কলকাতা-কার্নিভালে মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ফের রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত!
রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে জগদীপ ধনকরের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধ। যাদবপুর-কাণ্ড, দার্জিলিংয়ের জেলা প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ইত্যাদি ইস্যুতে তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যপালের বিরোধ এখন প্রায় প্রতিপদেই।
এবার মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে নৃশংস খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।
রাজ্যপাল বলেছেন, “ঘটনার পর প্রশাসনের তরফে একটা বিবৃতিও দেওয়া হল না। নীরবতাই বলে দিচ্ছে তদন্তের গতিপ্রকৃতি।’ এখানেই রাজ্যপাল থামেননি। আরও বলেছেন, “আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। মুর্শিদাবাদে একটা ভয়ঙ্কর খুন হয়েছে। মানবিকতাকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। শিক্ষক, তাঁর স্ত্রী ও 8 বছরের ছেলেকে খুন করা হয়েছে। অথচ এমন ঘটনার পরও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি রাজ্য প্রশাসন। আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। আবেদন করেছি, স্বচ্ছ তদন্ত করুন।” জিয়াগঞ্জের ঘটনা রাজনৈতিক দিক থেকে না দেখে মানবিক দিক থেকে ভাবার আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, “ভাবুন আমাদের কারও সঙ্গে ঘটনাটা ঘটলে কেমন হতো সেটি ? হিংস্র, ভয়ডরহীন হয়ে উঠেছে দুষ্কৃতীরা। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা উচিত। নীরবতাই বলে দিচ্ছে, তদন্তের গতিপ্রকৃতি। এটা ঠিক নয়। আমরা মানবিকতা হারাতে পারি না।”
জিয়াগঞ্জে সপরিবারে এক শিক্ষক খুনে এখনও ধোঁয়াশা। ঘরের মধ্যে স্বামী, স্ত্রী, সন্তানের গলাকাটা রক্তাক্ত দেহ। দশমীর সকালে এমন দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছে গোটা রাজ্য। 33 বছর বয়সের বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর স্ত্রী 28 বছরের বিউটি পাল ও তাঁদের 6 বছরের ছেলে আর্য পালের মৃতদেহ দেখে শিউরে উঠেছে মানুষ। জিয়াগঞ্জের 16 নম্বর ওয়ার্ডের লেবুবাগানে এই ঘটনা ঘটেছে। খুনের তদন্তে নেমে উঠে এসেছে বেশ কিছু নতুন তথ্য। মৃত গৃহবধূ বিউটি মণ্ডল অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আর বন্ধুপ্রকাশ RSS-এর সক্রিয় কর্মী। স্বাভাবিক কারণেই ঘটনায় রাজনৈতিক রং লেগেছে।
আর এবার এই নৃশংস খুন নিয়েই সরব হয়েছেন এ রাজ্যের রাজ্যপাল। যদিও তাঁর বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে নেমেছে তৃণমূল। শাসক দলের নেতা তথা মন্ত্রী তাপস রায় বলেছেন,” বেছে বেছে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন রাজ্যপাল। পাঁশকুড়ায় তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় তিনি চুপ। তা নিয়ে কোনও দুঃখপ্রকাশও নেই। সেই ঘটনাগুলি কারা ঘটাচ্ছে, তাও জানতে হবে ওনাকে।’