ফি বৃদ্ধির আন্দোলন। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় বিগত কয়েক মাস ধরেই এই আন্দোলনে উত্তাল। ফি বৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় ৩০০%। মানতে নারাজ এসএফআইয়ের ছাত্র সংসদ। চলেছে ধরণা, আন্দোলন, মিছিল, টানা অবস্থান। এবার আরও চাপ দিতে রেজিস্ট্রেশন বয়কট শুরু হয়। প্রায় সাত হাজার পড়ুয়াদের মধ্যে ইতিমধ্যে দু’হাজার বয়কট করেছে। রবিবারই ছিল শেষ দিন। চাপে ছিল জেএনইউ প্রশাসন। এর ফাঁকেই এবিভিপির হুমকি চলছিল। আন্দোলন তুলে নিতে মারধর চলছিল।
শনিবার সেই পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরাল হয়। কিন্তু সরস্বতীপূরমের দিক দিয়ে যে বহিরাগতরা মেয়েদের হস্টেলে ঢুকে হামলা চালাবে, মাথা ফাটিয়ে দেবে, ভাঙচুর করবে তা ভাবনাতেও আসেনি। হাতে লাঠি, রড, মুখ ঢাকা। এরা কারা? এসএফ আইয়ের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস জানান, জেএনইউ প্রশাসন যারা পোশাকবিধি তৈরি করতে চায়, তারা মেয়েদের নিরাপত্তা দিতে পারে না। মেয়েদের হস্টেলে ছেলেরা ঢোকে কোন ফাঁক দিয়ে। এবিভিপি বলছে, আক্রমণকারীরা নাকি আমরাই! ওরা এবার গল্প লিখুক। রাতে ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর পুলিশ পিকেট বসে। প্রশ্ন কাদের নিরাপত্তা দিতে? মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া রক্তাক্ত সংসদের প্রেসিডেন্ট ঐশি ঘোষ বলেন, আমাকে নির্মমভাবে মেরেছে। ব্ল্যাক আউট হয়ে গিয়েছিলাম।
ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে ছাত্রী হস্টেলে ঢুকে মারছে এবিভিপির দুষ্কৃতীরা। ছাত্রীদের আর্ত চিৎকার। প্রতিবাদে কাল, সোমবার, দেশ জুড়ে আন্দোলনে নামছে এসএফআই।
আহতদের এইমস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এইমসের চিকিৎসক হরজিৎ সিং ভাট্টি জানাচ্ছেন ১৫জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মারের ধরণ দেখে বোঝা যাচ্ছে লাঠি বা রডের মতো ভারী কিছু দিয়ে মারা হয়েছে। দুই ছাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঐশি সহ গুরুতর আহত আর এক ছাত্রীকে ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। এক অধ্যাপিকা সুচরিতা সেন বাঁচাতে গিয়ে আহত হন। তিনিও হাসপাতালে। ঠাণ্ডার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়ারা বিক্ষোভে বসে। এবং কী আশ্চর্য বিগত সাতদিন ধরে হুমকি দেওয়ার পরেও এবিভিপি এই ন্যাক্কারজনক কাণ্ড ঘটিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছে। পুলিশ এসে আইন বাঁচাচ্ছে, অভিযোগ পড়ুয়াদের।