জামিন পেয়েই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ চিদম্বরমের, কী বললেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী?

১০৬ দিন পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জামিন পেয়ে বুধবার রাতেই তিহার জেল থেকে বেরিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। আর তার ১২ ঘণ্টা পরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিশেষ করে কেন্দ্রের আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তিনি। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, ১০৬ দিন পরে খোলা হাওয়ায় শ্বাস নিতে পেরে মনে হচ্ছে স্বাধীনতা কত দামি। তাঁর অভিযোগ, কোনও কারণ ছাড়াই একজন রাজনৈতিক নেতাকে বন্দি করা হয়েছে। তবে বুধবার, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, আইএনএক্স মিডিয়া মামলা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারবেন না প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। সে কথা উল্লেখ করে এদিন চিদম্বরম বলেন, “শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মামলা নিয়ে কিছু না বললেও, আমি বলব একদিন সত্যটা সামনে আসবে। আমার পরিবারে সবাই ঈশ্বর বিশ্বাসী”। এরপরেই কেন্দ্রের আর্থিক নীতি এবং পরিস্থিতি নিয়ে একের পর এক তোপ দাগেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।

চিদম্বরম অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় চূড়ান্ত ব্যর্থ। বিজেপি সরকারের ‘আচ্ছে দিন’-এর দাবিকে কটাক্ষ করে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার জানেই না সমস্যা কোথায়? রোগ নির্ণয় না হলে ওষুধ দেওয়া যাবে কী করে? পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, বছরের শেষে ৫ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির দাবি করা হলেও অর্থনীতিবিদদের মতে, আসলে বৃদ্ধি হয়েছে ১.৫ শতাংশ। দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার তলানিতে ঠেকেছে বলে অভিযোগ করেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।

পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি অভিযোগ করেন, গ্রামীণ অর্থনীতির মান নেমেছে। হোলসেল মার্কেট দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। দেশের উৎপাদন হার কমেছে এবং বেকারত্ব বেড়েছে। তিনি বলেন, অতীতে কখনও এরকম হয়নি যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দেশের আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস থেকে নিজেরাই সরে এলো। ফেব্রুয়ারি মাসে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭.৪ ঘোষণা করা হলেও, বছরের শেষে সেই পূর্বাভাস নেমে হল ৫। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ইতিহাসে এই ধরনের ঘটনা আগে কোনওদিন ঘটেনি বলে মত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর। অর্থনীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের একের পর এক ভুল করছে বলে এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে তোপ দাগেন চিদম্বরম।
সূত্রের খবর, তিহার জেল থেকে বেরিয়েই কংগ্রেসের কার্যকরী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে দেখা করতে যান কংগ্রেস নেতা। তারপরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর এই গর্জন কংগ্রেস তথা হাইকমান্ডের কৌশলী পদক্ষেপ বলে মত রাজনৈতিক মহলের। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁর মামলা বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না চিদম্বরম। কিন্তু তাঁকে যে রাজনীতিভাবে কোণঠাসা করা যাবে না সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতা।

Previous articleসিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল (সিএবি): একনজরে কিছু তথ্য জেনে নিন
Next articleপেট্রোল ঢালার সময় কি বেঁচে ছিলেন হায়দরাবাদের তরুণী? জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য