শাহকে চাপে রাখতে ‘ভয়ঙ্কর’ চাল উদ্ধব ঠাকরের, ফিরছে লোয়া মামলা

বিজেপি’র খেলা বিজেপিকেই ফিরিয়ে দিচ্ছেন উদ্ধব ঠাকরে৷ আর এর জেরেই ভয়ঙ্কর চাপে পড়তে চলেছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷

বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে চাপে রাখতে বিজেপির পথেই হাঁটতে চলেছে বিরোধীরা৷

উদ্ধব ঠাকরের মহারাষ্ট্র সরকার​​ বিচারক ব্রিজগোপাল লোয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা আবার চালু করতে চলেছে৷ আইনি পরিভাষায় একে বলে মামলা ‘Re-Open’ করা৷

মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরে সরকার এমন দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছে, যার প্রতিক্রিয়া সুদূরপ্রসারী হবেই৷ এই দুই সিদ্ধান্তের

◾প্রথমটি হলো, বিচারক লোয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত মামলা আবার চালু করা এবং

◾দ্বিতীয়টি, ভিমা কোরেগাঁও মামলার পুনর্বিচার৷

বিচারক লোয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত মামলা আবার চালু করার অর্থ, বিজেপির শীর্ষস্তর, বিশেষত অমিত শাহ ভয়ঙ্কর চাপে পড়বেন৷ সোহরাবুদ্দিন হত্যা মামলার বিচার করছিলেন বিচারক লোয়া৷ এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন দেশের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷
ওদিকে, মামলার রায় ঘোষনার ঠিক আগে বিচারক লোয়া একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নাগপুরে গিয়েছিলেন৷ ছিলেন একটি হোটেলে৷ সেই হোটেলেই হঠাৎ তাঁর মৃত্যু হয়৷ তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, মৃত্যু স্বাভাবিক নয়৷ লোয়ার মৃত্যুর পরে সোহরাবুদ্দিন- মামলার দায়িত্ব অন্য বিচারকের হাতে আসে। আর মাসখানেকের মাথায় অমিত বেকসুর খালাস পেয়ে যান।
এই ঘটনা নিয়ে সে সময় প্রবল হইচই হলেও সুপ্রিম কোর্ট এই সংক্রান্ত সব ক’টি জনস্বার্থ মামলাই খারিজ করে দিয়েছিল৷ মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ”যদি মামলা আবার চালু করার দাবি আসে, আমরা তা করতে প্রস্তুত৷” এই দাবি ওঠা যে স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, তা নিশ্চিতভাবেই জানে বিজেপি, জানেন অমিত শাহ-ও৷
বিচারক লোয়ার মৃত্যু নিয়ে ফের তদন্ত শুরু হলে তার প্রতিক্রিয়া কী কী হতে পারে?
প্রথমত এই সিদ্ধান্ত
নিঃসন্দেহে বিরোধীদের কৌশল৷ মোদি সরকারকে চাপে রাখার বড় হাতিয়ার৷
এটা ঠিকই, এ মামলা Re-Open হলে শাহ তথা বিজেপি চাপে পড়বেই৷
বিরোধীরা এই সুযোগ ছাড়বে না৷ সুতরাং এর প্রতিক্রিয়াও চরম হতেই পারে৷

ভিমা কোরেগাঁও নিয়েও যাবতীয় ফাইল চেয়ে পাঠিয়েছে উদ্ধব সরকার৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশমুখ জানিয়েছেন, ”বিজেপি সরকারের আমলে কেউ প্রশাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেই তাদের ‘আরবান নকশাল’ বা অতি বাম’ বলে আখ্যা দিয়ে দেওয়া হতো৷ এটা পুরোপুরি ভুল ছিলো” কোরেগাঁও যুদ্ধের শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত দলিতদের এক উৎসবে আচমকা আক্রমণ করে কিছু হামলাকারী৷ এর ফলে একজন মারা যান, প্রচুর আহত হন৷ কিন্তু এ ঘটনার পুলিশি তদন্ত ও আরবান নকশালদের অভিযুক্ত করা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়েছিল৷ বিরোধীরাও সরব ছিল৷ মহারাষ্ট্রের সরকারে এসে তাই সেই ভিমা কোরেগাঁও মামলাকেও ফিরে দেখতে চাইছেন উদ্ধব ঠাকরে৷

মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোটের বিরুদ্ধে বিজেপি এখনও কার্যত ব্যর্থ৷ কিছুতেই পাল্লা দিতে পারছেনা৷
ওদিকে, নাগপুর জেলা পরিষদের নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে৷ এই হার তাৎপর্যপূর্ণ৷ কারণ, মহারাষ্ট্র রাজ্যে নাগপুর- ই হলো বিজেপির দুই সব থেকে শক্তিশালী ঘাঁটি৷ নীতিন গড়করি ও দেবেন্দ্র ফড়নবিসের খাস তালুক৷
তাঁদের ঢালাও প্রচার সত্ত্বেও বিজেপি হেরেছে৷ তা ছাড়া নাগপুরেই RSS-এর সদর দফতর। ফলে সেখানে বিজেপির হার তাৎপর্যপূর্ণ।

Previous articleব্রেকফাস্ট স্পোর্টস
Next articleভিলেন সেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা