প্রেস্টিজ-ফাইটে দশ গোল খেলেন বঙ্গ-বিজেপির সভাপতি

তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনের মধ্যে গুরুত্বের বিচারে অনেকটাই এগিয়ে ছিলো খড়্গপুর, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছেড়ে যাওয়া আসন। ২০১৬-তে ‘চাচা’ জ্ঞানসিং সোহনপালকে প্রায় ৬ হাজার ভোটে হারিয়ে ‘অনামী’ দিলীপবাবু চমক দিয়েছিলেন।। লোকসভা ভোটে সেই দিলীপবাবুই এখানে নিজের মার্জিন ৪৫ হাজারে নিয়ে গিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন। ফলে খড়্গপুর আসনের উপনির্বাচন স্বাভাবিকভাবেই দিলীপবাবুর ‘প্রেস্টিজ ফাইট’, ছিলো দিলীপবাবুর ‘অ্যাসিড টেস্ট’-ও। সেই পরীক্ষায় ডাহা ফেল করলেন উল্কার গতিতে রাজ্য-রাজনীতিতে উঠে আসা দিলীপ ঘোষ। ফলে খড়্গপুরের ফলাফলের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে দিলীপ ঘোষের নাম।

প্রার্থী বাছাইয়ের সময় থেকেই দিলীপবাবু কার্যত ‘ডিক্টেটর’-শিপ চালিয়েছেন বলে বিজেপির অন্দরের অভিযোগ ছিলো। কারো কথা তিনি শুনতেই চাননি। নিজের ঘনিষ্ঠ প্রেমচাদ ঝাঁ-কে প্রার্থী করেছেন এক প্রকার জেদ করেই। তখনই ওই কেন্দ্রের বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ সরে যান দিলীপবাবুর পাশ থেকে, যা প্রথম দিকে ধরতেই পারেননি দিলীপ ঘোষ। বঙ্গ-বিজেপির অন্দরে রাজ্য সভাপতির ‘শত্রু’-র সংখ্যা কম নয়। অন্য দল থেকে আসা নেতা-কর্মীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনও সেভাবে ‘পছন্দ’ করে না দিলীপবাবুকে। দিলীপ-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, এই ভোটের এই ফলের পিছনে এদের কারসাজি আছে।

প্রথমবার বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়েই বিধায়ক, প্রথমবার লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েই সাংসদ, দিলীপ ঘোষের এই রেকর্ডকে দলের মধ্যেই অনেকে ঈর্ষা করেন। তাছাড়া, তাঁর নেতৃত্বেই এ রাজ্যে রেকর্ড সাংসদ জিতিয়ে আনার দরুন দিল্লিতেও এখন তাঁর ‘নম্বর’ বেড়েছে। শত্রুও বেড়েছে, হয়তো দম্ভও বেড়েছে দিলীপবাবুর। উপনির্বাচনে একশো শতাংশ আত্মতুষ্ট ছিলেন জয়ের ব্যাপারে। বাইরের এবং ঘরের ‘ শত্রুদের’ একযোগে মোকাবিলা করতে যতখানি অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার প্রয়োজন, সঙ্ঘ-ফেরত দিলীপ ঘোষ এখনও ততখানি অর্জন করতে পারেননি।

তবে এটা মেনে নিতেই হবে, কারন যাই হোক, প্রেস্টিজ-ফাইটে দশ গোল খেয়ে আপাতত কিছুদিন চুপ থাকতেই হবে বঙ্গ-বিজেপির সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষকে।

Previous articleচিদম্বরমের জামিন মামলার রায় স্থগিত
Next articleদাম স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজ বেচবে না মানিকতলা মার্কেটের বিক্রেতারা