোচনা-সৃষ্টিকারী বিক্ষোভ, আটকে রাখার রাজনীতিটাও। দুটোই অন্যায়, অগণতান্ত্রিক। আলাদা চেহারায় আধিপত্যবাদেরই নমুনা। যারা কোনও এক পক্ষের হয়ে কথা বলতে গিয়ে অন্য পক্ষকে আড়াল করছেন তারা রাজনীতি করছেন, সমালোচনাযোগ্য কাজ করছেন। প্রতিবাদ-আন্দোলনের নামে যাদবপুরের ছাত্রসমাজ যদি আধিপত্যবাদকেই কায়েম করতে চায় তাহলে নিজেরাই নিজেদের ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে। মতাদর্শের বিরোধিতা গায়ের জোরে নয়, যুক্তির জোরে হয়। মিডিয়ায় প্রচার পেতে সেটা ভুলে গেলে নিজেদের অবস্থানই লঘু হয়ে যায়।

তাই অতীতে ‘হোক কলরব’ আন্দোলনের বহু সমর্থক আজ যাদবপুরের সাম্প্রতিক ঘটনায় এই ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকায় হতাশ, বিরক্ত।

আরও পড়ুন-ছেলেকে ক্ষমা করুন, কাতর আর্জি দেবাঞ্জনের মায়ের

 

Previous articleকমিশন ভোটের দিন ঘোষণা করবে আজ দুপুরেই
Next article“চিন্তা করবেন না মাসিমা, ক্ষতি হবে না আপনার ছেলের”, ট্যুইটে জানালেন বাবুল