খড়গপুরে মুকুল রায়কে পদ্ম-প্রার্থী করতে সক্রিয় কৈলাস-শিবির

রাজ্যে তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষনা হওয়ামাত্রই নড়েচড়ে বসেছে বঙ্গ-বিজেপি। যে তিন কেন্দ্রে ভোট হবে, তার মধ্যে খড়গপুর আসনে তাদের জয় নিশ্চিত বলেই ধরে নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। এই কেন্দ্রে 2016-র বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের জ্ঞানসিং সোহনপালকে হারিয়ে প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েই জয় পান রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপবাবুকেই 2019 সালে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করে বিজেপি। লোকসভা ভোটেও জয়ী হন দিলীপবাবু। এর ফলে খড়গপুর আসনটি শূন্য হয়। সেখানেই ভোট হবে আগামী 25 নভেম্বর।

এদিকে খড়গপুর কেন্দ্রে বিজেপির অবস্থা বাকি দুই কেন্দ্র, করিমপুর এবং কালিয়াগঞ্জের থেকে অনেকটাই ভালো বলে এখানে প্রার্থী হওয়ার দাবিদার বেড়েই চলেছে গেরুয়া শিবিরে। রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের শিবির চাইছেন খড়গপুরে প্রার্থী হোন মুকুল রায়। এই মহলের যুক্তি, রাজ্য বিধানসভায় মুকুল রায়কে পাঠাতে পারলে অনেকটাই চাপে থাকবে তৃণমূল। দলের লাভ হবে একশো শতাংশ।

আরও পড়ুন – ফের চাঁদার জুলুমে আক্রান্ত ব্যবসায়ী

তাই কৈলাস-শিবির সুকৌশলে এই কেন্দ্রে ভাসিয়ে দিয়েছে মুকুল রায়ের নাম। পিছনে অন্য গল্পও শোনা যাচ্ছে। মুকুল ইদানিং নানা ঝামেলায় আছেন। নারদ-কাণ্ড ছাড়াও বেহালার এক প্রতারণার অভিযোগে প্রায় গ্রেফতারের মুখে চলে গিয়েছিলেন মুকুল। এই অবস্থায় বিধায়ক হতে পারলে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় থাকতে পারবে মুকুল বলেই কৈলাস-শিবির মনে করছে। তাছাড়া রাজ্য বিধানসভায় মুকুল রায়কে পাঠাতে পারলে চাপে থাকবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী বলেই এই শিবির দাবি করছে। তাই জোরালো আওয়াজ তুলেছে মুকুল রায়কে খড়গপুরে প্রার্থী করার।

ওদিকে, বিজেপির স্থানীয়স্তরে মুকুল রায়ের নামে প্রবল আপত্তি উঠেছে। তারা ভূমিপুত্রদের মধ্যে কাউকে প্রার্থী করতে চাইছে। বাইরে থেকে কোনও প্রার্থী স্থানীয় নেতৃত্ব কিছুতেই চাইছে না। এই কেন্দ্রে প্রার্থী বাছাইয়ের ব্যাপারে দিলীপ ঘোষের দু’ধরনের অধিকার রয়েছে। প্রথমত, তিনি রাজ্য সভাপতি। দ্বিতীয়ত তিনিই ওই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। সাংসদ হয়ে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁর সাংসদ এলাকারই অন্তর্গত এই কেন্দ্রটি। দিলীপ-শিবির কিছুতেই রাজি নয়, খড়গপুরে এমন কাউকে প্রার্থী করতে যার জেরে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে গোষ্ঠী বিভাজন শুরু হয়। তাই এই শিবির চড়া সুরেই মুকুল-বিরোধিতায় নেমেছে। বিজেপি সূত্রের খবর, দিলীপ-শিবির রাজি না হলে খড়গপুরে কারো দলের প্রার্থী হওয়া অসম্ভব।

ফলে অলৌকিক কিছু না হলে, বিজয়বর্গীয়-শিবির যতই দাবি জানাক, খড়গপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে মুকুল রায়ের প্রার্থী হওয়া কার্যত বিশ বাঁও জলেই।

আরও পড়ুন – একজন প্রার্থীও পছন্দের নয়, এই প্রথমবার খেল দেখাল NOTA

Previous articleফের চাঁদার জুলুমে আক্রান্ত ব্যবসায়ী
Next articleআদিত্যর নামে পোস্টার, জল্পনা বাড়ছে মহারাষ্ট্রে