এবার রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে গণভোট চাইলেন মমতা! হারলে ইস্তফা দিক বিজেপি সরকার

এই প্রথম তাঁর NRC ও CAA বিরোধী আন্দোলনকে রাজ্য-দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে সন্তর্জাতিক মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের মানুষের রায় জানতে এবার রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে গণভোট চাইলেন মমতা! আর সেখানে হারলে ইস্তফা দিক বিজেপি সরকার।

ধর্মতলায় রানি রাসমণি রোডে ছাত্র-যুবদের ডাকে NRC-CAA বিরোধী মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “কারও দয়ায় আমরা এদেশে বাস করি না।আমার সবাই সুখে-দুঃখে-পরাধীনতা পেরিয়ে এদেশে বাস করছি। স্বাধীনতার ৭৩ বছর পর আবার নতুন করে প্রমান দিতে হবে নাগরিকত্বের? সেদিন বিজেপির মাথা-লেজগুলো কোথায় ছিল? স্বাধীনতা আন্দোলনের যাদের কোনও অবদান নেই, তাদের কাছে নাগতিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে?
আমি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলছি, বিজেপির নেতাদের যদি বুকের পাটা থাকে তাহলে দেশজুড়ে একটা গণ ভোট হয়ে যাক। যেখানে একটি রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে একটা কমিটি গড়ে কোনও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দিয়ে এই গণভোট হোক। দেখব কতজন আপনাদের NRC আর CAA মানছে, আর কজন মানছে না। যদি হেরে যান, তাহলে ইস্তফা দেবেন।”

এরপরই তিনি দেশবাসীকে “United Nation” ব্যানারে এক ছাতার তলায় এসে লড়াই করার আবেদন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমাদের লড়াই-আন্দোলন থামবে না। যতদিন না পর্যন্ত NRC আর CAA আইন বাতিল হয়। একটা রাজনৈতিক দল ঠিক করবে, কারা দেশে থাকবে আর কারা থাকবে না। ৩৭ শতাংশ নিয়ে সরকার গড়ে ৬২ শতাংশের অধিকার কেড়ে নিতে পারেন না। সংখ্যা থাকলেই অসাংবিধানিক কাজ করা যায় না। সংবিধান আমাদের রক্ষাকবচ। সারাদেশে ১৪৪ ধারা জারি কোটেছে। শুধু জনগণের নাগরিক ধারার খেয়াল রাখে না। এটা আমাদের অস্তিত্বের আন্দোলন। তাই বলছি, সারা দেশের সবাইকে বলুন রাস্তায় নামুন। রাজনীতি ভুলে নামুন। ধর্ম ভুলে নামুন।
একজোট হন।”

মমতা ফেরে একবার মনে করিয়ে দেন, গান্ধীজি থেকে নেতাজি, রবীন্দ্রনাথ, আম্বেদকর, নজরুল, লাল-বাল-পাল সবাই দেশের জন্য আন্দোলন করেছে। তাঁরা মানুষে মানুষে
সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন। আর বিজেপি উড়ে এসে জুড়ে বসে বিভাজন চাইছে।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁরা এদেশে এসেছেন, মতুয়ারা, রাজবংশী, কামতাপুরী, আদিবাসী, পাহাড়ের ভাইবোনের সবাই নাগরিক। জেলায় জেলায় যাঁরা আছেন সবাই নাগরিক। রাজ্যে রাজ্যে যাঁরা আছেন সবাই নাগরিক। হঠাৎ কে দিব্যি
দিল, সকলকে বিজেপির মাদুলি পরে প্রমাণ করতে হবে নাগরিকত্ব। এর থেকে লজ্জার কিছু হতে পারে না।”

এরপর বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “১৯৮০ সালে বিজেপির জন্ম। তাহলে ওরা ১৯৭০-এর হিসেব চাইছে কী করে? আধার কি আজ অন্ধকারে? আধারের ডেটা চুরি করে ব্যাংক থেকে সব লুটে নিয়েছে। এখন বলছে আধার চলবে না। বিজেপির মাদুলি ওদের ওয়াশিং মেশিন।
যত চোর-ডাকাত ওখানে গিয়ে ঢুকছে আর ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে নেতা হয়ে যাচ্ছে। রামচন্দ্র গুহকে পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে। তাঁকে অপমান করা হয়েছে। ওদের বিরুদ্ধে যারাই বলবে, তাদের গ্রেফতার করবে। গণতন্ত্রে এটা লজ্জার।”

আরও পড়ুন-নবীন বরণ নয়, কলেজে এনআরসি-সিএএ বিরোধী সেমিনারের নির্দেশ পার্থর

 

Previous articleনবীন বরণ নয়, কলেজে এনআরসি-সিএএ বিরোধী সেমিনারের নির্দেশ পার্থর
Next articleশান্তির ‘মিছিল-দিন’ দেখল কলকাতা