সূর্যোদয়ের আগে পর্যন্ত রবীন্দ্র সরোবরে অবাধে ছট পুজো! বাজলো বাজনা, ফাটলো বাজি

ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে  রাতভর অবাধে ছট পালন হলো রবীন্দ্র সরোবরে। সূর্যোদয়ের আগে পর্যন্ত গোটা সরোবর ছিল উৎসবের মেজাজে। রাত যত গড়িয়েছে ভিড় ততই বেড়েছে। রবিবার ভোররাতেও রবীন্দ্র সরোবরে পুণ্যার্থীদের ঢল ছিল চোখে পড়ার মতো। সমস্ত নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শব্দবাজির রমরমাও দেখা যায়। সেইসঙ্গে ঢাক-ঢোল-ডিজে।

এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ পরিবেশবিদ থেকে স্থানীয় মানুষজন। পরিবেশ দূষণ রুখতে আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, তাকে এমন ভাবে অপেক্ষা করাটা মেনে নিতে পারছেন না পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁরা নতুনভাবে বিষয়টি নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। কারণ, সবকিছুই হয়েছে পুলিশের নাকের ডগায়। এবং এখানে আইনের রক্ষকরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন। পুরসভার কোনও আধিকারিককেও দেখা যায়নি রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে।

প্রসঙ্গত, শনিবার সকাল থেকেই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রবীন্দ্র সরোবর লেকে অবাধে চলেছে ছট পুজোর বিরাট আয়োজন। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসেছেন ছট পুজো করতে এই সরোবরে।

আরও পড়ুন – টোটো কেলেঙ্কারিতে দেবশ্রী? রায়দিঘীতে তুলকালাম

গতকাল, সকালেই সরোবরের গেট ভেঙে ঢুকে পরে একদল লোক। প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে তাঁরা। তাদের বাধা দেওয়ার জন্য ছিল না কোনও নিরাপত্তারক্ষী। এরপর বেলা যত গড়িয়েছে, ততই ভিড় বেড়েছে সরোবরে। বিভিন্ন বয়সের মানুষ কলার কাধি, ফলমূল, ফুল নিয়ে গিয়ে ফেলে সরোবর চত্বর। কেউ কেউ আবার বাজনা নিয়েও আসে।

কেএমডিএ‘র নির্দেশিকা ছিড়ে চলে একের পর এক ঘাট দখলের প্রক্রিয়া। কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ছিল না কোনও পুলিশ। এদিন ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি কোনও কেএমডিএ‘র আধিকারিককেও। সরকারি নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় সরোবরের একের পর এক গেট দিয়ে ঢুকতে থাকে সাধারণ মানুষ। বিকেলের দিকে অবশ্য পুলিশ সরোবরে। তবে তারা গেটের বাইরেই থাকে। ছট পুজোয় কোনওরকম বাধা সৃষ্টি করেননি তারা।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুজোর জন্য ঘাট পরিষ্কারের কাজ শুরু করে দেন সাধারণ মানুষই। কেউ কোথাও বালতি রেখে, কেউ আবার কাপর পেতে দিয়ে কেউ কাগজে নাম লিখে নিজেদের জায়গা চিহ্নিত করে যান। সরোবরের পরিবেশ রক্ষা ও দুষণ নিয়ন্ত্রনের জন্য যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল তা কার্যত অমান্য করেই রবীন্দ্র সরোবরে রাতভর চলেছে অবাধ ছট পুজোর উৎসব।

এদিকে রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজাও জমে উঠেছে। বিষয়টি আদালতের নির্দেশ বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কেউ কোনও মন্তব্য করেননি। অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সরোবরের তালা ভাঙাকে পরোক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। আবার রবিবার সকালে রবীন্দ্র সরোবরে সাফাই অভিযানে নামতে দেখা যায় বিজেপি কর্মীদের।

                                                                                                                          ছবি – প্রকাশ পাইন

আরও পড়ুন – নজরুল মঞ্চের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী, আশায় বুক বাঁধছেন পার্শ্বশিক্ষকরা

Previous articleটোটো কেলেঙ্কারিতে দেবশ্রী? রায়দিঘীতে তুলকালাম
Next articleআগামী দু’সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে চারটি বড় রায়ের অপেক্ষায় গোটা দেশ