আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো: এই নিয়মগুলি না মানলে মা ঘরে থাকবেন না!

আজ আশ্বিনের পূর্ণিমা তিথি। কোজাগরী লক্ষ্মী দেবীর আরাধনায় বঙ্গবাসী ব্রতী হবেন। মাতৃ আরাধনায় শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়। বাঙালির ঘরে শুরু হয়েছে কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা। কিন্তু এই পূজা সঠিক নিয়ম কানুন মেনে না চললে ফল লাভ হয় না। আসুন জেনে নেওয়া যাক, মা লক্ষ্মীর আরাধনা করার সঠিক নিয়ম লক্ষ্মী পূজার বিধি।

পূজার আগের কিছু সাধারন নিয়ম–

সাধারণত কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে সারারাত জেগে মা লক্ষ্মীর পূজা করা হয়। এই পূজার সঙ্গে কৃষকদের একটা বড় সম্পর্ক রয়েছে। এই রাত জেগে কৃষকরা শস্য পাহারা দেন এবং মায়ের কাছে আশীর্বাদ চেয়ে নেন। আবার অনেকে মনে করেন, লক্ষ্মী দেবী চঞ্চলা তাই সারারাত জেগে তাকে পাহাড়া দেওয়া হয়, যাতে তিনি পালিয়ে না যান। এই কথা বয়স্কদের মুখে প্রচারিত। তাই লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা অত্যন্ত শুদ্ধ মনে করতে হয়। মা লক্ষ্মী অল্পতে সন্তুষ্ট হন।

তাই লক্ষ্মী দেবীর পূজো জাঁকজমক পূর্ণ ভাবে করতে হয় না। যে যার সাধ্যমত পূজা করে। তবে পূজার আগে পূজার স্থান পরিষ্কার ও শুদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর সুন্দর করে আলপনা দিয়ে দিন। প্রতি ঘরের দরজায়, পূজার স্থানে লক্ষ্মীর পা অবশ্যই আঁকবেন। তারপর পূজোর জায়গা ভালো করে ফুল দিয়ে সাজিয়ে মা লক্ষ্মীকে প্রতিষ্ঠিত করুন।

পূজা শুরুর নিয়ম–

পূজো শুরুর আগে পূজোর স্থান গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধ করে নিন এবং নিজেকে গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধ করুন। তারপর নারায়ণকে মনে মনে স্মরণ করে পূজা শুরু করুন। পূজার স্থানে একটি তামার পাত্রে জল রাখুন। এই জল সূর্য দেবতাকে অর্পণ করার জন্য। তিনি সকল শক্তির উৎস। তাঁকে ছাড়া পৃথিবী অন্ধকার। তাই তাঁকে জল দেওয়া বাঞ্ছনীয়। তামার পাত্রে জল ঢালতে ঢালতেই সূর্যদেবতাকে স্মরণ করুন। এরপর ঘট স্থাপনের পালা। মাটির একটি গোল ডেলা মত করে নিন, সমান করে নিন। তার ওপর ঘট বসান। এবং ঘটের সামনে একটু ধান ছড়িয়ে দিন। ঘটে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকুন সিঁদুর দিয়ে। ঘটের ওপর আমের পাতা রাখুন। পাতার সংখ্যা যেন বিজোড় হয়। আর পাতার ওপর তেল সিঁদুরের ফোঁটা দেবেন। ঘটে গঙ্গাজল দিয়ে। তার ওপর আমের পাতা রাখুন। পাতার ওপর একটা হরিতকী, ফুল, দুব্বো, সব দিয়ে ঘট সাজান।

দেবীকে আহ্বান–

ঘট স্থাপনের পর মাকে প্রণাম করার পালা। ধ্যান মন্ত্রে মাকে প্রণাম করুন। লক্ষ্মী পাঁচালীর বইয়ে এই মন্ত্র পাবেন। তাই যদি সঠিক উচ্চারন করতে না পারেন তাহলে মাকে মনে মনে স্মরণ করে প্রণাম জানাবেন। এবং আহ্বান মন্ত্রে মাকে আপনার গৃহে আমন্ত্রণ জানান। মা আপনার ঘরে প্রবেশ করছেন তাই মায়ের পা ধুয়ে দিন। মায়ের আঁকা পায়ে জলের ছিটা দিন। তারপর ঘটে আতপ চাল, দুব্বো, ফুল ও চন্দন দিন। এরপর একে একে দেবীকে সব অর্পণ করুন। ফল, মিষ্টি যা কিছু আয়োজন করেছেন। তারপর ধূপ ধুনো দিন। অর্পণ করার পর এবার পুষ্পাঞ্জলি। হাতে ফুল নিয়ে পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র তিনবার উচ্চারন করুন। তারপর দেবীর বাহনকে ফুল দিন।

তারপর নারায়নকে স্মরণ করে ঘটে ফুল দিন ও দেবতা ইন্দ্র ও কুবেরকে স্মরণ করে ঘটে ফুল দিন। তারপর দেবীকে প্রণাম করুন। এরপর সবশেষে লক্ষ্মীদেবীর পাঁচালী পড়ে পূজা শেষ করুন। লক্ষ্মী মাতার পূজোতে কাসর ঘন্টা বাজাবেন না, এতে মা অসন্তুষ্ট হন। তাই মায়ের পুজোতো শুধু শাঁখ বাজান। আর দেবেন না লোহার বাসন। এবং মায়ের পায়ে তুলসী পাতা অর্পণ করবেন না। এই কয়েকটি কাজ করলে মা লক্ষ্মীর কৃপা পাওয়া যাবে।

Previous articleপ্রেসিডেন্ট সৌরভ, সচিব জয়? বোর্ড দখলে অমিত শাহের কৌশলের পরীক্ষা আজ মুম্বইতে
Next articleআজই দার্জিলিঙয়ে শেষ নিঃশ্বাস পড়েছিল তাঁর