বামেদের কটাক্ষ: বাজপেয়ি জমানায় নাগরিকত্ব আইন সংশোধনে সমর্থন করে আজ জীবন দেওয়ার হুমকি মমতার!

 

2003 সালে প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির সময়ে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বিজেপি সরকার। সেই সংশোধিত আইনে যুক্ত করা হয়েছিল 14এ ধারা। তাতে স্পষ্ট ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার মনে করলে প্রতি নাগরিকের নাম নথিভুক্ত ও প্রত্যেকের ন্যাশনাল আইডেনটিটি কার্ড বাধ্যতামূলক করতে পারবে। বাজপেয়ি জমানায় পাশ হওয়া সেই সংশোধনীই আজকের সিএএ বা দেশজোড়া এনআরসি পরিকল্পনার ভিত্তি। 2003-2004-এর বার্ষিক রিপোর্টেও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির সরকারি উদ্যোগের স্বীকারোক্তি রয়েছে।

বাম দলগুলির অভিযোগ, নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী আনা বা নাগরিকপঞ্জি চালুর উদ্যোগ নেওয়ার সেই পর্বে মমতা ব্যানার্জি শুধু বিজেপির সঙ্গেই ছিলেন না, তিনি বাজপেয়ি মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে নাগরিকত্ব সংশোধনীকে সমর্থন করেছিলেন। সেইসময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দপ্তরবিহীন মন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেত্রী হিসাবে মমতা নাগরিকপঞ্জির সরকারি উদ্যোগের সমর্থক ছিলেন।

বামপন্থীদের বক্তব্য, 2000 সালে রাজ্যসভায় আরএসপি সাংসদ অবনী রায়ের এক প্রশ্নের উত্তরে বাজপেয়ি সরকার স্বীকার করে নিয়েছিল সারা দেশে নাগরিকপঞ্জি ও তার ভিত্তিতে নাগরিক পরিচয়পত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেইসময় দিল্লিতে বিজেপি সরকারের শরিক তৃণমূলের নেত্রী মমতা রেলমন্ত্রীও ছিলেন। তখন সরকারের সেই উদ্যোগের বিরোধিতা তো করেনইনি, উল্টে 2003-এ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে সমর্থন দেন। সেই আইন অনুসারে বিধি তৈরি হয়। তার নাম ‘দ্য সিটিজেনশিপ ( রেজিস্ট্রেশন অফ সিটিজেন অ্যান্ড ইস্যু অফ ন্যাশনাল আইডেন্টিটি কার্ড) রুলস 2003।’ সেই বিধির 3 নম্বর ধারার শিরোনাম: ‘ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অফ ইন্ডিয়ান সিটিজেনস।’ সেই 3 নম্বর ধারার 4 নম্বর উপধারায় বলা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার এই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ জারি করে, একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে, যারা লোকাল রেজিস্ট্রারের এলাকার মধ্যে থাকেন, সেইসব ব্যক্তিদের পপুলেশন রেজিস্ট্রার তৈরি করতে পারে। বামেরা বলছে, সেদিন সেই রুল বা বিধির সমর্থক ছিলেন মমতা ব্যানার্জি, যিনি আজ নাগরিকপঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমে বলছেন, জীবন দিয়ে দেব কিন্তু এই আইন করতে দেব না।

বামেদের বক্তব্য, 2000 সালই হোক বা 2019, ধারাবাহিকভাবে এনআরসি-র বিরোধিতা করছে বামপন্থীরাই। কিন্তু রাজনৈতিক সুবিধা অনুযায়ী নাগরিকত্ব ইস্যুতে বারবার অবস্থান বদল করেছেন মমতা। বিজেপি সরকারের মন্ত্রী হিসাবে একরকম আর এখন সংখ্যালঘু মুসলিমদের ভোটে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আরেকরকম। বামেরা বলছেন, অতীতের রেকর্ড তুলে ধরে মানুষের কাছে মমতার এই দ্বিচারিতা ফাঁস করবেন তাঁরা। বোঝানো হবে, এনআরসি বা সিএএ বিরোধিতা আসলে তৃণমূলনেত্রীর কাছে শুধু ভোটব্যাঙ্ক হাতে রাখার কৌশল।

Previous articleসাতসকালে ঘন কুয়াশার জেরে পথ দুর্ঘটনায় মহিলার মৃত্যু
Next articleকানোরিয়া মুখ খুলে কাদের নাম বলবেন! পাক ক্রিকেটে চরম টেনশন