নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিরোধীদের আপত্তিতে উত্তপ্ত লোকসভা

প্রত্যাশামতোই পেশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ঘিরে তুমুল হইচই লোকসভায়। সোমবার আলোচনার জন্য বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিলের একাধিক অংশ নিয়ে আপত্তি তোলে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা।
কংগ্রেস বলল, এই বিল ‘অসাংবিধানিক’ ।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পাল্টা যুক্তি ‘ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভেঙেছেন আপনারা’।নাগরিক সংশোধনী বিল নিয়েও বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণে সামিল হল শিবসেনাও। তাদের অভিযোগ, শুধুমাত্র হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দিয়ে ‘ধর্মযুদ্ধে’ ইন্ধন জোগাচ্ছে মোদি সরকার।
সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় পরে বলেন, ‘‘আলোচনা শুরু হবে মঙ্গলবার থেকে। আলোচনার জন্য সময় ধার্য করা হয়েছে চার ঘণ্টা।’’ বিলটি ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী’ বলে ব্যাখ্যা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়।
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী এই বিলটিকে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ বিরোধী বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের দেশের সংখ্যালঘু মানুষদের নিশানা করেই এই বিলটি বানানো হয়েছে।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে এই বিল।’ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, সংবিধানের রচয়িতা আম্বেদকরের আদর্শের বিরোধী এই বিল!
AIMIM সাংদ ওয়েইসি বলেন, ‘স্পিকার স্যারের কাছে আর্জি, এমন আইনের হাত থেকে দেশকে ও দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রক্ষা করুন। নয়ত ডেভিড বেন গুরিয়ন ও হিটলারের সঙ্গে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামও উচ্চারিত হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভয়বাণী, “বাংলায় চালু হবে না এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল”। কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেছেন, এই বিলটি “মাত্র ছয় ধর্মের মানুষকে নাগরিকত্ব অর্জনের অনুমতি দিতে চায় এবং এটি অন্যান্য ধর্মের ব্যক্তিদের বাদ দিতে চায়, এর ফলে ধর্মীয় বৈষম্যের ধারণাটি সমর্থন করছে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, যা অনুচিত”।
সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন যে তাঁরা এই বিলের বিপক্ষে। “দল যে কোনও মূল্যেই এই বিলের বিরোধিতা করবে”, বলেন অখিলেশ।বিজেপির যুক্তি অনুযায়ী, প্রতিবেশী দেশগুলিতে “নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের” আশ্রয় দেওয়ার জন্য এই আইনী পদক্ষেপের প্রয়োজন।
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, এই বিলটি উত্তর-পূর্বের রাজ্য সহ সমগ্র দেশের স্বার্থে আনা হয়েছে। “এই বিলটি উত্তর-পূর্ব রাজ্য এবং দেশের স্বার্থে আনা হয়েছে, তাই এই বিল সংসদের উভয় কক্ষ থেকেই অনুমোদন পাবে”, বলেন তিনি। অসমে বিশিষ্ট ছাত্র সংগঠন গুলি হুমকি দিয়েছে যে বিলটি পাস হলে দেশ জুড়ে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করবে তাঁরা।

Previous articleঅভিজিৎ-এস্থারের কথা আর একবার শুনে নিন
Next articleজেএনইউ-র আন্দোলনে ফের উত্তপ্ত রাজধানী