কেরলের কমিউনিস্ট নেতারাই মার্কসের হাতে তুলে দিচ্ছেন বেদ,পুরাণ, রামায়ণ

তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা যাই দিক, কার্ল মার্কসের হাতে এবার বেদ-পুরাণ তুলে দিলেন মার্কসবাদী নেতারাই। এরপর আর সরাসরি ধর্মাচরনে কমিউনিস্টদের আপত্তি থাকার কথা নয়।

কমিউনিস্ট হলে নাকি প্রকাশ্যে ধর্ম পালন বা ধর্মগ্রন্থ বা পুরাণের সঙ্গে ঘর করা যায় না। তাতে নাকি ‘আদর্শের সংঘাত’ হয়। এটাই দেশীয় কমিউনিস্টদের চালু অজুহাত। কুসংস্কারও বটে। কিন্তু ‘জয় শ্রীরাম’ -এর হুঙ্কারে এবার সম্ভবত ‘কুসংস্কার’ মুক্ত হলো ভারতের কমিউনিস্টরা।

কেরলের কমিউনিস্টরা ধর্ম নিয়ে আলোচনার আসর বসাচ্ছেন। সরাসরি দলের পতাকা না থাকলেও ওই আলোচনা-সভার সংগঠকরা CPI-দলের সঙ্গে যুক্ত। এন ই বলরাম ট্রাস্টের আয়োজনে ওই আলোচনায় বিজেপি বা গেরুয়া শিবিরের কাউকে ডাকা হচ্ছে না বলেই উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন। কান্নুরে আগামী 25 অক্টোবর থেকে ‘ভারতীয়ম 2019′ শীর্ষক তিন দিনের ওই আলোচনায় বেদ, উপনিষদ, বিভিন্ন পুরাণ ও মহাকাব্যের উৎপত্তি, ভাষা, সংস্কৃতি ও বৈজ্ঞানিক ভাবনা নিয়ে আলোচনা হবে। এই অনুষ্ঠান নিয়েই জোরালো প্রশ্ন উঠছে কেরলে।
কান্নুরে ওই আলোচনা-সভার উদ্বোধন করবেন CPI-এর সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা। 3 দিনের আসরের শেষদিনে উপস্থিত থাকবেন কেরলের বাম- মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। বামপন্থী সংগঠনের এমন ধর্মোদ্যোগকে চড়াসুরেই কটাক্ষ করেছে গেরুয়া-শিবির!
এই বেনজির উদ্যোগ নিয়ে CPI-এর কেরল রাজ্য নেতৃত্বের যুক্তি, এই আলোচনার সঙ্গে ধর্মচর্চা বা ধর্মপালনের কোনও সম্পর্ক নেই।
উদ্দেশ্য রাজনৈতিক অবশ্যই। তবে মূল লক্ষ্য শিক্ষাগত। পুরাণ এবং মহাকাব্যের মধ্যেও যে মূল্যবোধ ও নীতিশিক্ষা আছে, তা এখন ভুল ব্যাখ্যা করে অসৎ উদ্দেশ্যে সঙ্ঘ পরিবার ব্যবহার করছে। সেই ভুল ভাঙ্গিয়ে দিতেই এই আলোচনা সভা।

বিজেপি এই সুযোগে বামেদের একহাত নিয়েই চলেছে।কেরলের কান্নুর জেলা বামেদের সঙ্গে সঙ্ঘের রক্তাক্ত সংঘর্ষের জন্য সুবিদিত। কেরল রাজ্য বিজেপির সভাপতি পি শ্রীধরন পিল্লাইয়ের কথা, “কমিউনিস্টরাও আজ বুঝতে পারছেন, ভারতীয় সংস্কৃতি থেকে সরে গিয়েছেন বলেই মানুষের মন থেকেই তাঁরা মুছে যাচ্ছেন। সেটা সামাল দিতেই আজ বেদ, উপনিষদ নিয়ে কমিউনিস্টরা
বসছেন!” CPI-এর কান্নুর জেলা সম্পাদক পি সন্তোষ কুমারের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘একটা সেমিনার করলেই লোকে এসে ভোট দিয়ে যাবে, এটা জানা ছিল না!’’

Previous articleমদ্যপ জামাইয়ের হাতে আক্রান্ত শ্বশুর ও স্ত্রী
Next articleআগামী মরশুম থেকে আইএসএল খেলবে বাংলার দুই প্রধান