সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ অবসর নেওয়ার আগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চারটি মামলার রায়ের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। 4 নভেম্বর অর্থাৎ সোমবার থেকে পরবর্তী দশটি কাজের দিনের মধ্যে যে কোনও দিন এই রায়গুলি ঘোষণা করা হবে। এই চারটি মামলার প্রতিটি বেঞ্চেই নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি গগৈ এবং সবকটি রায়ই শুনানি শেষের পর এখন রিজার্ভ রাখা আছে।

সুপ্রিম কোর্ট আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যে চারটি মামলার রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছে তার মধ্যে ধারে-ভারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অযোধ্যা জমি মামলার রায়। কার্যত উনবিংশ শতক থেকে জমি সংক্রান্ত বিতর্ক ও বিবাদ কেন্দ্রীভূত হয়েছে অযোধ্যাকে ঘিরে। মামলাও চলেছে দশকের পর দশক। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ শুরুতেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, এটি কোনও ধর্ম বা সম্প্রদায়ভিত্তিক বিবাদের মামলা নয়, এটি একটি নিখাদ জমিসংক্রান্ত মামলা। তা সত্ত্বেও অযোধ্যা জমি মামলার যে রায়ই হোক না কেন, তার সামাজিক ও রাজনৈতিক তাৎপর্য বিরাট। এই মামলার রায়কে ঘিরে দেশের কোথাও যাতে কোনওরকম অশান্তি বা উত্তেজনা তৈরি না হয় সেজন্য সব পক্ষই সতর্ক। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, অযোধ্যা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই চূড়ান্ত। দেশের সব মানুষের উচিত সংযতভাবে আদালতের নির্দেশ মান্য করা। একই কথা বলেছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতও। অযোধ্যা নিয়ে যে রায়ই হোক না কেন, তা পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে দেয় নাকি বিচারপতিদের মধ্যে মতভেদ থাকে সেটাও দেখার।

আরও পড়ুন – টিভি সিরিয়ালে নারীচরিত্র কুটিল নয়, আসছে আইন

অযোধ্যা মামলা ছাড়া আরও যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে সেগুলি হল রাফাল মামলা, শবরীমালা মামলা ও প্রধান বিচারপতির অফিসকে তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় আনার দাবিতে মামলা। এরমধ্যে রাফাল মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আগে মোদি সরকারকে ক্লিনচিট দিলেও রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ পিটিশন দেওয়া হয়েছিল। এখন দেখার বিষয় সুপ্রিম কোর্ট তার আগের রায় বহাল রাখে নাকি পৃথক পর্যবেক্ষণ দেয়। লোকসভা ভোটের প্রচারে অন্যতম ইস্যু রাফাল নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত সর্বশেষ কী মতামত জানায় তার অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল। শবরীমালা মামলাটিও রিভিউ পিটিশনের ভিত্তিতে করা হয়েছে। এর আগের রায়ে কেরালার শবরীমালা মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করেই এবারের মামলা। চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ মামলাটির পিটিশনে দাবি করা হয়েছিল, স্বচ্ছতার স্বার্থে দেশের প্রধান বিচারপতির অফিসকে আরটিআই বা তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় আনতে হবে। এই মামলা নিয়ে খোদ প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ কী রায় ঘোষণা করে সেদিকেও নজর সবার।

আরও পড়ুন – নজরুল মঞ্চের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী, আশায় বুক বাঁধছেন পার্শ্বশিক্ষকরা
